ইতিবাচক আশ্বাসে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১২:০১ অপরাহ্ণ, জুন ১৩, ২০১৯
নেতৃত্ব নির্ধারণে বয়সসীমা বাতিলের দাবিতে করা আন্দলন সার্চ কমিটির ইতিবাচক সমাধানের আশ্বাসে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পূর্বনির্ধারিত অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছে। আজকের এ কর্মসূচি স্থগিতের কথা জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির গণমাধ্যমকে বলেন, সার্চ কমিটির নেতারা আমাদের জানিয়েছেন, তারা আমাদের প্রিয় নেতা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন। আশা করছেন ইতিবাচক সমাধান হবে। এ জন্য সার্চ কমিটি আমাদের কোনো কর্মসূচিতে না যাওয়ার জন্য বলেছেন। তাই আজ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ যে অবস্থান কর্মসূচি পালনের কথা ছিল তা আমরা সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করেছি।
এর আগে ছাত্রদলের নেতাদের দাবির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে এবং সংকটের সমাধানে সার্চ কমিটি করে বিএনপি। এ কমিটির আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টার জন্য কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ায় আজ আবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতারা।
এ বিষযে ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির বুধবার গণমাধ্যমকে জানান, কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি যৌক্তিক। এ ছাড়া আমাদের দাবি ছিল- ছয় মাসের মধ্যে একটি কমিটি, আগামী জানুয়ারিতে এক বছরের জন্য একটি কমিটি গঠনের। তার পর থেকে ছাত্রদের দিয়ে নিয়মিত কমিটি করা হোক, যা আমরা মঙ্গলবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে বৈঠকে সার্চ কমিটিকে জানিয়েছি। তাদের আশ্বাসে আন্দোলন কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু এ নিয়ে আমাদের সুস্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি। তাই বৃহস্পতিবার (আজ) ফের নয়াপল্টনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, আমরা তাদের দাবির বিষয়ে ছাত্রদলের সাবেক নেতারা বুধবারও গুলশান কার্যালয়ে বসেছিলাম। এ নিয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আমরা কথা বলব। তিনি সিদ্ধান্ত দেবেন। যারা অভিমান করেছেন তারা আমাদেরই ছোট ভাই। আমরা তাদের দায়িত্ব নেয়ার কথা বলেছি। তাদের বিএনপির বিভিন্ন উপকমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলেও তাদের নেয়ার কথা বলেছি। এটি সমাধান হয়ে যাবে।
কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও নতুন কমিটির সদস্য হওয়ার বয়সসীমা বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার দিনভর বিক্ষোভ ও অনশন করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় গুলশানে ক্ষুব্ধ নেতাদের ডেকে পাঠানো হয়।
সেখানে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে গঠিত সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর ২৪ ঘণ্টার জন্য কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। সূত্র জানায়, ক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতারা সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বিগত আন্দোলনে তাদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
তারা বলেন, নতুন কমিটি গঠনে ২০০০ সাল থেকে পরবর্তী বছরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের প্রার্থী করার বাধ্যবাধকতা করা হয়েছে। সে হিসাবেও তো বয়স ৩৩-৩৫ বছরই থাকল। তা হলেও তো ছাত্র দিয়ে কমিটি গঠন হচ্ছে না।
ছাত্রদল নেতারা বলেন, ৬ মাসের আহ্বায়ক কমিটি করে অন্তত সিনিয়রদের সম্মানজনকভাবে বিদায় দেয়া যেত। পর্যায়ক্রমে ছাত্রদের হাতে ছাত্রদল ফেরানোর উদ্যোগ নিলেই হতো। ছাত্রদল করতে গিয়ে যারা গুম হয়েছে, জেল খেটেছে, চাকরির বয়স হারিয়েছে, তাদের তো মনের সান্ত্বনার বিষয় আছে। আজকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। ছাত্রদলের গত দুই কমিটির ১০-১৫ জন ছাড়া কাউকে কোনো অঙ্গসংগঠনে পদ দেয়া হয়নি- এটিই বাস্তবতা।
এ বিষয়ে বিএনপির একজন নীতিনির্ধারক গণমাধ্যমকে বলেন, দলের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে শিগগিরই যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিল করা হবে। কাউন্সিলের মাধ্যমেই এ দুই অঙ্গ সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। দুই সংগঠনে ছাত্রদলের সাবেক নেতা যারা ত্যাগী ও পরীক্ষিত তাদের পদ দেয়া হবে।