ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

‘জীবনে লক্ষ্য থামতে দিও না’

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ২:৩০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০১৮

জীবনের শেষ অর্থাৎ ৮৪তম জন্মদিন নিয়ে এ পি জে আবদুল কালামের মন্তব্য-‘সূর্যের ৮৪তম কক্ষপথে পা রাখলাম আমি।’ এ জন্মদিনে দিল্লির রাজাজি মার্গে ১০ নম্বর বাড়িতে ওয়ানইন্ডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হলেন কালাম। খোলা কাগজের পাঠকের জন্য তার চুম্বক অংশ-

‘জীবনে লক্ষ্য থামতে দিও না’
জীবনের শেষ অর্থাৎ ৮৪তম জন্মদিন নিয়ে এ পিজে আবদুল কালামের মন্তব্য-‘সূর্যের ৮৪তম কক্ষপথে রাখলাম আমি।’ এ জন্মদিনে দিল্লির রাজাজি মার্গে ১০ নম্বর বাড়িতে ওয়ানইন্ডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হলেন কালাম। খোলা কাগজের পাঠকের জন্য তার চুম্বক অংশ-

জীবনে না পাওয়ার কোনো আক্ষেপ আছে?
ভারতীয় বায়ুসেনায় (বিমানবাহিনী) যোগ দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হওয়া আমার জীবনের একটা আক্ষেপ। এ ছাড়া তার চেয়ে বড় আরেকটি আক্ষেপ আছে আমার, সেটা হলো রাষ্ট্রপতি ভবনে সৌরশক্তি প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠার কাজ শেষ করতে পারিনি।
আমার রাষ্ট্রপতি সময়কালের শেষদিকে আমার ৫০০০ মেগাওয়াটের একটি সৌরশক্তি প্রকল্প রাষ্ট্রপতি ভবনে তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিলাম। আমি সব জায়গা থেকে অনুমতি পেয়ে গিয়েছিলাম এমনকি আর্থিক কোনো সমস্যাও ছিল না। কিন্তু যখন প্রস্তাবটি পরিবেশ দপ্তরে গেল তখন তারা ঐতিহাসিক মোগল গার্ডেনের প্রসঙ্গ তুলে ধরল।
কর্তৃপক্ষ ভয় পেল এর ফলে মোগল গার্ডেনের জাঁকজমক কিছুটা ধাক্কা খেতে পারে। আমি যখন কর্তৃপক্ষকে প্রত্যয়জনক উত্তর দিলাম, ততক্ষণে আমার রাষ্ট্রপতি জীবনকাল শেষ হয়ে গিয়েছিল রাষ্ট্রপতি ভবনে। আমি আমার লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি। এখনো তার জন্য আক্ষেপ আছে।

অবিবাহিত জীবন... এর পেছনে কারণটা কী?
(হাসি), এ প্রশ্নটা ৫০ বছরেরও বেশি পুরনো। ভারতে এমনকি ভারতের বাইরেও এ প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি আমি। আমি আগেও উত্তর দিয়েছি তাদের যে আমি যৌথ পরিবার থেকে এসেছি। আমার ভাইয়ের নাতনি রয়েছে। এমন দারুণ পরিবারে একজন বিয়ে করল কি করল না তা খুব একটা বড় বিষয় না। তা ছাড়া জীবনে কখনো অর্ধাঙ্গিনীর প্রয়োজনে অনুভব করিনি।

ভারতের বিশাল যুবশক্তি নিয়ে আপনার ভাবনা...
আমি এখন পর্যন্ত ১৬ লাখেরও বেশি ভরতীয় যুবক-যুবতীদের সঙ্গে দেখা করেছি, যাদের কাঁধে আগামী দিনের ভারতের দায়িত্ব রয়েছে। আমি মনে করি, ভারতীয় যুব সমাজ কর্মঠ এবং কম পক্ষপাতমূলক, সবচেয়ে বড় কথা তাদের মধ্যে একটা ইচ্ছা আছে সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও উন্নত ভারতে বসবাস করার। এখন ভারতীয় যুবসমাজ বিজ্ঞাসা করে, ভারতের পরিবর্তন এবং উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে আমরা কী করতে পারি। এটা আমার কাছে অত্যন্ত অর্থবহ ও উল্লেখযোগ্য।

২০২০ সালের ভারত কেমন হবে?
আমরা এ প্রস্তাব লোকসভায় এবং ক্যাবিনেটে রেখে ছিলাম যে আমাদের ইন্ডিয়া ভিশন ২০২০-এর প্রয়োজন আছে। ২০২০ সালের মধ্যে ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করতে লোকসভায় প্রশ্নোত্তর-তর্ক চলুক এবং দেখুন কীভাবে আমরা ২০২০ সালের মধ্যে আমাদের লক্ষপূরণ করি।
প্রথম প্রাধান্য পওয়া উচিত রুরাল এরিয়া বা গ্রামাঞ্চলে শহুরে সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া। দ্বিতীয়, আমাদের কৃষকরা ২৫০ মিলিয়ন টন খাদ্য উৎপাদন করে, অথচ আমরা মূল্য সংযোজন করি না। মূল্য সংযোজন আর্থিক দিককে সচল করতে পারে এবং রপ্তানি ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
এ ক্ষুদ্র শিল্প ও মাঝারি শিল্প শহর ও গ্রামাঞ্চলে লাখ লাখ রয়েছে। তার একটা সংসদীয় দৃষ্টিকোণ প্রয়োজন, যেমন কলাকৌশল, কম সুদে ঋণ, এনপিএ নীতিতে ছাড় ইত্যাদি। আমাদের উচিত এ ধরনের শিল্পর জন্য বৃদ্ধিভিত্তিক বিনিয়োগ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রদান। যাতে উৎপাদন বাড়ে এবং রপ্তানি ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

আপনার জীবনের অর্জন কেমন?
প্রত্যেক দিন, প্রত্যেক মুহূর্ত আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক বছরের ১ জানুয়ারি আমি সারা বছরের আমার লক্ষ্য স্থির করে নিই। আর সেই হিসেবেই কাজ শুরু করি। আমার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমি যা পরিকল্পনা করেছিলাম তার ৬০-৭০ শতাংশই অর্জন করেছি। দেখতেই পাচ্ছ, আমার লক্ষ্য কখনো থেমে থাকে না।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper