ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অনিয়মের অভিযোগ কমিটি গঠনে

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১২:১১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১

অনিয়মের অভিযোগ কমিটি গঠনে

অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা বিভাগীয় কমিটির নেতারা। এমন অভিযোগ করেছেন খোদ দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা ও উপজেলার নেতারা। এমনকি টিম সদস্যদের কেউ কেউ এই অনৈতিক সুবিধার প্রতিবাদ করে বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে তারা অভিযুক্ত নেতাদের রোষানলে পড়ছেন।

জানা গেছে, ঢাকা বিভাগীয় টিমের প্রধান কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহসভাপতি আরিফ হাওলাদার, সহ-সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী জনি, সহ-সংগঠনিক মুহাম্মদ শরিফ ফেরদৌস বিভিন্ন জেলার উপজেলা কমিটিগুলো গঠন করছেন। কিন্তু প্রতিটি কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, মেধা ও দলের প্রতি আনুগত্য নেতাদের বাদ দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে দলীয় বড় ভাইদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এমনটি একটি উপজেলা মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর। সেখানে জেলা কমিটির সুপারিশকৃত নেতাদের বাদ দিয়ে টিমের প্রধান অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ওই এলাকার স্বেচ্ছাসেবক দলের এক কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্টের পক্ষে কমিটি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রেখেছেন। যাদের দিয়ে তিনি একটি প্রস্তাব করেছেন তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক অপরাধের বেশ কয়েকটি অভিযোগ থানায় রয়েছে।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় টিম বিশেষ করে টিম প্রধান তার জেলা ও উপজেলার কমিটিতে ‘মাইম্যান’ রাখার জন্য লিঁয়াজো করে ওই উপজেলার বড় ভাইদের মন মতো কমিটি দিতে চাচ্ছেন। এতে ওই এলাকায় নেতাদের মধ্যে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে। টিম প্রধান আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে সুবিধা নিয়ে কমিটি দিচ্ছেন এমনটি জানতে পেরে স্থানীয় বিএনপি, উপজেলা বিএনপি এবং স্বেচ্ছাসেবক জেলা ও উপজেলা কেন্দ্রীয় দপ্তরে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নির্দেশ দেন। কিন্তু টিম প্রধান সেটি না করে উল্টো স্বাক্ষর জাল করে, ভুল তথ্যের মাধ্যমে নিজের মতো করে প্রতিবেদন জমা দেন।

সূত্রগুলো বলছে, উপজেলায় সঠিক নেতৃত্ব আনতে ও বিতর্কিতদের কমিটিতে না রাখার জন্য স্থানীয় নেতাদের পক্ষে কুকুটিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় দপ্তরে অভিযোগ করেন। যাদের দিয়ে জেলা কমিটি প্রস্তাব করেছেন তাদের বা এর চেয়ে যোগ্যদের দেওয়ার প্রস্তাব করেন। কিন্তু টিম লিডার কেন্দ্রীয় এক ভাইস প্রেসিডেন্টের পরামর্শে তার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদকের পক্ষে কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। অথচ তাদের চেয়ে বহুলাংশে যোগ্য নেতা।

এই কমিটি রাখার জন্য টিম প্রধান স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বলেন, ‘আমি দায়িত্বে, আপনি নাক গলাবেন না’।

জানতে চাইলে মুন্সীগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মোল্লা বলেন, শ্রীনগর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক দলের সম্মেলন করার জন্য প্রশাসন আমাদের বিকেল ৩টায় এক ঘণ্টার জন্য অনুমোদন দেন। অথচ টিম প্রধান আবুল কালাম এসেছেন বিকেল ৫টায়। এর মধ্যে আমরা তিনটি স্থান চেঞ্জ করেছি। অথচ উনি মাওয়ার হিলশায় দুপুর ১টায় আসলেও খাওয়া দাওয়া এবং সলাপরামর্শ সেরে বিকেলে সম্মেলনে অংশ নেন।

তিনি বলেন, আবুল কালাম আজাদ একটা পক্ষকে সামনে আনার মিশন নিয়ে কাজ করছেন। উনি কেন্দ্রীয় এক সাবেক সাধারণ সম্পাদকের লোক যারা বাড়ির কর্মচারী, মামলাবাজ, নেশাখোর, বহিষ্কৃত নেতাদের শ্রীনগর কমিটিতে আনার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। কালাম ভাই তাদের মিশন বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লাগছে। তিনি জেলার কোনো কথাই শুনতে চায় না। উনি ওই সাবেক সাধারণ সম্পাদকের কথা বলেন যে, ওনার নির্বাচনী এলাকা। অথচ ওই সাবেক সাধারণ সম্পাদক এই এলাকায় কোনো দিন নমিনেশনই চাননি।

তিনি আরো বলেন, সামিউর রহমান দিপুর একটি অভিযোগ গিয়েছেন কেন্দ্রে। কেন্দ্রের নির্দেশে তার একটি প্রতিবেদন কালাম দিয়েছেন যা পক্ষপাতমূলক। কালাম দিপুকে কোনো ফোনই দেননি। না জানিয়েই কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি উজ্জলের সঙ্গে কথা বলে তাদের পক্ষে একটি প্রতিবেদন দিয়ে দিয়েছে।

জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, আপনি অভিযোগের রিপোর্ট পেলেন কোথায়। ভুল করলে ভুল হয়েছে। আমি এ বিষয়ে কথা বলব না।

সামিউর রহমান দিপু বলেন, তারা আমার সঙ্গে কথা না বলেই প্রতিবেদন দিয়েছে। আমি কেন্দ্রীয় দপ্তরে অভিযোগ করেছি। তারা আমার স্বাক্ষর নকল করেছে।

ঢাকা বিভাগীয় সহসভাপতি আরিফ হাওলাদার বলেন, আমরা যারা দায়িত্ব পালন করি, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি সঠিকভাবে করতে। এরপরও যদি টিমের কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসে সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত। আমাদের হাইকমান্ড রয়েছেন, তারা অবশ্যই খতিয়ে দেখবেন কারো বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে কোনো পক্ষকে সহায়তা করলে। তবে অভিযোগের তথ্য-উপাত্ত দৈনিক খোলা কাগজের কাছে রয়েছে।

 
Electronic Paper