ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক

জনগণের পাশে থাকার প্রত্যয় আ.লীগের  

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:০৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৫, ২০২০

দেশ করোনামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত জনগণের পাশে থাকবেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। গত শনিবার রাতে করোনাকালীন সংকট নিয়ে বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’ এর নবম পর্বে এসব কথা জানানো হয়। বরাবরের মতোই এবারের পর্বটি সরাসরি প্রচারিত হয় আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে। একই সঙ্গে দেখা যায় টেলিভিশন এবং বেশকিছু গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজেও।

এবারের পর্বের আলোচনার বিষয় ছিল ‘করোনা সংকট মোকাবেলায় তৃণমূলের ভূমিকা’। এ সংকটে মানুষকে সচেতন করতে আওয়ামী লীগের পদক্ষেপ, করোনা চিকিৎসা নিয়ে গুজব মোকাবেলা, দলের জনপ্রতিনিধিদের জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বার্তা, ঘূর্ণিঝড় আম্পান পূর্বাভাস পাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল এবং পরবর্তীতে কর্মহীনদের সহায়তা নিয়ে আলোচনা।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে যুক্ত হন। এছাড়াও ছিলেনÑআওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, ভোলা- ৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, কক্সবাজার- ২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, খুলনা- ৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু এবং বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি।

আলোচনায় যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সমন্বয় করে রিলিফ কার্যক্রম কমিটি গঠন, রিলিফ প্রদানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। সাধারণ মানুষকে সচেতন করা থেকে শুরু করে, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কার্পণ্য করেনি। আওয়ামী লীগের দুর্দিনের নেতাকর্মীরা মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষা করে রিলিফ কার্যক্রম এখন পর্যন্ত পরিচালনা করছেন।

দেশ ও দলের দুর্দিনে আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীরা বারবার ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। সমগ্র আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের এ দুর্দিনের নেতাকর্মীরাই সবার আগে এগিয়ে এসেছেন। আমাদের দলীয় জনপ্রতিনিধিরা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে জনগণের পাশে থেকেছে, এখনো আছে। করোনামুক্ত বাংলাদেশ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ও জনপ্রতিনিধিরা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, একজন সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আমার সাংগঠনিক এলাকার উপজেলা ইউনিয়নের নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আমাদের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌছে দিয়েছে এবং এখনো দিচ্ছে। এছাড়া আমাদের সকল স্তরের জনপ্রতিনিধি নিজস্ব এলাকায় সরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগ মিলিয়ে মানুষের পাশে থেকেছে। আমরা কেন্দ্র থেকে সবকিছু সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের দফতরের হিসেব অনুযায়ী সারা দেশের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এখন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতিই হলো অসহায় মানুষের পাশে থাকা, পাশে দাঁড়ানো, মানুষকে সহায়তা করা। আওয়ামী লীগের জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

আলোচনায় যুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম ইতোমধ্যে করোনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, ঢাকার পরই চট্টগ্রামের অবস্থান। আসলে করোনা মোকাবেলা করার জন্য যে প্রস্তুতি তা কোথাও ছিল না, স্বাভাবিক কারণে বাংলাদেশসহ চট্টগ্রামের কোথাও ছিল না। করোনাভাইরাস মোকাবেলা করার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়োজন, ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব গ্রহণ করেছেন।

ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, দুর্যোগে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিত দ্বীপ জেলা ভোলাবাসীর খোঁজ নিয়েছেন, আমি ভোলা-৪ আসনের জনগণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। করোনা সংকটের এ মহামারিতে ডাক্তাররা কাজ করে যাচ্ছে, আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখছি। খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, পাইকগাছা কয়রায় করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে আমরা কাজ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা কাজ করে যাচ্ছি দুই উপজেলার নেতাদের নিয়ে। আমরা মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিনসহ মন্দিরে আমরা সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু আমাদের ১০টি ইউনিয়ন এখনো আংশিক পানিবন্দি। ২টি ইউনিয়ন পানিতে আটকে আছে। আমাদের বেড়িবাঁধগুলো অনেক পুরনো। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দিকে না তাকিয়ে নিজ উদ্যোগে কাজ করেছি। প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছেন আমাদের টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে দেবেন। উপকূলের মানুষ ত্রাণ চায় না বেড়িবাঁধ চায়।

কক্সবাজার- ২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরেই উপকূলে সিসি ব্লকের কাজ করা হয়। আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ আমরা ইতোমধ্যে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। করোনা মোকাবেলায় আমরা একে অপরের কাধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছি। আমাদের প্রত্যেক নেতাকর্মী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা তৃণমূলের মানুষদের পাশে ছিলাম সবাই মিলে। বাংলাদেশ কৃষক লীগ-এর সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি বলেন, কৃষকদের পাশে আমরা সবসময় আছি এবং থাকব। ১৯৮৪ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চলমান রেখেছে বাংলাদেশ কৃষক লীগ সহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন। সারাদেশে মুজিব বর্ষে এক কোটি গাছ লাগাবে বাংলাদেশ কৃষক লীগ।

এর আগে, বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিকের আটটি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ পর্বটি প্রচারিত হয়েছে গত ৩০ জুন। এ পর্বে আলোচকরা করোনা পরবর্তী বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নতুন ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী ছিলেন এ অনুষ্ঠানের অন্যতম আলোচক।

 
Electronic Paper