ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গণঅভ্যুত্থানে বিএনপির সরকার পতনের শপথ

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ০১, ২০২১

গণঅভ্যুত্থানে বিএনপির সরকার পতনের শপথ

ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরিয়ে পুনরায় গণতন্ত্র উদ্ধারের শপথ নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে বিভাগীয় এ সমাবেশ হয়। দুপুর ১টা ২০ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে এ সমাবেশ শুরু হয়। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাক দিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে এ সমাবেশের আয়োজন করে দলটি।

বেলা সাড়ে ১১টা থেকে খালেদা জিয়ার ছবি সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন ও জাতীয় পতাকা হাতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে উপস্থিত হন। এ সময় তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন।

এদিকে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ আশেপাশের এলাকায়। সরেজমিন দেখা গেছে, কর্মসূচি ঘিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে কঠোর অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনী সদস্যরা। কার্যালয়ের আশপাশে সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জনসমাগম ঘটিয়ে যাতে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। এছাড়া নয়াপল্টনের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ ও ডিবি পুলিশ মোতায়েন দেখা গেছে।

সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। আজকে পত্রিকায় দেখবেন, এক হাজারটা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছে। দেখেন শুরু হয়েছে পতন। এই এক হাজার মধ্যে অর্ধেকের বেশি হেরে গেছে আওয়ামী লীগ। এই পতন শুরু হয়েছে।

নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। মানুষের অধিকার, ভোটের অধিকার আদায়ে, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার এবং বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য আমাদের এই সরকারকে অবশ্যই সরাতে হবে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

বাস ভাড়া কমানোর জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, কী রকম বৈষম্য করে, তারা ঢাকায় হাফ পাস দেবে। বাইরে দেবে না। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, ভতুর্কি যদি দিতে হয়, সেই ভতুর্কি সরকারকে দিতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমাবেশে লাখো জনতার ঢল নেমেছে, এই ঢলেই প্রমাণিত হয়েছে, খালেদা জিয়াকে যদি অবিলম্বে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হয় তাহলে দেশের মানুষ কখনোই চুপ করে বসে থাকবে না। জনতার উত্তাল তরঙ্গের মধ্য দিয়ে এই বেআইনি, ভোট ডাকাতি ও অনৈতিকভাবে ক্ষমতা দখল করে রাখার সরকারকে তারা উৎখাত করবে। বেগম জিয়াকে তারা মুক্ত করবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, শেখ হাসিনার শুভ বুদ্ধি উদয় হোক। অবিলম্বে আমাদের নেত্রীকে মুক্তি দিন। অবিলম্বে তাকে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। আর না হয় আপনাকে গদি থেকে নামানো হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে শেখ হাসিনাকে সরাতে হবে। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা আর ১৯৯০ এ রক্তের বিনিময়ে আবার গণতন্ত্র পেয়েছিলাম। এ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আবার একটি গণতন্ত্র আদায় করতে হবে। আসুন আমরা এক দফা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকার পতনের শপথ নেই। আগামী কর্মসূচিকে সফল করি।’

সমাবেশে সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, পুলিশকে ব্যারাকে রেখে রাজপথে আসুন। বিএনপি বনাম আওয়ামী লীগ খেলা হবে। দেখব কে জেতে আর কে হারে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। মুক্তি না দিলে আমরা রাজপথে নেমেছি, রাজপথে থাকব এবং সংগ্রাম করব।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাজাহান ওমর, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তৈমুর আলম খন্দকার, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন প্রমুখ।

 
Electronic Paper