ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

টাকা বানানো একটা রোগ

মহানগর আ.লীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৪৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০১৯

টাকা বানানোকে রোগ হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আসলে টাকা বানানো একটা রোগ, এটাও একটা ব্যাধি, অসুস্থতা। একবার যে টাকা বানাতে থাকে তার শুধু টাকা বানাতেই ইচ্ছে করে। কিন্তু ওই টাকার ফলে ছেলেমেয়ে বিপথে যাবে, মাদকাসক্ত হবে, সেটা দেখারও সময় নেই- টাকার পিছনে ছুটছে তো ছুটছেই। আর নিজের পরিবার ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। কাজেই এ ধরনের একটা সামাজিক অবস্থা আমরা চাই না। আমরা চাই সৎপথে কামাই করে যে চলবে সে সম্মানের সঙ্গে চলবে, সৎপথে কামাই করে যে থাকবে, সে সমাজে সম্মান পাবে।’

শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অভিযোগের তীব্র সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি জিয়াউর রহমানের হ্যাঁ-না ভোট ও ১৯৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। সেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেনি। তাদের কথা-ই ছিল ‘১০টা হুন্ডা ২০টা গুণ্ডা নির্বাচন ঠাণ্ডা।’ তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করেছিল জেনারেল এরশাদও।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে একই কা- ঘটালেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা একটা নির্বাচন করেছিল। যে নির্বাচনে কোনো দল অংশ নেয়নি। সেটা একটা সাজানো নির্বাচন ছিল; যেখানে বোধহয় দুই শতাংশ ভোটও পড়েনি। জনগণের ভোট চুরি করে নির্বাচন করে নিজেকে তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দিলেন। ভোট চুরি করে খুনি রশিদ ও মেজর হুদাকে নির্বাচিত করে পার্লামেন্টে বসালেন। খুনি রশিদকে পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় নেতার সিটে বসিয়ে দিলেন খালেদা। কিন্তু ভোটচুরির কারণে মাত্র দেড় মাস ক্ষমতায় ছিলেন।

’৭৫-এর হত্যাকাণ্ডের বিচার রুখে দিতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। খুনিদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল। তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেন জিয়াউর রহমান। এরশাদও জিয়ার পথ অবলম্বন করে ক্ষমতা দখল করলেন। তার থেকেও একধাপ এগিয়ে খালেদা। যারা এভাবে খুনিদের মদদ দিতে পারে, তারা গণতন্ত্রের কথা কীভাবে বলে?

সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এসে দুর্নীতি-নির্যাতন করেছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘর ছাড়তে হয়েছে। নেতাকর্মীদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়েছে, হাত কেটে নিয়েছে, চোখ তুলে নিয়েছে। নেতাকর্মীদের ভিটেবাড়িতে পুকুর কেটে কলাগাছ লাগিয়েছিল। হাজার হাজার মেয়েকে রেপ করা হয়েছে। খালেদার নির্দেশেই এগুলো করা হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াতের কাজ ছিল আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করা। বাংলাদেশ যেন কখনো এগিয়ে যেতে না পারে, এটাই ছিল তাদের লক্ষ্য।

সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের অর্থ কারও ভোগ-বিলাসে ব্যয় হবে না। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি, এটা অব্যাহত থাকবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানও অব্যাহত থাকবে।

দুর্নীতিবাজদের মানুষ গালি দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চোরা টাকা, দুর্নীতির টাকা, অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে যতই বিলাসিতা করুক, মানুষ মুখে হয়তো খুব বাহবা দিবে, পিছনে একটা গালি দিবে এই কথাটা মনে রাখতে হবে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যে ত্যাগের মহিমা জাতির পিতা দেখিয়ে গেছেন সেই পথ ধরে চলতে হবে।

 
Electronic Paper