ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার: পরিবেশ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৫:১৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২১

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার: পরিবেশ মন্ত্রী

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে শব্দ সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। বিভিন্নমুখী সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শব্দদূষণের বিরুদ্ধে জনমত তৈরী করা হবে। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় শব্দদূষণ সহনীয় পর্যায় নেমে আসবে। তিনি বলেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে। ২১ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের উদবোধনী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মাহমুদ হাসান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত প্রমুখ। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ, কে, এম রফিক আহাম্মদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও প্রকল্পের পরিচালক মোঃ হুমায়ুন কবির।

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর বিআরটিএ প্রায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন প্রদান করছে। ক্রমবর্ধমান যানবাহনে অহেতুক হর্ণ ,যত্রতত্র সাউন্ড বক্স, মাইকের মাধ্যমে উচ্চ শব্দ সৃষ্টি করে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত করা হচ্ছে। আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে অন্যান্য দূষণের পাশাপাশি শব্দদূষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার এখনই সময়। ক্ষতিকর দিকগুলি বিবেচনা করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন/বিধি বাস্তবায়ন ও অতিরিক্ত শব্দ করা থেকে বিরত থাকার সংস্কৃতি সৃষ্টির জন্য পরিবেশ মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ আবাস গড়ে তোলার মাধ্যমে ‘শব্দদূষণমুক্ত পরিবেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে শব্দদূষণের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। তিনি এসময় প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকলকে যথানিয়মে প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশনা প্রদান করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, জনগণকে ব্যাপকভাবে বধির হওয়া থেকে রক্ষা করতে শব্দদূষণ বন্ধ করতেই হবে। এলক্ষ্যে তিনি পঞ্চম, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রমে শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান।

পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও প্রকল্পের পরিচালক মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় পরিবহন শ্রমিক/চালক, শিক্ষার্থী, সরকারি কর্মচারী, কারখানার নির্মাণ শ্রমিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, ইমাম, পেশাজীবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মোট ৯৫২০০ জন ব্যক্তিকে শব্দ সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এছাড়াও টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতারে ধারাবাহিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া, মোবাইল ফোন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টিভিসি, ক্ষুদে বার্তা ও বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হবে। সচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১২৮ টি বিলবোর্ড ও ৬০টি সাইনবোর্ড স্থাপন, ৭ লক্ষ লিফলেট, ৭ লক্ষ স্টিকার, ১ হাজার ফোল্ডার এবং ১ হাজার প্রশিক্ষণ ম্যানূয়াল মূদ্রণ ও বিতরণ করা হবে। সারাদেশে মোট ২০০০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত/যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে। শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ সংশোধনক্রমে সময়োপযোগী বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক জানান, ৬৪ টি জেলায় শব্দের মাত্রা পরিমাপ বিষয়ক জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা এবং তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। বিভাগীয় শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে শব্দদূষণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির ওপর সমীক্ষা এবং বিধিমালা সংক্রান্ত ও দিবস ভিত্তিক মোট ৯টি সভা আয়োজন করা হবে। একটি এলাকায় পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের আওতায় শব্দমাত্রার সার্বক্ষণিক অনলাইন পরিবীক্ষণ এবং রোড সাইড ডিসপ্লে স্থাপন করা হবে। কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠনকে সম্পৃক্ত করে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের জন্য নির্ধারিত এলাকায় ৯টি ক্যাম্পেইন আয়োজন; ৫ শত ১২ টি এয়ারমাফ এবং ৪ হাজার এয়ারপ্লাগ সংগ্রহ ও বিতরণ এবং ৩ বছর আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস উদযাপন করা হবে।

 
Electronic Paper