বিএনপির গণসমাবেশ
কুমিল্লায় দ্বন্দ্ব ভুলে মাঠে নেতাকর্মীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১:৪৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৪, ২০২২
কুমিল্লায় সমাবেশ সফল করতে সব গ্রুপিং দ্বন্দ্ব ও ভেদাভেদ ভুলে মাঠে নেমেছেন সর্বস্তরের বিএনপি নেতাকর্মীরা। ২৬ নভেম্বরের সমাবেশে সফল করতে এবং নিজেদের শক্তি-সামর্থ্য জানান দিতে সব গ্রুপের নেতারাই মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে। তবে সম্প্রতি দলীয় নির্দেশনা ভঙ্গ করে যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন, তাদের স্টেজে স্থান দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও গণসমাবেশ সমন্বয় কমিটির দলনেতা বরকত উল্লাহ বুলু। এদিকে নগরীর টাউন হল মাঠ বরাদ্দে ১০টি শর্ত জুড়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। কুমিল্লায় দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ জেলার সভাপতি ও সংসদ-সদস্য হাজি আমিনুর রশিদ ইয়াসিন এবং সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর মধ্যে গ্রুপিং দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় দলের অঙ্গ সংগঠনের মধ্যেও বেশকিছু গ্রুপিং দ্বন্দ্ব চলছিল। কিন্তু ২৬ নভেম্বরের সমাবেশকে ঘিরে সব গ্রুপিং দ্বন্দ্ব ভুলে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনায় এমন ঐক্য বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। এতে সামনের দিনগুলোয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি মাঠে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করবে বলে ধারণা নেতাকর্মীদের। সম্প্রতি দলীয় নির্দেশনা ভঙ্গের কারণে যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন, তারা কর্মী-সমর্থক হিসাবে মাঠে থাকতে পারবেন; কিন্তু তাদের স্টেজে চেয়ার দেওয়া হবে না। মঙ্গলবার রাতে টাউন হলের মাঠ পরিদর্শনে এসে এমন কথাই বলেছেন বরকত উল্লাহ বুলু।
মাঠ বরাদ্দে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ১০ শর্ত : বিএনপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা নগরীর ঐতিহ্যবাহী টাউন হল মাঠে দলটিকে গণসমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার রাতে লিখিত অনুমতিপত্র দেয় জেলা প্রশাসন। তবে এতে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ১০ শর্ত।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, ২৬ নভেম্বর গণসমাবেশে টাউন হল মাঠ ব্যবহারের জন্য জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দলের পক্ষ থেকে আবেদন করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. জসিম উদ্দিন।
রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে টাউন হল মাঠ ব্যবহারের লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়। ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশ করতে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ-সদস্য হাজি আমিনুর রশিদ ইয়াসিন বলেন, যে কোনো মূল্যে কুমিল্লায় স্মরণকালের সেরা সমাবেশ করতে চাই। তবে বহিষ্কৃতদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটাই বাস্তবায়ন করা হবে। রাতে নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ গিয়ে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, এসব করে জনস্রোত ঠেকানো যাবে না।
থাকছে না পরিবহণ ধর্মঘট : কুমিল্লায় বিএনপির সমাবেশে থাকছে না পরিবহণ ধর্মঘট। দেশের বিভিন্ন জেলায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে পরিবহণ ধর্মঘট আহ্বান করা হলেও কুমিল্লায় এমন কোনো সিদ্ধান্তে যাচ্ছেন না পরিবহণ নেতারা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং রেলসড়কে জনভোগান্তি মাথায় রেখে এমন সিদ্ধান্ত নেয়নি জেলার পরিবহণ নেতারা।
এতে একদিকে বিএনপি সমাবেশ ভালোভাবে সফল করতে পারবে ও জনসাধারণেরও ভোগান্তি লাঘব হবে। বুধবার বিকালে এমনটাই জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ কবির আহমেদ। তিনি বলেন, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আমরা কোনো ধর্মঘট করব না, তারা (বিএনপি) এজ ওয়েল সমাবেশ করুক। এতে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।