ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শ্রমিক স্বার্থ দেখার নেতৃত্ব নেই

সম্মেলন ৯ নভেম্বর

হাসান ওয়ালী
🕐 ১০:১৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০১৯

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন শ্রমিক লীগের সম্মেলন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান-পরবর্তী শ্রমিক লীগের সম্মেলন নিয়ে আতঙ্কে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির সঙ্গে যুক্ত নেতারা। এ কারণে অনেকটা চুপিসারেই প্রচারণা চালাচ্ছেন পদ-প্রত্যাশীরা। নামে শ্রমিকদের সংগঠন হলেও নেতৃত্বে প্রকৃত শ্রমিকদের দেখা মেলা ভার। এমপি বা প্রভাবশালী নেতাদের বাইরে গিয়ে শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কাজ নেই সংগঠনের।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শ্রমিক লীগকে সত্যিকারার্থে শ্রমিকদের সংগঠন বানাতে চাইলে সৎ-নীতিবান প্রকৃত শ্রমিকদের হাতে নেতৃত্ব দেওয়ার বিকল্প নেই। ১৯৬৯ সালের ১২ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয় শ্রমিক লীগ। সংগঠনটির সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০১২ সালে। সভাপতির দায়িত্ব পান শুকুর মাহমুদ আর সাধারণ সম্পাদক হন সিরাজুল ইসলাম।

দীর্ঘ মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি অবশেষে সম্মেলনের মুখ দেখতে যাচ্ছে। ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে শ্রমিক লীগের সম্মেলন। একই মাসের ২৩ নভেম্বর যুবলীগ, ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ৬ নভেম্বর কৃষকলীগের সম্মেলন। এর পরের মাস ডিসেম্বরের ২০ ও ২১ তারিখ হবে মূল দল আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন।

সমালোচকরা বলছেন, প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সময়েও শ্রমিকদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে পারেনি সংগঠনটি। তার পরিবর্তে স্থানীয় অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদে শ্রমিক লীগ একাধিকবার নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হওয়ার বিপরীতে শোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। বিশেষ করে মফস্বলে শ্রমিক লীগের নেতারা শ্রমিকদের শোষকে পরিণত হয়েছে।

নেতাকর্মীরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সহযোগী সংগঠনগুলোর পরিচয়ে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অ্যাকশনে আতঙ্কিত শ্রমিক লীগের নাম-বেচা নেতারা। সংগঠনটির নেতাকর্মীরা আশা করছেন, তুলনামূলক স্বচ্ছ নেতারা এবারের নেতৃত্বে আসবে। সম্মেলনকে ঘিরে একাধিক নেতা দৌড়ঝাঁপ করছেন শীর্ষ মহলে।

নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ, কার্যকরী সভাপতি ফজলুর হক মন্টু, সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব মোল্লা রয়েছেন আলোচনার শীর্ষে।

শীর্ষ পদ-প্রত্যাশী নেতারা ভিড় জমাচ্ছেন শীর্ষ নেতাদের অফিস-বাসায়। কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতি। সম্মেলন নিয়ে সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ বলেন, আমি দীর্ঘদিন ঢাকা মহানগর শ্রমিক লীগ এবং রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতৃত্ব দিয়েছি। এবারের সম্মেলনে আশা করছি আমার কর্মকাণ্ডকে বিবেচনা করে নেত্রী আমাকে দায়িত্ব দিবেন।

মফস্বলে শ্রমিক লীগের নেতাদের অপরাধের সঙ্গে যুক্ততা নিয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ করতে না চাওয়া এক নেতা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ-যুবলীগ নেতাদের পছন্দের ব্যক্তিদের নেতা বানান তারা। স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তারে নিজের পছন্দের লোকদের নেতৃত্বে আনেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ জায়গায় যোগ্যতা বিবেচনা করে আমরা নেতা বানাতে পারি না। আওয়ামী লীগের জেলার শীর্ষ নেতাদের পছন্দের লোকদের নেতা বানায়ে আসতে হয়। দলীয় কর্মকাণ্ডেও তাদের কোনো ভূমিকা থাকে না। তারা শুধু স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।’

 
Electronic Paper