ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার স্থায়ী উন্নতি হয়নি, বাসায় ফিরতে সময় লাগবে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ৬:৫৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২২

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার স্থায়ী উন্নতি হয়নি, বাসায় ফিরতে সময় লাগবে

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার স্থায়ী উন্নতি হয়নি। ফলে এখনওই তিনি বাসায় ফিরতে পারছেন না। আপাতত হাসপাতালেই তাকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

চিকিৎসকরা জানান, দুইদিন ভালো থাকলে, তিনদিন খারাপ থাকেন বেগম খালেদা জিয়া। স্বাস্থ্যের প্যারামিটারগুলো উঠানামা করছে। মাঝে মধ্যে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও নানা কারণে তা ধরে রাখতে পারছেন না তিনি। বর্তমানে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন ৭৬ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার বিকেলে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, করোনাভাইরাস ফের বেড়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে বড় শঙ্কা কাজ করছে। আজ শনিবার তারা বৈঠক করেছেন। যেখানে খালেদা জিয়ার কেবিনে চলাচল একেবারে সীমিত করা হয়েছে। কেবিনে প্রবেশের আগে নার্স ও স্টাফদেরও তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। বাইরে থেকে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। বোর্ড এখনই হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়াকে ছাড়পত্র দিচ্ছে না। নতুন আরও কতগুলো টেস্ট দেওয়া হয়েছে। মোটামুটি ঝুঁকিমুক্ত হলেই বাসায় যাওয়ার অনুমতি নেওয়া হবে। আপাতত সপ্তাহখানেক নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

বোর্ডের আরেকজন চিকিৎসক বলেন, প্রথমবার ম্যাডাম করোনা পজিটিভ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে হাসপাতাল থেকেই আবার তার করোনা সংক্রমিত হয়। এ জন্যই এবার ভয় কাজ করছে। হাসপাতালে প্রচুর কোভিড রোগী আসা যাওয়া করছে। কেবিনেও নার্স স্টাফ আয়া ক্লিনারসহ অনেকেই যাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে সংক্রমিত হতে পারেন। বোর্ড এজন্যই খালেদা জিয়াকে বাসায় রেখে চিকিৎসার চিন্তা করেছিল। কিন্তু তার শারিরক অবস্থা স্বস্তিদায়ক নয়। আজ ভালো তো কাল খারাপ। সবচেয়ে ভয়ের কারণ রক্তক্ষরণ। যা শনিবারও অল্প পরিমাণে হয়েছে। এটি বন্ধ হচ্ছে না কোনভাবে। রক্তের হিমোগ্লোবিন হুহু করে কমে যায়। আবার সময় নিয়ে একটু বাড়ে।

তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের ডায়েবেটিস কখনও নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ইনসুলিন দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে না। এই জন্য কেবিনে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিসিইউ’র সাপোর্টও রাখা হয়েছে। ইলেক্ট্ররাইল ইমব্যালেন্স অর্থাৎ খনিজে অসমতা দেখা দিচ্ছে মাঝেমধ্যে। এজন্য শরীর প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে যায়। রুচি কমে যায়। তিনি বলেন, ম্যাডাম হাসপাতালে থাকতে চান না। উনি বাসায় যেতে বলেন। আর এই বয়সের একজন মানুষকে টানা হাসপাতলের বিছানায় থাকা ভীষণ যন্ত্রণার। চিকিৎসা সম্পূর্ণ না করে বাসায় আনলে তো আবারও হাসপাতালে নিতে হয়। বারেবারে নেওয়া-আনা খুব উনার জন্য ক্ষতি। কারণ করোনা বাড়ছে চারদিকে।

বোর্ডের আরেকজন চিকিৎসক বলেন, ম্যাডামকে দেশের বাইরে নিয়ে যত দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে, ততই তার জন্য মঙ্গল। দেশে যে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব তা দেওয়া হয়েছে। তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে উন্নত সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এটি আমরা পরিবারকে বারবার এড্রেস করছি।

এদিকে খালেদা জিয়ার পরিবার ইতিমধ্যে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিতসার জন্য প্রেরণে সুপারিশ করেছে। তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পঞ্চম দফা আবেদনও করেন। কিন্তু সরকার সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। গত বছরের ১৩ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ওইদিন তাঁকে হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে বেশ কয়েকবার তার শরীরে রক্তক্ষরণ হয়। দীর্ঘদিন সিসিইউতে থাকার পর গত ৮ জানুয়ারি তাঁকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।

 
Electronic Paper