ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া

ছাইফুল ইসলাম মাছুম
🕐 ১০:৩৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০১৯

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অনেকে। কেউ কেউ এরশাদকে স্বৈরশাসক, বিশ্ববেহায়া নানা তকমা লাগিয়ে ঘৃণামিশ্রিত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ নানান ভালো বিশ্লেষণে সাক্ষাৎ ফেরেশতা বানিয়েছেন।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক তপন মাহমুদ লিমন লিখেছেন, ‘পৃথিবীর স্বৈরশাসকরাও একদিন মরে যায়! কিন্তু মৃত্যুর আগে কখনো মাফ চায় না!’ সংবাদকর্মী রিয়াজ হোসেন লিখেছেন, ‘নুর হোসেন, দিপালী সাহা, জয়নাল, এদের হত্যার বিচার এখনো হয়নি। অথচ এদের হত্যাকারী আইসিইউতে নিশ্চিন্তে মৃত্যুবরণ করেন।

গণমাধ্যমকর্মী সিয়াম সারোয়ার জামিল লিখেছেন, ‘দশটা বছর এরশাদের বাহিনী ক্যাম্পাসগুলোতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল। রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা করে, সেনাসদস্যদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ক্ষমতায় আরোহণ করেছিলেন তিনি। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তার সব কর্মকাণ্ড রুখতে ১০ দফা প্রণয়ন করেছিল ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট। সেই স্বৈরাচার কোনো বিচার ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে মরলেন। কোনো হত্যাকাণ্ডের জন্যই শাস্তি পেলেন না।’

বিবিসির সংবাদদাতা আকবর হোসেন লিখেছেন, ‘ মৃত্যু মানুষের জন্য একমাত্র সত্য, বাকি সব মিথ্যা। মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তার যাবতীয় শত্রতা কিংবা বৈরিতার অবসান হওয়া বাঞ্ছনীয়। মানুষের জীবনে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকবেই। সেজন্যই আমরা মানুষ! কারো মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য সমীচীন নয়। বাই দ্য ওয়ে, এরশাদই কি বাংলাদেশের একমাত্র স্বৈরাচার?’

তরুণ কবি ইমরান মাহফুজ লিখেছেন, ‘এক এরশাদ চলে গেছে, হাজারো এরশাদ এর স্বাদ নিয়ে টিকে আছে ঘরে বাইরে !’ তাসলিমা হাসান তমা নামক একজন লিখেছেন, ‘যে যাই বলুন পল্লীবন্ধু এরশাদ অনেক ভালো মানুষ ছিলেন।’

এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এরশাদ স্বৈরচার। আমাদের প্রজন্মের গোটা ছাত্রজীবন গেছে এরশাদের বুটের তলায়। কত রক্ত কত প্রাণ! তবু ৯৬ সালে এরশাদের সমর্থন ছাড়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারতো কি? যদি না পারতো তাহলে কোনোদিনই কি আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতির পুনরুত্থান হতো বাংলাদেশে? যদি না হতো, এখন এই ২০১৯ সালে বাংলাদেশের চেহারা কেমন হতো- পাকিস্তান, আফগানিস্তান নাকি সিরিয়া? আজ এরশাদ নেই। কিন্তু এসব প্রশ্নের উত্তর ইতিহাস দেবে অনেক দিন পরে। তখন হয়তো আমিও থাকবো না। তবু প্রশ্নগুলো উত্থাপন করে রাখলাম।’

এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতা ফয়জুল হাকিম লিখেছেন, পটুয়া কামরুল হাসান ৮০-র দশকে সামরিকজান্তা প্রধান এরশাদকে লক্ষ্য করে কার্টুন একে নিচে লিখেছিলেন, দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে! সামরিক ক্যুদেতা করে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ক্ষমতা দখলকারী এই সামরিক স্বৈরশাসক ৫২-র ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ স্বাধীনতা সংগ্রামে জনগণের গৌরবজনক রাজনৈতিক অর্জন অসাম্প্রদায়িকতার পিঠে ছুরিকাঘাত করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করেছিলেন। জনগণকে বিভক্ত করো ও শাসন করার নীতি অবলম্বন করতে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারের পথ উন্মুক্ত করেছিলেন।

ডা. মিলন, নূর হোসেন, জাফর-জয়নাল-কাঞ্চন-দীপালি- মোজাম্মেল-সেলিম-দেলোয়ার- রাউফুন বসুনিয়া-জেহাদসহ শত শত সাথী শহীদদের হত্যার নির্দেশদাতা- হত্যাকারীকে ইতিহাস ক্ষমা করবে না।

 
Electronic Paper