ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

এ কেমন খেলোয়াড় এরশাদ!

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৪৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০১৮

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এরশাদ চরিত্রটি অনেকটা পিংপং বলের মতো-আজ এখানে তো কাল ওখানে, আজ এক কথা তো কাল আরেক কথা। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান তাই বরাবরই এক আলোচিত পুরুষ। নিজের বক্তব্যের জন্য বিশেষভাবে আলোচনায় থাকেন তিনি। চরম মাত্রার ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ চরিত্রের কারণে নিজেকে হাসির পাত্রে পরিণত করেন প্রায়ই।

নির্বাচন ঘনিয়ে এলে সংগত কারণেই সামনে চলে আসেন তিনি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুটি বলয়ের বাইরে ভোটের রাজনীতিতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় এরশাদকে ছাড়া অন্যদের চলেও না। এই সুযোগে প্রায় দুই দশক ধরে নানা দরকষাকষির মাধ্যমে রাজনীতিতে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন বেশ ভালোভাবেই। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই সামনে আসছে ততই স্বরূপে প্রকাশিত হচ্ছেন এরশাদ। নিজ দলের প্রার্থিতা নিয়ে নানা সময় নানা কথা বলেছেন। শুরুটা হয়েছিল ‘৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে জাতীয় পার্টি’-এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। পরে ১০০ আসনের কথা বলেছেন একাধিকবার। কিন্তু নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মহাজোটের সঙ্গে চূড়ান্ত দরকষাকষি শেষে জাতীয় পার্টির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৯ আসন।
হিসাবটা এখানেই শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এরশাদ বলে কথা! মহাজোটের সঙ্গে একের পর এক আলোচনা করে আসন যখন চূড়ান্ত তখন জাতীয় পার্টি থেকে বলা হলো মহাজোটের ২৯ এবং উন্মুক্তসহ মোট ১৭৪টি আসনে নির্বাচন করবেন তারা।
এ নিয়ে দলের নতুন মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা যা বলছেন, সেটা তার নিজের কথার সঙ্গেই সাংঘর্ষিক-‘জাতীয় পার্টি মহাজোটে ২৯টি এবং উন্মুক্তসহ ১৭৪টি আসনে নির্বাচন করবে। মহাজোটে জাতীয় পার্টি যে কটি আসন পেয়েছে, তাতে পার্টির নেতাকর্মীরা সন্তুষ্ট নন। কিন্তু মহাজোটের স্বার্থে আমরা মেনে নিচ্ছি।’
মেনে নিলে আবার উন্মুক্ত প্রার্থী দেওয়ার মানে কি-সেটা অস্পষ্টই থাকল। স্বভাব অনুযায়ী, জাতীয় পার্টি থেকে এর কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বড় কথা, সংসদীয় নির্বাচনে এটি এক আজব রেকর্ড। জোটে থেকে নির্বাচন করলেও দু-তিনটি আসনে উন্মুক্ত প্রার্থী থাকতে পারে কিন্তু এত অধিকসংখ্যক উন্মুক্ত প্রার্থী ঘোষণা করার উদাহরণ পৃথিবীর আর কোনো দেশে আছে বলে মনে হয় না। এ যেন দুই নৌকায় পা দিয়ে চলার মতো, শুধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পক্ষেই যা সম্ভব!      

 
Electronic Paper