ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ছাত্রদলের কাউন্সিল

ছাত্রলীগ ফোবিয়া

হাসান ওয়ালী
🕐 ১০:২৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯

কাউন্সিল করতে গিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা ছাত্রদলে। দুদফা তারিখ নির্ধারণ করেও শেষ অবধি আলোর মুখ দেখেনি। সবশেষ ১৪ সেপ্টেম্বরের কাউন্সিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসে হাইকোর্টের তরফ থেকে। নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন ছাত্রদলেরই সদ্য সাবেক এক নেতা। বারবার কাউন্সিল পেছানোর পেছনে ছাত্রদলের ‘ছাত্রলীগ ফোবিয়া’ কাজ করছে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, কাউন্সিলে আওয়ামী পরিবারের সন্তানরা নেতৃত্বে চলে আসতে পারে এমন আশঙ্কায় বারবার পেছাচ্ছে কাউন্সিল।

এ আশঙ্কার মধ্যেই বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল থেকে কাউন্সিলরদের সঙ্গে রুদ্ধদার বৈঠকে যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাতেই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলে গুঞ্জনও ওঠে।

এ বছরেই ৩ জুন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেওয়ার পর গত ১৫ জুলাই কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও অদৃশ্য কারণে কাউন্সিল অনুষ্ঠানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি সার্চ কমিটি। পুনরায় ১৪ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকাও প্রস্তুত করা হয়। তবে বিপত্তি বাধে শেষ সময়ে। কাউন্সিলের দুদিন আগে ১২ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ঢাকার একটি আদালত। ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী কমিটির ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক আমান উল্লাহ কাউন্সিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে এ আবেদন করেন।

কাউন্সিল হতে হতেও না হওয়া প্রসঙ্গে ছাত্রদলের এক অংশের নেতারা বলছেন, সরকারের ইন্ধনে বারবার পেছাচ্ছে ছাত্রদলের কাউন্সিল। তাদের দাবি, সরকার চায় না ছাত্রদল সংগঠিত হোক। ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে তা অনেক বেশি কার্যকর হবে, এমন আশঙ্কায় কাউন্সিলে বাধ সাধছে বারবার।

এ প্রসঙ্গে ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ খোলা কাগজকে বলেন, ‘সরকার চাচ্ছে না ছাত্রদলের কাউন্সিল হোক। ছাত্রদলের সাবেক নেতাকে প্রেসার দিয়ে আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করানো হয়েছে। মামলার রায়ের পরে আমরা তাকে পাচ্ছি না।’

অন্য অংশের দাবি, ছাত্রদলের নেতৃত্বে আওয়ামী পরিবারের সন্তান চলে আসতে পারে এমন ‘ফোবিয়া’য় এ মুহূর্তেই কাউন্সিল চায় না মূল দল বিএনপি। কাউন্সিলে বৈধ সভাপতি প্রার্থীদের সবচেয়ে আলোচনায় থাকা কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের বাবা যশোরের কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ওই উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলামের ছেলে। শ্রাবণের অন্য সব ভাইও আওয়ামী লীগ নেতা। এ ছাড়াও বৈধ প্রার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রয়েছে। নেতাকর্মীদের বলছেন, নানা হিসাব-নিকাশ মেলাতে সময় নিচ্ছে বিএনপি হাইকমান্ড।

আদালতের নিষেধাজ্ঞার পর ছাত্রদলের কাউন্সিল প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপি প্রমাণ করতে চাইছে তাদের এই কাউন্সিলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই। দলের অন্যতম সহযাগী সংগঠনের দেখভালের কাজটিই শুধুই তারা করছেন। সম্প্রতি এক সভায় ছাত্রদলের যে কোনো সাংগঠনিক-রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেওয়া হয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তে যেকোনো সময় কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলেও মনে করছেন নেতাকর্মীরা। নতুন কমিটিতে নেতা নির্বাচনে ‘২০০০ সালের পরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে’ মর্মে শর্তারোপ করায় অপেক্ষাকৃত তরুণরা চলে এসেছেন লাইমলাইটে।

 
Electronic Paper