ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিভিন্ন ভাইরাসে সরকার আক্রান্ত: নজরুল ইসলাম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৫:৪৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০

সরকার ‘বিভিন্ন ভাইরাসে’ আক্রান্ত উল্লেখ করে ‘লজ্জা’ ঢাকতে তাদেরকে তিনটি মাস্ক মুখে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এই পরামর্শ দেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকার শুধু কোবিডে না, আরো কয়েকটি ভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে গেছেন। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে যেভাবে দুর্নীতি-অনাচার ছড়িয়ে পড়েছে সেই ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য সরকারের লোকজন যারা রাজনৈতিক দল করেন তাদের উচিত দুর্নীতি বিরোধী আরেকটা ভাইরাস প্রতিরোধকারী মাস্ক পরা।

তিনি বলেন, অতি সম্প্র্রতি নারী নির্যাতন যেভাবে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে সেই নারী নির্যাতনের যে ভাইরাস সেটার থেকে বাঁচার জন্যও এই সরকারের লোকজনের আরেকটা মাস্কটা পরা উচিত। এই তিনটা মাস্ক পরলে তারা এই ভাইরাস থেকে কিছু অনুধাবিত হবেন আর লজ্জা থেকে বাঁচার জন্য মুখটাও ঢেকে রাখতে পারবেন।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একজন যোগ্য শিক্ষককে একটি নিবন্ধন লেখার অপরাধে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আর একজন শিক্ষকের কথা আপনারা শুনেছেন, যিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা পোস্ট দিয়েছিলেন। যার জন্য শুধু চাকরি যায়নি, তিনি এখন দেশে থাকতে পারেননি। একইভাবে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অসংখ্য মানুষ তার গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশে কারণে এই সরকারের অনুগত প্রশাসনের ধারায় চাকরিচ্যুত কিংবা অন্যভাবে বিপদাপন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যারা শ্রদ্ধেয়ও মানুষ বলে পরিচিত, তারা কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। কিন্তু তারা পারেন, যারা নামে শিক্ষক, কিন্তু আসলে প্রশাসনে অনুগত ব্যক্তি।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই ভিসি তো তিনি, যিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে সরকারের ভাষায় সন্ত্রাসী বলেছিলেন। তাদের কাছ থেকে সুবিচার আশা করার কোনো কারণ নেই। আইন ভঙ্গ করে অন্যায় ভাবে যাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদেরকে পুনর্বহাল তো অবশ্যই আমরা দাবি করব।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের গাড়ির চালকের প্রসঙ্গে টেনে নজরুল ইসলাম খান বলেন,এদেশের দুর্নীতি-অনাচার আজ যে অবস্থায় চলে গেছে, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বলে যে, আমরা ডিজি হতে চাই না, ডিজির ড্রাইভার হতে চাই।এই বিশ্বের সবচেয়ে তিনজন ধনী ড্রাইভারের মধ্যে বাংলাদেশে একজন আছে।

জিয়াউর রহমানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে ক্ষমতাসীনরা ‘ইনডেমনিটি’ যে নাটক তৈরি করেছে তার সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা এই মিথ্যা নাটক তৈরি করেছেন তাদেরকে শহীদ জিয়ার একজন কর্মী হিসেবে বলতে চাই, আপনারা তো কিছুই না, আপনাদের থেকে কত বড় বড় নেতারা, আপনাদের কত বড় বড় ওস্তাদরা বছরের পর বছরের শহীদ জিয়া সম্পর্কে, বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে, তারেক রহমান সম্পর্কে কত অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। কি লাভ হয়ে তাতে
তিনি বলেন,জনগণ কী শহীদ জিয়াকে ভুলে গে্ছে, জনগনের যে শ্রদ্ধা তার প্রতি সেটাকে কী কমাতে পেরে্ছেন আপনারা, না বেগম জিয়ার জনপ্রিয়তা কমে্ছে।যদি কমতো তাহলে আপনারা উঠতে বসতে, চলতে ফিরতে, শয়নে স্বপনে তাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতেন না।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, আপনারা তো ভয় পান তাদেরকে। সেজন্য এক ধরনের অসুস্থতায় ভোগছেন। এদেরকে জিয়া ফোবিয়া বলতে পারেন, খালেদা জিয়া ফোবিয়া বলতে পারেন কিংবা তারেক রহমান ফোবিয়া বলতে পারেন।এরও চিকিতসা দরকার মনে হয় আপনাদের। যে খারাপ দৃষ্টান্ত আপনারা স্থাপন করলেন, এই দৃষ্টান্ত আল্লাহ না করুক ভবিষ্যতে যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয়, এভাবেই রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন করে আমরা রাজনীতির সম্পর্কে মানুষকে নিরুতসাহিত করে দিচ্ছি যেটা দেশের জন্য ক্ষতিকর, যেটা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।
‘আওয়ামী লীগের সেবা চাই না’

নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের সরকার প্রধান অতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গতকাল বক্তৃতা করেছেন উনি আরো জনগনের জন্য সেবা করতে চান। ১২ বছর সেবা করেছেন। পথে ঘাটে থেকে মেয়ে মানুষ তুলে নিয়ে যায় আপনার সোনার ছেলেরা। গতকালও চট্টগ্রামে দুইটা ধর্ষন হয়েছে। নারায়নগঞ্জে হয়েছে।

তিনি বলেন, আপনি আমাদেরকে মাফ করে দেন। আর আওয়ামী লীগের সেবা চাই না। আর আপনার সেবা চাই না। আপনি জনগনের রায় নেন, ভোট দেন, গদি থেকে নেমে চলে যান। জনগন নিজেদের মুক্তি পথ খুঁজে নেবে। আসুন এই আওয়াজ তুলে এই সরকার আর না। যত তাড়াতাড়ি বিদায় নেবে তার স্বপক্ষে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই, আন্দোলন গড়ে তুলি।

তিনি বলেন, এদের(ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন) হাতে দেশের মা-বোন নিরাপদ নয়। ফেইসবুকে মধ্যে খালি পোস্টারে লেখায় সয়লাব হয়ে গেছে। স্ত্রীকে নিয়ে, প্রেমিকাকে নিয়ে কোথাও যদি বেড়াতে যান, আগে খোঁজ নেবেন ওইখানে ছাত্র লীগ আছে কিনা।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সেখানে যান মানুষের জীবন নিরাপদ নাই। এই করোনায় কত মানুষ বেকার হয়ে গেছে মানুষের কাজ চলে গেছে। তাদের পেটে ক্ষুধার আগুন। আর আপনার সবাই এই ফ্লাইওভারের পিলার দেখাচ্ছেন, পদ্মসেতুর স্পেন দেখাচ্ছেন।ওটা দিয়ে খিদে যায়? উন্নয়ন মানে জীবন সুখকর হবে, জীবন সুন্দর হবে, জীবন নিরাপদ হবে। আমি আমার ইচ্ছামতো মনের মত প্রকাশ করতে পারবো, লিখতে পারবো, বলতে পারবো, কথা বলতে পারবো-বাংলাদেশের এর কোনটাই নাই।

মান্না বলেন, কারণ যারা ক্ষমতায় আছে তারা জনগনের কথায় আসেনি, ২৯ ডিসেম্বর ৩০ তারিখের ভোট ডাকাতি করে নিয়ে চলে গেছে। ডাকাতরা এখন ক্ষমতায়।

তিনি বলেন,এই ডাকাতদের সরাতে হবে। সেজন্য আজ সমস্ত মানুষের কাছে বলি, কোনো মানুষ মানুষের স্ত্রী, মানুষের বোন মানুষের মা যদি তার বয়স কম হয় তিনি নিরাপদ নন। কোনো পঙ্গু মানুষ কাঁদলেও যে সরকার আছে তারা তাকায় না, তাদের জন্য রাষ্ট্র-সরকার এগিয়ে আসে না।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের আহবায়ক সাংবাদিক শওকত মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনার দল আজকে সারাদেশে ধর্ষক লীগে পরিণত হয়েছে। আমরা যেমন বন্যা প্রাণীদের জন্য অভারণ্য তৈরি করি, অভারণ্য মধ্যে বন্য প্রাণীরা ঘুরে বেড়াবে।

তিনি বলেন, তেমনি ধর্ষক লীগের জন্য প্রত্যেক শহরে নিষিদ্ধ এলাকা করে দেয়া হোক। যাতে সেই নিষিদ্ধ এলাকাতেই তারা তাদের দুষ্কর্ম করে। জনগনের লোকায়ে যেন আমরা এই বন্য প্রাণীদের দেখতে না পাই-এই অনুরোধ আমি রাখছি।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে শহীদ জিয়াউর রহমানের অবদানকে খাটো করা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মোর্দেশ হাসান খান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কে এম ওহায়েদুজ্জামান এ্যাপেলোকে চাকরি থেকে অব্যাহতি এবং এমসি কলেজসহ বিভিন্ন স্থানে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন হয়।

সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সঞ্চালনায় এই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য্ অধ্যাপ আফম ইউসুফ হায়দার, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্য জোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের রফিকুল ইসলাম, এগ্ররিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমানর শামীম, ছাত্র দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ছাত্রদলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদব ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র দলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ বক্তব্য দেন।

 
Electronic Paper