ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

একা তবুও গৃহবিবাদ আওয়ামী লীগে

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৫৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি জোট অংশ নিচ্ছে না। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময় অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি অনুপস্থিত থাকলেও আওয়ামী লীগ, তাদের শরিক ও সমমনাদলগুলো মাঠে সক্রিয়। এবার উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে প্রার্থী দিচ্ছে। কিন্তু প্রার্থী দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের। দলের হাই কমান্ডের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে প্রায় প্রতিটি উপজেলায়ই দলীয় প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিএনপির অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ মাঠে একা তারপরও নিজ নিজ এলাকা দলের নেতাকর্মীদের নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে বাড়ছে বিবাদ ও কোন্দল।




জানা গেছে, প্রথম ধাপে ৮৬টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১০ মার্চ হবে প্রথম ধাপের ভোট। ৮৬ উপজেলায় তিনটি পদে (উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান) মোট ১০৮৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ২৮৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৪৮৭ জন ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩১৫ জন প্রার্থী হয়েছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ৮৬টি উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হচ্ছে ৮৬ জন। তবে এই পদে প্রায় সব স্থানেই কমপক্ষে দুজন করে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী আছে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দল থেকেও প্রার্থী হয়েছেন।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও কোনো কোনো উপজেলায় তাদের স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

মাঠের বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগ অনেকটা একা নির্বাচন করছে বললেই চলে। আর একা নির্বাচন করলেও নিজ দলের অনেক প্রার্থী দলের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। আর এই বিদ্রোহী প্রার্থীদের শামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ১৭ জন বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে শেষ পর্যন্ত দুজন ছিল। একটি বড় দলের জন্য এটা কিছুই না। উপজেলা নির্বাচনেও আওয়ামী লীগে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না। আর বিদ্রোহী প্রার্থী হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর গত সোমবার তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের বিরোধিতা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ।
দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হবে।

জানা গেছে, বিভিন্ন উপজেলায় দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বা অন্যদলের প্রার্থী থাকলেও প্রথম ধাপের নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী না থাকায় উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের চারজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন। তারা হলেন- জামালপুরের সরিষাবাড়িতে গিয়াসউদ্দিন পাঠান, মেলান্দহে ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান, মাদারগঞ্জে ওবায়দুর রহমান বেলাল ও জয়পুরহাট সদরে এস এম সোলায়মান আলী।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৮৭টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। উচ্চ আদালতের রায়ে রাজশাহীর পবা উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এ কারণে প্রথম ধাপে ৮৬টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এসব উপজেলায় গতকাল ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারিত ছিল। কয়েকটি উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেও অধিকাংশ জায়গায়ই বিদ্রোহী প্রার্থী রয়ে গেছে।

 
Electronic Paper