ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

‘সমাজতন্ত্রেই নারীমুক্তি’

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ২:১১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০১৮

ইলা মিত্রকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন ইন্দ্রানী চক্রবর্তী। সেই তথ্যচিত্রে ধারণকৃত ইলা মিত্রের বক্তব্য থেকেই এই সাক্ষাৎকার-

কেমন ছিল আপনার বেড়ে ওঠা?
ছোটবেলায় ছিলাম খুব ডানপিটে। মাঠে-ঘাটে খেলাধুলা করে বেড়িয়েছি। ১৯৩৬ সাল থেকে ৪০ সাল পর্যন্ত আমি কলেজের ভেতরে এবং বাইরে প্রায় সব রকম খেলায় যোগ দিয়েছি। যেমন বেডমিন্টন, বাস্কেট বল, টেনিকোয়েট, সাঁতার, এথলেটিক্স ইত্যাদি। বিশেষ করে এথলেটিক্সে ছিলাম বাংলাদেশে মধ্যে সেরা। ১৯৪০ সালে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় অলিম্পিকে যোগ দেওয়ার জন্য।  

শ্বশুরবাড়ি কেমন ছিল?
শ্বশুরবাড়িটা ছিল একটা জেলখানার মতো, চারদিকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। আমি যাওয়া মাত্রই শাশুড়ি বললেন, আমি যেন দিনের বেলায় স্বামীর সঙ্গে কথা না বলি। যারা পুরুষ কর্মচারী তাদের সঙ্গে তো নয়-ই। এমনই রক্ষণশীল পরিবার ছিল আমার শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু পরে আস্তে আস্তে তা অনেকখানি ঠিক হয়ে যায়।

নাচোলের বিদ্রোহ কীভাবে সংঘটিত হয়েছিল?
৫ জানুয়ারি ১৯৫০ সাল নাচোলের অফিসার ইনচার্জসহ পাঁচ-ছয়জন পুলিশ স্বশস্ত্র হয়ে গ্রামের দিকে আগাতে থাকে। নিয়মানুযায়ী তারা দামামা বাজিয়ে সব সাঁওতালদের জড় করে। পুলিশ এত সাঁওতাল ঘেরাও দেখে গুলি করতে আরম্ভ করে। তখনই এরা তীর-ধুনুক নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে এবং কয়েকজন পুলিশকে মেরে ফেলে। তাদের বন্দুক ছিনিয়ে নেয়। তাদের লাশও মাটিতে পুঁতে দেয়।

কলকাতার জীবন সম্পর্কে বলুন-
মূলত সুস্থ হওয়ার পর কলকাতায় স্থায়ী হই এবং সেখানকার সব গণতান্ত্রিক আনন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাই। কিন্তু জীবিকার প্রয়োজনে ১৯৫৮ সালে সিটি সাউথ কলেজ, এখন যার নাম হয়েছে শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজ, সেখানে অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত হই। ১৯৬২ সালে কমিউনিস্ট পার্টি আমাকে মানিকতলা কেন্দ্র থেকে এমএলএর জন্য দাঁড়াতে বলে। ওইবারসহ আমি চারবার এমএলএ নির্বাচিত হই।  

নারীমুক্তি কীভাবে সম্ভব?
একমাত্র সমাজতন্ত্রেই নারীমুক্তি আসতে পারে। যেমন বলছি, সমাজে বিপ্লব না হলে আধুনিক সমাজ হতে পারে না। যেমন গ্রামের চাষি তার গোলামী, ভূমিস্বত্ব সবকিছু দিয়ে ভূস্বামীকে খাজনা দেয়, তার বিরুদ্ধে বিপ্লবই তো গণতান্ত্রিক বিপ্লব। একইভাবে সমাজে নারীদের নিচুমাপের মানুষ ভেবে বিবাহের ক্ষেত্রে যে খাজনা দেওয়া হয়, তারই নাম পণপ্রথা। এ খাজনা দেওয়ার প্রথাকে যদি না ভাঙতে পারি, তবে আমরা আধুনিক সমাজ গড়ে তুলতে পারব না। নারীমুক্তিও আসবে না।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper