ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দায় কি শুধু ছাত্রলীগ যুবলীগের

বিবিসি বাংলা
🕐 ৯:২৪ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯

বাংলাদেশে চাঁদাবাজির অভিযোগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে সরানোর পর এখন যুবলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকদের অনেকে বলেছেন, চাঁদাবাজি, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ নিয়ে অনেক দেরিতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে সহযোগী সংগঠনগুলোর ব্যাপারে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলে এবং সহযোগী সংগঠনগুলোতে জবাবদিহিতার জন্য কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।

তবে নানা অভিযোগ নিয়ে পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক অবস্থায় এসেছে, সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ব্যর্থতা আছে কি-না বা এর দায় কার ওপর বর্তায়- এসব প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা।

আওয়ামী লীগের আরেক সহযোগী সংগঠন যুবলীগের একজন নেতা জানিয়েছেন, তাদের সংগঠনেরও ঢাকা নগরীর দু’জন নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেজন্য অভিযুক্ত দু’জনের বক্তব্য শুনতে তাদের ডেকেছে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অনেক কর্মকা- বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ বা সরকারকে বিব্রত করেছে। তবে এবার চরম বিপজ্জনক পরিস্থিতি হওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রী নিজে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেকে বলছেন।

এ বিষয়ে টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘চাঁদাবাজিসহ গুরুতর নানা অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে অনেক বিলম্ব করা হলো। এত সময় লাগল কেন এই বিষয়টাকে চিহ্নিত করতে এবং এটার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে? আমি আশা করব যে, শুধু প্রধানমন্ত্রী একা নন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যারা আছেন, তারা প্রত্যেকে এই কথাটা ভাববেন, এ পর্যন্ত কত ক্ষতি হয়েছে- সেই ক্ষতির জন্য তারা একটু অনুতপ্ত বোধ করেন কি-না?’

ছাত্রলীগ নেতা রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং গোলাম রাব্বানীকে অপসারণের পেছনে বড় অভিযোগ ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বড় অংকের চাঁদা দাবি করা।

যুবলীগের ঢাকার দু’জন নেতার বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভের কথা তুলে ধরছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা বলেছেন, এবার এসব অভিযোগ সরাসরি প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন এবং তিনি দলীয় ফোরামে ক্ষোভ প্রকাশের পর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্ন এসেছে।

তবে বিশ্লেষকরা বলেছেন, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু সেগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য চেষ্টা সেভাবে দৃশ্যমান ছিল না। পরিস্থিতি খারাপ অবস্থায় পৌঁছানোর পেছনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, সবকিছু এককেন্দ্রিক হওয়ার কারণে পরিস্থিতি এমন হয়েছে। এটি তো একদিনে তৈরি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেটাকে সাধুবাদ জানাই। তবে এমন পদক্ষেপ ১০ বছর আগে থেকে নেওয়া হলে হয়তো এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। কিন্তু আমাদের সমস্যা হচ্ছে, এখন সবকিছু প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে হয়।

তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ‘অতীতে ছাত্রলীগের যে দু’একটা ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছে। সেগুলোকে শক্তভাবেই শাসন করা হতো। আওয়ামী লীগ কখনোই ছাত্রলীগ বা যুবলীগের কোনো ধরনের অন্যায়ে সমর্থন করেনি।’

 
Electronic Paper