ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ডাকসুর পুনঃভোট দাবি

ঢাবিতে আজ ক্লাস পরীক্ষা বর্জন

ঢাবি প্রতিনিধি
🕐 ১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৮, ২০১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন বাতিল, পুনঃতফসিল ঘোষণাসহ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের পদত্যাগ দাবিতে আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ভিসি কার্যালয়ের সামনে অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যজোট। গতকাল রোববার দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যজোটের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী।

লিটন নন্দী বলেন, ১১ মার্চের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হয়েছে। এ নির্বাচন আমরা মানি না। ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনকে বৈধতা দিতে পারি না। এ ডাকসু আমাদের ডাকসু না। আগামীকাল (আজ সোমবার) ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ভিসি কার্যালয়ে অবস্থানের মধ্য দিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।

তবে গতকালের ওই সংবাদ সম্মেলনে পাঁচটি প্যানেলের কর্মীদের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ছাত্রজোট ছাড়া অন্য কোনো প্যানেলের কেউ সেখানে ছিলেন না। ভোট বর্জনকারী বাকি প্যানেলগুলো হলো বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বতন্ত্র জোট, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশন।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে লিটন নন্দী বলেন, অন্যরা এখনো অভ্যন্তরীণ দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন। তারাও আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে অবস্থান পরিষ্কার করবেন বলে আশা করছি। তবে আমরা অবস্থান পরিষ্কার করছি।

গত শনিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে ডাকসুর নতুন ভিপি নুরুল হক নুরের বক্তব্যের বিষয়ে লিটন বলেন, তার বক্তব্যের কিছু অংশ প্যানেলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি যদি এ বক্তব্যে অটল থাকেন তাহলে ছাত্রসমাজের সঙ্গে প্রতারণা করবেন। এ বক্তব্য আন্দোলনের গতি কমিয়ে দিয়েছে এবং ছাত্রসমাজকে ধোঁয়াশায় ফেলেছে। আমরা মনে করি, তিনি দ্রুত অবস্থান পরিষ্কার করবেন।

ডাকসু নিয়ে ছাত্র ঐক্যজোটের দাবিগুলো হচ্ছে জালিয়াতির ডাকসু নির্বাচন বাতিল, পুনঃতফসিল ঘোষণা এবং ব্যর্থ ভিসির পদত্যাগ, নির্বাচনে কারচুপির সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের পদত্যাগ এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।

এদিকে অবস্থান পাল্টে ফের ডাকসু নির্বাচন চেয়েছেন নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর। গতকাল বিকালে মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে নুর বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত পোষণ করে আমিও পুনঃনির্বাচন চাই। শুরু থেকেই আমার অবস্থান স্পষ্ট ছিল। ২৮ বছর পর যে নির্বাচন হয়েছে তা বিতর্কিত, ঢাবির ইতিহাস ঐতিহ্যে কালিমা লেপন করেছে। ভিপিপ্রার্থী হয়ে আমি নিজেও হামলার শিকার হয়েছি। শিক্ষকরাই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে মন্তব্য করেন কোটা আন্দোলনের এ নেতা।

নুর আরও বলেন, ভিপির দায়িত্ব নিইনি, একসঙ্গে যারা আন্দোলন করছি তাদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেব, দায়িত্ব নেব কিনা। গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে গিয়েছিলাম। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে বলেছি, এছাড়া আবাসন সমস্যাসহ ঢাবির সব সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নুরুল হক নুর বলেন, পুনঃনির্বাচনের বিষয়ে ৫টি প্যানেল একসঙ্গেই আন্দোলন চালিয়ে যাবে। ডাকসু নির্বাচনটা ঢাবির বিষয়, সরকারের নয়।

নির্বাচিত হিসেবে আমাদের ডাকা হয়েছিল। শ্রদ্ধাবোধ থেকে গিয়েছি যেহেতু তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সরকারপ্রধান। ঢাবির শিক্ষার্থীরা পুনঃনির্বাচন চায়, আমি তাদের দাবির সঙ্গে একমত। সাংবাদিকরা যেন তার অবস্থান ভুলভাবে উপস্থাপন না করেন এমন আহ্বান জানান ডাকসুর বহুল আলোচিত ও সমালোচিত এ নেতা।

উল্লেখ্য, গত শনিবার গণভবনে নবনির্বাচিত ডাকসু নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় নুরুল হক নুর প্রধানমন্ত্রীর পা ছুঁয়ে সালাম করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর মাঝে মায়ের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেন।

 
Electronic Paper