ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রতিশ্রুতি পূরণে কী করেছিল বিএনপি

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১০:৫৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮

২০০১ সালের নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। ওই নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তিন সপ্তাহ আগে দলের পক্ষে ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ওই ইশতেহারে ৩০টিরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার করা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল- সংসদের আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০০ করা এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা বাড়ানো। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা, প্রবাসী ও তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করার অঙ্গীকার ছিল।

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ওই ইশতেহারের কিছু কিছু বিষয় বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। এর মধ্যে সংসদে নারীর আসন ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ করা হয়েছিল, প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন কমিশন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ ও গ্রাম সরকার হয়েছিল। তবে অঙ্গীকারের বেশিরভাগগুলোই বাস্তবায়ন হয়নি। যেমন ৫০০ আসনের সংসদ হয়নি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপিদের সম্পদের হিসাবও দেওয়া হয়নি। ইশতেহারের প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী, বিচার বিভাগ পৃথককীকরণ, রাষ্ট্রায়ত্ত রেডিও টিভির স্বায়ত্তশাসন, স্থায়ী পে-কমিশন, গঙ্গার পানি চুক্তি পরিবর্তন, পার্বত্য চুক্তির নতুন সমাধান, ইন্টারনেট ভিলেজ, সবার জন্য বিদ্যুৎ, প্রবাসী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ও তৈরি  পোশাক শিল্প মন্ত্রণালয় ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ হয়নি।
ওই ইশতেহার বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসি বাংলাকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা এবং নারী আসন বাড়ানোর পাশাপাশি সব সেক্টরেই তারা কাজ করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাতের কোঠায়  পৌঁছেছিল সরকারি নীতির কারণে। কৃষি খাতে বৈপ্লবিক উন্নতি এসেছিল।’ ইশতেহারের বেশিরভাগ বাস্তবায়ন না হওয়া বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি সরকারের ব্যর্থতার চেয়েও বেশি দায়ী করেছেন দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকেই।
দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা করলেও তা কার্যকর না করা, বরং হাওয়া ভবনের নামে নানা ধরনের অভিযোগ, বিচার বিভাগ পৃথককীকরণ নিয়ে নির্বাহী বিভাগের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের রাজনীতিতে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আলোচিত বিষয়। এ বিষয়ে গবেষক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে উদ্যোগ নিলেও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো যথাযথ বাস্তবায়নের নজির তারা তৈরি করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন হয়েছিল কিন্তু তার কাঠামো এমন ছিল, তা কখনোই কার্যকর হতে পারেনি।’
এসব বিষয়ের বাইরেও জেলা পর্যায়ে বিশেষ আদালত, ইসলামবিরোধী আইন না করা, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ, আইটি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া, ইন্টারনেট ভিলেজ প্রতিষ্ঠা, স্থায়ী পে-কমিশন করা, সবার জন্য বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার মতো প্রতিশ্রুতিও ছিল বিএনপির। কিন্তু এগুলোর কোনগুলো তারা বাস্তবায়ন করেছে  সেটি সম্পর্কে দলটির পক্ষ থেকেও সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হয় না।

 
Electronic Paper