ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাবি ও চবিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ছাত্রলীগ চায় দ্রুত ভোট অন্যরা সুষ্ঠু পরিবেশ

রাবি ও চবি প্রতিনিধি
🕐 ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৩, ২০১৯

দীর্ঘ ২৮ বছর পর নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ডাকসুতে যে ধরনের সুষ্ঠু একটি নির্বাচন প্রত্যাশা করেছিলেন তা হয়নি।

আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে বাক্সভর্তি, নির্বাচন পরিচালনাকারীদের পক্ষপাতমূলক আচরণ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতিকর পরিবেশ তৈরিসহ নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ডাকসুর এমন নির্বাচনের পর রাকসু, চাকসু বা জাকসুসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কতটুকু আগ্রহ আছে সবার কাছে এখন সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা নির্র্বাচন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখান। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সবাই নির্বাচন চান। তবে সেই নির্বাচন যে সুষ্ঠু হবে প্রশাসনের কাছে সেই নিশ্চয়তা চান।

এ বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, রাকসু নির্বাচনে ডাকসু নির্বাচনের কোনো প্রভাব পড়বে না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে মনে করি। আর দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফিদেল মনির বলেন, ডাকসুর মতো নির্বাচন আমরা দেখতে চাই না। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সকল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত ও আবাসিক হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম তারেক বলেন, অবশ্যই রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হবে। নির্বাচনে কোনো ধরনের কারচুপি হলে শিক্ষার্থীরা মানবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন তারাই রাকসুর প্রতিনিধিত্ব করবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা গতকাল প্রক্টর দপ্তরে সংলাপ কমিটির সঙ্গে আলাপ করে ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিতকরণসহ ১৪ দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব পরশ বলেন, চাকসু নির্বাচনের দাবিতে চবি ছাত্রলীগ সর্বদা সজাগ রয়েছে।

চাকসু নির্বাচন নিয়ে আমরা পুরোপুরি আশাবাদী। সব দলের সহাবস্থান বিরাজমান উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি চাকসু নির্বাচনের এখনই সর্বোত্তম সময়।

ছাত্র ইউনিয়ন চবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবা জাহান রুমি বলেন, আমরা চাকসুর দাবিতে সর্বদা কথা বলছি। নানা কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু প্রশাসনের কোনো ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি না। ডাকসু নির্বাচন পরবর্তী চাকসুর ব্যাপারে কেমন আশাবাদী জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সহাবস্থান নেই বললেই চলে। এমন পরিস্থিতি থাকলে চাকসু নির্বাচন নিয়ে সবাই আগ্রহ হারাবে বলেও উল্লেখ করেন রুমি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মনে করেন, গত বছর ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর থেকে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন আর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস হয় না।

অতএব ডাকসু নির্বাচনেও চিরচেনা এই অবস্থা দেখে আমরা হতাশ হইনি। চাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা চাই প্রশাসন এ ব্যাপারে স্বচ্ছতা বজায় রেখে সবার অংশগ্রহণে নির্বাচনের আয়োজন করুক। আমরা নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত।

 
Electronic Paper