ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন বন্ধের আশঙ্কা নূরের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ১২:০৬ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০২৩

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন বন্ধের আশঙ্কা নূরের

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর বলেছেন, শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ নয় আরও অনেক দেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এ সরকারের উপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। এমনকি জাতিসংঘে আমাদের শান্তিরক্ষী মিশন বন্ধ হতে পারে। কারণ, নিজ দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা না থাকলে কিভাবে তারা অন্য দেশে শান্তি রক্ষা করবে।

শুক্রবার (২৬ মে) বিকাল ৪ টায় গণঅধিকার পরিষদ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কর্তৃক আয়োজিত দূর্নীতি, দুঃশাসন ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে গণপদযাত্রা শুরুর পূর্বে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

নুর বলেন, সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সৎভাবে ভালো আয়ের সম্মানজনক জায়গা শান্তিরক্ষী মিশন। সেটিও এখন সরকারের কারণে হুমকির মুখে। কারণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিজ দেশের নাগরিকদের গুম,খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকার বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে। গুটিকয়েক দুর্বৃত্ত ও সুবিধাভোগীদের কারণে পুরো প্রতিষ্ঠানের বদনাম হতে পারে না,বাহিনীর গায়ে কলঙ্কের ছাপ লাগতে পারে না। তাই এ বিষয়ে তাদেরকেও ভাবতে হবে। একজন মেয়র গুন্ডার মত বলছে যে, একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম। প্রকারান্তরে সকল বিচারপতিদের হুমকি দিয়েছেন। দুঃখজনক, এখনো এই বিষয়ে বিচারবিভাগের কোন পদক্ষেপে দেখিনি।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুলহক নুর বলেন, "গত ১৪ বছরে এই সরকার বিরোধীদের উপর দলীয় সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লেলিয়ে দমন-পীড়ন করে যেভাবে দেশে একদলীয় শাসন কায়েক করেছে তাতে স্পষ্ট যে, এই সরকারের অধীনে কোনভাবেই সু্ষ্ঠ নির্বাচন সম্ভবপর নয়। এমনকি প্রধানমন্ত্রী যদি পবিত্র কুরআন ছুঁয়ে শপথ করে বলে, তাতেও জনগণ তাকে আর বিশ্বাস করবে না। ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সংসদে দাঁড়িয়ে কোটা বাতিলের কথা বললেও পরবর্তীতে সেই কথা রাখেনি। নির্বাচনের আগে গণভবনে জাতীয় নেতৃবৃন্দকে ডেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেও জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে, বেঈমানি করেছে। কাজেই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যতীত এই সরকারের অধীনে কোনভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর নয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি বিরোধী দলসমূহের চলমান নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিকে আর শক্তিশালী করেছে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বাংলাদেশের সকল বন্ধু প্রতিম রাষ্ট্রসমূহকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার পাশে চাই। সরকারকে বলবো, বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনে সন্ত্রাস, সহিংসতা, হামলা-মামলা, হয়রানি বন্ধ করে অনতিবিলম্ব সংকট উত্তরণে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসুন।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, গাজিপুরের কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। সেখানে পাতানো লড়াই নৌকা বনাম নৌকার মধ্যে হয়েছে। বাকিরা নির্বাচনে গিয়ে এই সরকারের অধীনে নির্বাচনকে বৈধতা দিয়েছে। ১৪ ও ১৮ সালের মত নির্বাচন করতে আসলে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের উপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসবে। ইতোমধ্যে তারা তা আঁচ করতে পেরে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করছে। জনগণকে দলীয় সরকারের অধীনে শুধু ভোট বর্জনই নয়। ভূয়া নির্বাচন ঠেকাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আরেকবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বাকশাল কায়েম করবে। সুতরাং জীবন দিয়ে হলেও চলমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন সফল করতে হবে।

মহানগর উত্তর গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক কর্ণেল মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, বর্তমান যে সিটি নির্বাচন চলছে এতো স্বীকৃত কোন বিরোধী দল নাই। তাই এই নির্বাচনের মাধ্যমে কমিশনের গ্রহণযোগ্য যাচাই করার সুযোগ নাই।

মহানগর দক্ষিণ এর আহবায়ক ডক্টর আব্দুল মালেক ফরাজি বলেন, আজকের ক্ষমতাসীন আওয়ামী দুর্বৃত্ত, লুটেরা সরকার পতনের লক্ষ্যে আপামোর জনতাকে দল মত নির্বিশেষে আপোষহীন গণ আন্দোলন তথা গণ অভ্যুত্থান সংঘটিত করার আহবান জানাই।

মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব আহমাদ ইসমাঈল বন্ধন ও উত্তরের সদস্য সচিব জিয়াউর রহমান এর সঞ্চালনায় পদযাত্রা পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, ফারুক হাসান, বিপ্লব কুমার পোদ্দার, আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, সাদ্দাম হোসেন, সহকারি আহ্বায়ক এডভোকেট নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রহমান, ফাতেমা তাসনিম, বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব প্রমুখ।

পদযাত্রাটি গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে ফকিরাপুল, নাইটিংগেল মোড়, পল্টন, প্রেসক্লাব ঘুরে বিজয় নগর পানিরট্যাংকির মোড়ে এসে শেষ হয়।

 
Electronic Paper