ড. কামাল ছাড়াই রোডমার্চে ঐক্যফ্রন্ট
‘জনগণ রুখে দাঁড়ালে দায় সরকারের’
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৫৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৮
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয় পেয়েছেন। নির্বাচন বন্ধ করার সুযোগ খুঁজছেন। সরকারি দল নির্বাচন থেকে সরে যেতে চায়। তবে জনগণ এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।
একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ অভিমুখে ঐক্যফ্রন্টের প্রথম রোডমার্চ থেকে নেতারা এসব কথা বলেন। শনিবার দুপুরে তাদের প্রথম পথসভাটি হয় গাজীপুরের টঙ্গীর ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী সালাউদ্দিন সরকারের বাড়ি প্রাঙ্গণে। আর শেরপুর পৌর পার্ক চত্বরে পথসভার মধ্য দিয়ে এক দিনের এ কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা।
এর আগে বেলা ২টায় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে রাজধানীর উত্তরা থেকে রওনা দেন জোট নেতারা। এদিকে ঐক্যফ্রন্টের এই রোডমার্চে জোটের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের উপস্থিত থাকার কথা জানানো হলেও অসুস্থতার কারণে তিনি অংশ নেননি। রোডমার্চে সাতটি স্থানে জনসভা করবেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। এর মধ্যে গাজীপুর চৌরাস্তা, ময়মনসিংহের ভালুকা, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ, ফুলপুর ও শেরপুরে বেশ কয়েকটি পথসভা হওয়ার কথা রয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা প্রটোকল নিয়ে চলছেন বলে অভিযোগ করে আ স ম রব বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য তাদেরও প্রটোকল দিতে হবে। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের মামলা-হামলা বন্ধ করার আলটিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, এসব বন্ধ না হলে জনগণ রুখে দাঁড়াবে। তখন সবকিছুর দায় প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে। ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যুদ্ধে নেমেছি। ওদের কাছে অস্ত্র আছে, আমাদের ব্যালট। এ লড়াইয়ে আমরা জিতবই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘরে ঘুমানোর দরকার নেই। মার খেলেও জবাব দেওয়ার দরকার নেই। সব জবাব ৩০ ডিসেম্বর দেওয়া হবে। এমন জবাব দেব যে, আওয়াজও করতে পারবে না।
এ পর্যন্ত বিএনপির আট প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, অপকর্মের জবাব দেওয়ার ভয়ে সরকার ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। নির্বাচন দেশের অস্তিত্বের, দুঃশাসন হটানোর ও খালেদা জিয়ার মুক্তির নির্বাচন বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জেতার কোনো বিকল্প নেই। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে থাকার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এবারের নির্বাচনের মতো এত সহিংসতা আগে কখনো ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় হামলার জন্য লোক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি আজকের মধ্যে সেনাবাহিনী নামানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আগামী ২ জানুয়ারি ন্যায়বিচারের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে।
এ যাত্রায় আরও রয়েছেন-কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ। এ ছাড়া বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। একই দিনে বিকাল ৩টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিজয় র্যালি করা হবে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী অফিস পুরানা পল্টনে জোটের সমন্বয় কমিটির বৈঠকের পর এসব কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গণফোরাম নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক।