ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঈদের খুশিতে ভোটের রং

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:৫৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০১৮

ত্যাগের মহিমায় ভাস্মর পবিত্র ঈদুল আজহা আগামীকাল বুধবার। মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় এ উৎসব পালিত হবে সর্বোচ্চ ধমীয় মর্যাদায়। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হিজরি জিলহজ মাসের দশম দিনে হজব্রত পালন এবং প্রিয় বস্তু কোরবানি প্রদানের মধ্য দিয়ে এ উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে সহস্র বছর ধরে।

ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী, এ ঈদে কোরবানি করা ওয়াজিব। পবিত্র কোরআনে কোরবানির পশুকে মানুষের জন্য কল্যাণের নির্দেশনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মানুষের ভেতরকার সব পশুত্বকে বর্জন করে মানবিক সমাজ ও ধর্মনিষ্ঠ চরিত্র গঠনের অন্তর্নিহিত শিক্ষা রয়েছে কোরবানির উৎসবে।   
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও যথাযথ ধর্মীয় আচারাদীর মধ্য দিয়ে পালন করবেন ঈদুল আজহার উৎসব। এ উৎসব পালনের পূর্ণ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে ইতোমধ্যে। নির্বাচনী বছরে এ ঈদ উৎসব অনুষ্ঠিত হওয়ায় এর আনন্দের ব্যাপ্তি অন্য বছরের তুলনায় একটু বেশিই। বিশেষ করে একাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সর্বত্র যখন নির্বাচনী প্রস্তুতির ডামাডোল চলছে তখন ঈদের মতো এমন একটি উৎসব নির্বাচনী আমেজে বাড়তি রং যোগ করছে। ঈদ উৎসবের সম্মিলনে এবার প্রত্যেকের কাছেই ভোটের বার্তা পৌঁছাতে প্রস্তুতি নিয়েছে দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
এরই মধ্যে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে ছুটে গেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এর পাশাপাশি স্ব স্ব এলাকায় দলের অন্য জনপ্রতিনিধিরাও মহা উৎসাহে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। ইতোমধ্যে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য, সম্ভাব্য প্রার্থী, বিভিন্ন স্তরের নেতাদের ছাপানো ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারে সয়লাব হয়ে গেছে প্রত্যন্ত এলাকা। জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতারা ভোটের আগে নিজেদের কর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ঈদ উৎসবকেই মোক্ষম সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন। স্থানীয় নেতাকর্মী, ভোটাররাও এ সুযোগে কাছে পাওয়া নেতাদের কাছ থেকে নানা প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিতে পারবেন বলে মনে করছেন অনেকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাঁচ বছর অন্তর এ দেশে জাতীয় নির্বাচনকে গণতন্ত্রের মহোৎসব হিসেবে দেখেন এ দেশের ভোটাররা। অন্য সময় কদর না থাকলেও অন্তত ভোটের বছরে ভোটারদের কদর থাকে আকাশচুম্বি। ফলে ভোটাররাও প্রার্থিত থাকেন নেতা বা প্রার্থীদের কাছে। ভোটারের সঙ্গে সম্পর্কের মাপকাঠিই নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচনে জয়লাভের সম্ভাবনা। তাই নির্বাচনী বছরের শেষ ঈদ উৎসব হিসেবে ঈদুল আজহার সময়ে ভোটারদের কাছে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হারাতে চান না কোনো নেতা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড থেকে কেন্দ্রীয় নেতা ও সংসদ সদস্যদের স্ব স্ব এলাকায় ঈদ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হলেও ঈদ উৎসবে স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকার দলীয় কর্মী ও ভোটারদের সংস্পর্শে থাকছেন বিএনপি নেতারাও। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজেই চলে গেছেন নিজ নির্বাচনী এলাকা রংপুর ও কুড়িগ্রামে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্লাহ, আব্দুর রাজ্জাক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কে এম এনামুল হক শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মতো কেন্দ্রীয় নেতারা ইতোমধ্যে চলে গেছেন নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায়।
একইভাবে আজকের মধ্যেই নিজ এলাকায় চলে যেতে পারেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান প্রমুখ। আগে থেকেই এলাকায় অবস্থান করছেন দলটির স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য তরিকুল ইসলাম, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

 
Electronic Paper