ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আমার লিগ্যাল গার্ডিয়ান মা, চাচা নন

খোলা কাগজকে এরিক

সাইদ রহমান
🕐 ১০:২৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০১৯

শাহতা জারাব এরশাদ এরিক। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকীর সন্তান। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণ এরিক তার চাচা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে জিডি করেছেন। বারিধারায় প্রেসিডেন্ট পার্কের বাড়িতে মা বিদিশার সঙ্গে থাকতে চান বলে জানিয়েছেন। এসব বিষয় নিয়ে এরিকের সঙ্গে গতকাল কথা হয় খোলা কাগজের।

এরিক বলেন, বাবা (এইচ এম এরশাদ) মারা যাওয়ার পর গত তিন মাস ধরে আমাকে মায়ের (বিদিশা সিদ্দিকী) সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। ঠিকমতো খেতে দেওয়া হয়নি এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ক্ষুধার চোটে আমার শরীর কেঁপেছে, তবুও আমাকে খেতে দেওয়া হয়নি। পচা দুধ খেতে দেওয়া হয়েছে।

নানা সময়ে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে এমন অভিযোগ করে এরিক বলেন, ড্রাইভার আমাকে গালাগালি করেছে, এমনকি মেরেছেও। আমার ঠোঁট ফেটে গেছে। এসব কারণে আমি জিডি করতে বাধ্য হয়েছি।

এরিকের প্রশ্ন, ড্রাইভার আমাকে মারবে কেন? সে এত বড় সাহস পেল কোথায়? সে বেতন পায় আমার কাছ থেকে, অথচ আমার গায়েই হাত তোলে! বাড়িতে অন্যান্য কর্মচারী যারা আছে, বাবা মারা যাওয়ার পর তাদের আচরণ পাল্টে গেছে। তারা এখন আমাকে দেখতে পারে না। আমার খোঁজখবর নেয় না। নানাভাবে আমাকে হ্যারেস করার চেষ্টা করেছে।

এসব নির্যাতনের কথা চাচা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে জানানোর পরও সুরাহা মেলেনি- এমন অভিযোগ এরিকের। তিনি বলেন, আমি জানিয়েছি কিন্তু তিনি খুব ব্যস্ত মানুষ, আমাকে পাত্তা দিতে চান না।

এরিক বলেন, আমার লিগ্যাল গার্ডিয়ান আমার মা, চাচা নন। আমার জীবন যখন বিপন্নপ্রায় তখন (১৪ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট পার্কে আসেন বিদিশা) মা আমার কাছে এসেছেন। এখন থেকে তিনিই আমার দেখাশোনা করবেন। মা এখান থেকে আর যাবেন না। আমিও এ বাসা ছেড়ে কোথাও যাব না।

প্রেসিডেন্ট পার্কের বাড়িতে মা বিদিশা সিদ্দিকী আসার পর এখন তিনি ভালো আছেন বলে জানান। বলেন, মা আমার সঙ্গে আছেন। এখন আর কোনো সমস্যা নেই, আমি ভালো আছি।

এরিক বলেন, অনেকে বলাবলি করছেন, মা স্বার্থের জন্য এখানে এসেছেন। এটা মোটেও ঠিক নয়। তিনি এসেছেন আমার নিরাপত্তার জন্য। আপনারও নিশ্চয়ই একজন মা আছে। তিনি যেভাবে আপনার বিপদের সময় পাশে থাকেন, আমার মা-ও ঠিক সে কারণেই আমার পাশে আছেন। মায়ের মধ্যে সম্পদের লোভ নেই। তার নিজের বাড়ি আছে, তার এসবের কী প্রয়োজন? বরং আমার চাচার যদি এসব সম্পদের প্রয়োজন হয় তাহলে তাকে সেটা বলতে বলুন, আমি দিয়ে দেব। এসব দিয়ে দিতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমাকে কোনো ডিস্টার্ব করা যাবে না।

এরিক বলেন, আমি প্রাপ্তবয়স্ক। নিজের সিদ্ধান্ত তাই আমি নিজেই নিতে পারি। তাই আমাকে আমার মতো চলতে দিতে হবে। তাহলে চাচার লোকেরা কেন আমার ওপর নির্যাতন করতে চায় সেটা আমি বুঝতে পারছি না।

এরিকের প্রশ্ন, চাচাকে তো ট্রাস্টে রাখা হয়নি। তাহলে তার এত মাথাব্যথা কেন? মা আমার গার্ডিয়ান হিসেবে আছেন, তিনিই আমার ভালো-মন্দ দেখবেন।

 
Electronic Paper