এরশাদের কুলখানি অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০১৯
জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শুধু আমার বড় ভাই ছিলেন না, উনি আমার পিতা ও আমার শিক্ষক ছিলেন। ওনার কোলে চড়ে সিনেমা দেখেছি, হাতে ধরে চামচ দিয়ে খাওয়া এবং কিভাবে টাই বাঁধতে হয় সেটাও শিখিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। আজ আমাদের মাথার ওপর ছাতাটি সরে গেছে, বটগাছটি আর নেই।
আজ (১৭ জুলাই) বাদ-আসর রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কুলখানিতে আবেগঘন কণ্ঠে তিনি এসব কথা বলেন। কুলখানিতে এরশাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। জি এম কাদের বলেন, একটি মানুষের অবদান অর্জন বোঝা যায় তার মৃত্যুর পর জানাজায় লোকসমাগম দেখে। পার্টি চেয়ারম্যানের চারটি জানাজা হয়েছে কোনোটিতে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। ওনার নীতি ও কর্ম মানুষ গ্রহণ করেছিল বলেই প্রতিটি জানাজায় বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম হয়েছিল। তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ গ্রামকে শহর করার কথা বলছে তার গোড়াপত্তন করেছিলেন এরশাদ উপজেলা প্রতিষ্ঠা করে। রাজনীতির সংকট মোকাবেলা কিভাবে করতে হয় সেটাও তিনি শিখিয়েছেন আমাকে রাজনীতিতে নিয়ে এসে। সেই লোকটি আজ চিরাচরিত নিয়মেই সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, আমার ভাই যখন হাসপাতালে তখন প্রতি ঘণ্টায় খোঁজখবর নিয়েছেন তারা। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের ডাক্তাররা সারাক্ষণ তদারকি করেছেন। ওনারা নিজের বাবার মতো করে সেবা করেছেন।
কুলখানিতে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম, সালমান এফ রহমান, নূরে আলম সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ এবং এরশাদের দুই পুত্র এরিক এরশাদ ও সাদ এরশাদ।
জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে ছিলেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার, মসিউর রহমান রাঙ্গা, কাজী ফিরোজ রশিদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, আবু হোসেন বাবলাসহ অনেকে। শেষে মরহুমের আত্মার শান্তির জন্য সবার কাছে দোয়া চান জি এম কাদের।
বাবার কবরে মাটি দিতে দেয়নি এরিককে : বিদিশার অভিযোগ
বাবার কবরে ছেলে এরিককে এক মুঠো মাটি দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সদ্য প্রয়াত জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদ।
আজ (১৭ জুলাই) নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এই অভিযোগ জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। স্ট্যাটাসে বিদিশা লেখেন, ‘চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন পল্লীবন্ধু পল্লীনিবাসে। যে পল্লীনিবাস তার আদরের ছেলে এরিককে দিয়ে গেছেন তার বাবা। কিন্তু এক মুঠো মাটিও তার বাবার কবরে দিতে দেয়নি এরিককে। রংপুরের মানুষের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা থাকবে সারা জীবন।’
এরশাদ গত রোববার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। রক্তে হিমোগ্লোবিনের স্বল্পতা, ফুসফুসে সংক্রমণ ও কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার রংপুরে নিজ বাসভবন পল্লীনিবাসে এরশাদের দাফন সম্পন্ন হয়।