ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

‘ভোটে বিএনপি না এলেও দলের কমতি হবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৫:২৬ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০১৮

বিএনপি না এলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪ সালের মতো হবে না বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, এবার ভোটে অংশ নেয়া দলের সংখ্যায় কমতি হবে না।

রোববার দুপুরে মহানগর নাট্যমঞ্চে যুবলীগের এক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এর আয়োজন করা হয়।
কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে বড় দল হিসেবে ভোট পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে। কিন্তু না এলে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যার ঘাটতি হবে না।’
‘বিএনপি নির্বাচনে না এলে নির্বাচন থেমে থাকবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন চলবে।’
বিএনপিকে ভোটে নিতে সরকারের উদ্যোগ থাকবে কি না, এই জিজ্ঞাসা নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, ‘অনেকেই আজ সুন্দর সুন্দর পরামর্শ দেন। ঐক্যের কথা বলেন। তারা বলেন, নির্বাচনে বিএনপিকে আনার কী উদ্যোগ আপনাদের? এ উদ্যোগ কি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির আগে ছিল না?’
‘সেদিন গণভবনের আমন্ত্রণে যদি বেগম জিয়া আসতেন, তাহলে দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে ওয়ার্কিং আন্ডারস্টান্ডিং এর নবতর অধ্যায় সূচিত হতো।’
২০১৩ সালের শেষে দিকে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির সহিংস আন্দোলনের মুখে ২৬ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসনকে ফোন করে গণভবনে আলোচনার আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু খালেদা জিয়া সে আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যান।
বিএনপি ও সমমনাদের ভোট বর্জনের পর সে সময় ১৫৩ আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। আর ভোট হয় বাকি ১৪৭ আসনে। এ নিয়ে ভোটের পর থেকেই আক্রমণের মুখে পড়তে হয় আওয়ামী লীগকে।
কাদের বলেন ‘সংসদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতার অভিযোগ হতো না। এ আপরাধ তাদের (বিএনপি)। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফাঁদ তারাই তৈরি করেছেন।’
‘আশার বিষয় হলো এবার কেউ সেই ফাঁদে (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা) পড়ছে না।’
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের পর নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের বিষয়ে বিএনপির দাবি নিয়েও কথা বলেন কাদের। বলেন, ‘বিএনপি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন চায় না, তারা চায় জাতীয়তাবাদী নির্বাচন কমিশন। বিএনপি স্বাধীন বিচার বিভাগ চায় না, তারা চায় জাতীয়তাবাদী বিচার বিভাগ। তারা চায়, নির্বাচন কমিশন আগেই বিজয়ের গ্যারন্টি তাদের দেয়ার। তারা না জিতলে নির্বাচন কমিশন খারাপ, সরকার খারাপ।’

সমঝোতার সুযোগ আছে?
বিএনপির সঙ্গে কোনো রকম সমঝোতার সুযোগ আদৌ আছে কি না, সে বিষয়েও প্রশ্ন রাখেন কাদের। বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা চাননি, এমন দম্ভোক্তি যারা উচ্চারণ করে, তাদের সঙ্গে ওয়ার্কিং আন্ডারস্টান্ডিং এর কোনো সুযোগ আছে?’
‘যারা ৭ মার্চের ভাষণ স্বীকার করে না, তারা কিসের মুক্তিযোদ্ধা তা আমাদের ভাবতে হবে।’
‘বড় দুর্ভাগা এ দেশ। দেশের মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি নিয়েও বিতর্ক হয়। যে রণধ্বনি মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিজয়ী করেছে, তাকে কেন যেন মনেহয় শুধু আওয়ামী লীগের। আর কেউ রণধ্বনি উচ্চারণ করে না। আমরা মুক্তিযুদ্ধের সোল এজেন্ট হতে চাই না। এটাকে ভাগ করতে চাই না। মুক্তিযুদ্ধকে আমাদের সম্পদ ভাবতে চাই না।’
‘কিন্তু এ দেশে এরা করা, যারা  মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনিকে তাদের শ্লোগান হিসাবে মেনে নেয় না? মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে প্রকাশ্য একটি দলের ভাইস চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) স্বাধীনতার শত্রু বলতে দ্বিধা করে না।’

খুলনায় ‘দুই-তিনটা’ অনিয়ম
১৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটে কিছু অনিয়ম হয়েছে বলে স্বীকার করেন আওয়ামী লীগ নেতা। তবে, তা খুব বেশি নয় বলে দাবি তার।
‘খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পর্যবেক্ষকরা দুই তিনটা অনিয়মের কথা বলেছেন। তাতে আমরা ডিফার করি না। এত বড় একটা নির্বাচনে দুই তিনটা অনিয়ম হতে পারে। কিন্তু এর জন্য গোটা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বিএনপি। খুলনায় আমাদের প্রার্থী ক্লিন ইমেজের, সৎ, সন্ত্রাসে নেই। অপরদিকে বিএনপির প্রার্থীর বিষয়ে সবাই জানে।’

 
Electronic Paper