ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাজনীতিকদের স্রোত গ্রামমুখী

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:২৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০১৮

নির্বাচনী বছরের শেষ ঈদ উৎসব ঈদুল আজহায় রাজনৈতিক নেতাদের বেশিরভাগই রাজধানী ঢাকায় থাকছেন না। তারা ছুটছেন গ্রামে, নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র চার মাস আগে ঈদ উৎসবের সুযোগটিকে মোক্ষমভাবে কাজে লাগাতে কোনোরকম কার্পণ্য করতে চান না তারা। এ তালিকায় শুধু বর্তমান সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, উপদেষ্টাই নন; রয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরাও। ক্ষমতাসীন দল থেকে শুরু করে ক্ষমতার শরিক, ক্ষমতার বাইরে থাকা অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও রয়েছেন গ্রামমুখী স্রোতের তালিকায়। একই নির্বাচনী এলাকায় এক দল থেকে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী থাকায় গ্রামে যাওয়ার হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে নেতাদের মধ্যে। বিষয়টি অবশ্য খুবই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বলছেন, এ সুযোগে নির্বাচনের আগে এলাকার নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গাভাব তৈরি হবে। এলাকার ভোটারদের সঙ্গে নেতাদের সম্পর্ক গাঢ় হবে। এতে কৌশলে নির্বাচনী প্রচারণার কাজও কিছুটা এগিয়ে যাবে।
জানা গেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড থেকে কেন্দ্রীয় নেতা ও সংসদ সদস্যদের স্ব স্ব এলাকায় ঈদ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে নির্দেশ মেনে ইতোমধ্যেই গ্রামমুখী হয়েছেন- দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ (ফরিদপুর) স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, (সিরাজগঞ্জের কাজীপুর), আব্দুর রাজ্জাক (টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ (কুষ্টিয়া), দীপু মনি (চাঁদপুর), সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন (নেত্রকোনা), বি এম মোজাম্মেল হক (শরীয়তপুর), আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম (মাদারীপুর), কে এম এনামুল হক শামীম (শরীয়তপুর), সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (দিনাজপুর), মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (চট্টগ্রাম), আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন (জয়পুরহাট), আইনবিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম (পিরোজপুর)।
এ ছাড়া, প্রতিবারের মতোই দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পদাক জাহাঙ্গীর কবীর নানকসহ অন্য কেন্দ্রীয় নেতা যারা রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা তারা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকাতেই অবস্থান করবেন।
নেতাদের গ্রামমুখী হওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ঈদে এলাকা অবস্থান করে কর্মী ও এলাকার মানুষকে সময় দেওয়ার জন্য দলের পক্ষ থেকে মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া আছে। যেহেতু নির্বাচনের আগে এ ধরনের উপলক্ষ আর পাওয়া যাবে না তাই ঈদের উৎসবেই মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বতর্মান সংসদ সদস্য, মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং দায়িত্বশীল নেতাদের এলাকায় অবস্থান করে আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে সব ধরনের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা এবং সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরার নির্দেশ আছে।
শুধু আওয়ামী লীগই নয়, সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও ছুটে গেছেন নিজ নির্বাচনী এলাকায়। গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া পাঁচ দিনের সফরে তিনি রংপুর ও কুড়িগ্রামের নিজ নির্বাচনী এলাকার মানুষের সঙ্গে সময় কাটাবেন। ঈদের পরদিন ফিরবেন ঢাকায়।
নির্বাচনী অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেও নির্বাচনী বছরের শেষ ঈদে নিজেদের নির্বাচনী এলাকা সফরের কাজ থেকে বিরত নেই ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি নেতারাও। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নেতারা স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকায় ছুটে গেছেন। সেখানে সাংগঠনিক কাজকর্মের পাশাপাশি নিবার্চনী প্রচারণার কাজও এগিয়ে নিচ্ছেন। তারাও এলাকার মানুষের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময়, সম্পর্ক উন্নয়নের কাজ করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবারে মতো বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ঈদ করতে ছুটবেন নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে। গত ঈদেও তিনি তার এলাকায় গিয়েছিলেন। তবে অভিযোগ করেছিলেন পুলিশ তাকে গৃহবন্দি করে রেখেছিল। দলটির স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য তরিকুল ইসলাম ঈদ করবেন তার এলাকা যশোরে। ড. মঈন খান ঈদে যাচ্ছেন নিজ এলাকা নরসিংদীর পলাশে। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও ঈদ করবেন নিজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামে। গত ঈদের মতোই বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু চুয়াডাঙ্গায়, শওকত মাহমুদ কুমিল্লায় ঈদ করবেন বলে জানা গেছে।

 
Electronic Paper