ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

স্কুলের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে রাজধানীতে বিএনপির বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৭:০৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৯, ২০২০

রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালের মোগলটুলির একটি স্কুলের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভের একপর্যায়ে তাঁরা স্কুলটির নতুন নামে কালি লেপটে দেন।

রোববার দুপুরের দিকে বংশালের মোগলটুলি এলাকায় এই প্রতিবাদী বিক্ষোভ করেন নেতা-কর্মীরা।

বিক্ষোভে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব-উন-নবী খানসহ কয়েক শত নেতা-কর্মী অংশ নেন।

এলাকাবাসী ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামে মোগলটুলিতে ২০০৬ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন নাম রাখা হয় ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উচ্চবিদ্যালয়’। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) পরিচালিত স্কুলটির নাম রেখেছিলেন তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। কিছুদিন আগে স্কুলটির নাম পরিবর্তন করা হয়। নতুন নাম রাখা হয় ‘মোগলটুলি উচ্চবিদ্যালয়’।

এর প্রতিবাদে দুপুরে বংশাল চৌরাস্তায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। ১২টার দিকে সেখানে হাজির হন ইশরাক হোসেন ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। পরে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বংশাল মোড় থেকে মালিটোলা হয়ে মিছিলটি স্কুলটির সামনে যায়। বিএনপির নেতা-কর্মীরা স্কুলটির প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা একপর্যায়ে স্কুলের প্রধান ফটকে থাকা নতুন নামে কালি লেপটে দেন। এ সময় নেতা-কর্মীরা স্কুলের নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা যখন স্কুলের নতুন নামের ওপর কালি মাখিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন পাশেই পুলিশের কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

নবাবপুর রোডের জাবিন টাওয়ারের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইশরাক হোসেন বলেন, ২০০৬ সালের ২৫ মার্চ আমার বাবা ও তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে স্কুলটি নির্মাণ করেন।

আজকে ন্যক্কারজনকভাবে স্কুলটির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে, যার কোনো প্রয়োজন ছিল না। না এটি ঢাকাবাসীর দাবি ছিল, না অন্য কারও দাবি ছিল।

সরকারকে প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করার আহ্বান জানিয়ে ইশরাক বলেন, নাম পাল্টিয়ে জনগণের মন থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলা যাবে না।

হাবিব-উন-নবী খান আরও বলেন, আজকে থেকে প্রতিবাদ শুরু হলো। এখন থেকে চলবে। যেখানেই অন্যায়ভাবে নামফলক পরিবর্তন করা হবে, সেখানেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

এদিকে নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “মহান স্বাধীনতার ঘোষনাসহ মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ন, গৌরবোজ্জল ও সাহসী ভূমিকা এবং পরবর্তীতে আধুনিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় যুগান্তকারী নেতৃত্ব ও অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৬ইং সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন নির্বাচিত মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা এবং একই বছর ২৫ মার্চ উদ্বোধন করেছিলেন। কিন্তু বর্তমান সরকারের ইতিহাস বিকৃতি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির বশতবর্তী হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন শহীদ জিয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের ন্যাক্কারজণক সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবায়ন করছে। নগরবাসীর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না হওয়ায় ঢাকা সিটির মেয়র ও কাউন্সিলরা নগরবাসীর উন্নয়নে ও তাদের উন্নত সেবা প্রদান না করে নাম পরিবর্তনের ন্যাক্কারজনক দলীয় করণে ব্যাস্ত রয়েছে। নগরবাসীর নির্বাচিত প্রতিনিধি হলে তারা এ ধরণের হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারতেন না। সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলর নির্বাচনে নগরবাসীর স্বাধীন ভোটাধিকার নস্যাত করে জালিয়াতি, কারচুপি, সন্ত্রাস, অনিয়মের করে আজ্ঞাবহ ও পুতুল নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষনা করে আওয়ামী সরকার দলীয় প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে।”

তিনি বলেন, জিয়ার নাম যারাই মুছে ফেলার চেষ্টা করবে, তারাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।

 
Electronic Paper