প্রতিবাদ মুখর পৃথিবী
মুনিরা আহমেদ
বিবিধ ডেস্ক
🕐 ২:১০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
বিশ্বজুড়ে গণবিক্ষোভে ফুসছে বঞ্চিত মানুষ। হংকং থেকে চিলি, ইরান, ইরাক থেকে লেবানন, কাতালোনিয়া, বলিভিয়া, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া- হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদ জানাতে, বিক্ষোভে অংশ নিতে রাস্তায় নেমেছে। তাদের দাবি, বিক্ষোভের ধরন এবং কারণ হয়তো ছিল ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু হাজার হাজার মাইল দূরের এসব দেশের বিক্ষোভকারীরা কিন্তু একে অন্যকে অনুপ্রাণিত করেছেন। এসব বিক্ষোভে অনেক ক্ষেত্রেই কোনো নেতা ছিলেন না। কিছু কিছু বিক্ষোভকারী তাদের দেশে বিক্ষোভের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।
৩২ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক মুনিরা আহমেদ হঠাৎ করেই বিশ্ব মিডিয়ায় এখন আলোচিত নাম। সেটার সঙ্গে আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্পৃক্ত। ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে লাখ লাখ নারীর প্রতিবাদ আন্দোলনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক মুনিরার ছবি দেখা যায় সবার হাতে হাতে। সেই থেকে বিশ্ব মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত এই বাংলাদেশি নারী। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রতীকী প্রতিবাদী মুখে পরিণত হন তিনি।
তার মুখচ্ছবি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা দাঁড়িয়েছেন রাজপথে। স্লোগানে উত্তাল আন্দোলনে মুনিরার মুখ যেন ‘প্রতিবাদের প্রতীক’। মুনিরা থাকেন নিউইয়র্ক শহরের কুইন্সে। পেশায় একজন ফ্রিল্যান্সার। তিনি নিজেও ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নেমেছেন। এ বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক গণবিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে লাখ লাখ নারীর সে প্রতিবাদ আন্দোলনে মুনিরার ছবি দেখা যায় সবার হাতে হাতে। রীতিমতো আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনে মুনিরার মুখচ্ছবি প্ল্যাকার্ড আকারে হাতে তুলে রাজপথে দাঁড়িয়েছেন লাখো বিক্ষোভকারী।
মিডিয়ার চোখ স্বভাবতই তার ওপর পড়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে এসেছে তার কথা। বলেছেন কীভাবে তার ছবি প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছে। বলেছেন বিক্ষোভে তার সম্পৃক্ততার কথাও। মুনিরার বলেন, আমি একজন মার্কিনি এবং মুসলিম। এ দুটি বিষয় নিয়ে আমি খুবই গর্বিত। বিক্ষোভকারীদের ব্যবহৃত মুনিরার আলোচিত সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন পতাকার ডিজাইনে মাথায় হিজাব পরেছেন মুনিরা। তার চোখ-মুখে ফুটে উঠে এক তেজস্বিনী নারী প্রতীক। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শহর তার মুখচ্ছবি ব্যবহার করা পোস্টারে ঢেকে যায়।
দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’ ও ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’সহ আরও অনেক সংবাদপত্রের পুরো পৃষ্ঠাজুড়ে ছাপা হয় মুনিরার এই ছবি। মুনিরা আহমেদ আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ছবিটি যে বিষয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে তা সম্মানের বিষয়। এতে বিরোধী কিছু নেই। তিনি আরও বলেন, ছবিটি বলছে, ‘আপনার মতো আমিও একজন আমেরিকান’। মজার ব্যাপার হলো, ছবিটি কিন্তু এখনকার তোলা নয়। এটি প্রায় ১০ বছর আগে তুলেন মুনিরার বন্ধু রিদওয়ান আদহামি। ওয়াশিংটন থেকে নিউইয়র্কে ফেরার পর মুনিরা আহমেদ ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আপনার মতো আমিও একজন মার্কিনি।