ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চাঁদে সাঈদীর মুখ

বিবিধ ডেস্ক
🕐 ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০১৯

মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির রায় হওয়ার পর জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চাঁদে দেখার গুজব ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। সাঈদীকে চাঁদে দেখতে পাওয়ার ‘আজগুবি গল্পটি’ শুরুতে কিছু লোককে বিশ্বাস করাতে সমর্থ হয়েছিল একটি কুচক্রী মহল।

সেই কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অশিক্ষিত লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে থানায় হামলা করে, সরকারি কার্যালয় পুড়িয়ে, পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দিয়ে ব্যাপক নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিল একটি চক্র। এই গল্প ফেঁদে চালানো নজিরবিহীন সহিংসতায় সে সময় ৬৭ জন মানুষ নিহত হয়েছিল।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির রায় হয় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর। ওই দিনই সহিংসতায় জামায়াত কর্মীসহ সারা দেশে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়। পরের কয়েক দিন দেশে ব্যাপকভাবে নৈরাজ্য ছড়িয়ে পড়ে। রায়ের পরদিন শুক্রবার নিহত হয় তিনজন ও শনিবার ছয়জন। তারপর রোববার থেকে শুরু হয় জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল। হরতালের আগের দিন রাতে দেশজুড়ে মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে, গভীর রাতে ফোন দিয়ে সাঈদীর মুখ চাঁদে দেখা গেছে বলে প্রচার করা হয়।

মসজিদের মাইক ব্যবহার করে বলা হয়, ‘চাঁদের গায়ে সাঈদীর মুখ দেখা যাচ্ছে। তার মানে, তিনি ইমানদার লোক। তাকে বাঁচানো সবার ইমানি দায়িত্ব।’ ফলে ভোররাতে চাঁদ দেখতে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসে কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ। তাদের উত্তেজিত করে হামলা চালানো হয় থানাসহ সরকারি দফতরে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছিল বগুড়ায়। সেখানে পাঁচটি থানা ও ছয়টি পুলিশ ফাঁড়িতে একযোগে হামলা করা হয়। কয়েকটি ফাঁড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রাণ নিয়ে পালান পুলিশ সদস্যরা। নন্দিগ্রাম উপজেলায় উপজেলা পরিষদ ভবনের ১৬টি অফিস, থানা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। ওই দিন সারা দেশে নিহত হয় ২২ জন। সব মিলিয়ে পাঁচ দিনে ৬৭ জন নিহত হয়।

অবশ্য জামায়াত কেন্দ্রীয়ভাবে কখনো সাঈদীকে চাঁদে দেখা যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেনি। জামায়াতের ঢাকা মহানগরীর এক নেতা বলেন, সাঈদী সাহেবকে চাঁদে দেখার ঘটনা উদ্ভট ও কাল্পনিক। কে বা কারা এ প্রচার চালিয়েছে তা আমাদের জানা নেই। সাঈদী সাহেব নিজেও এ ঘটনাকে উদ্ভট ও কাল্পনিক বলে মনে করেন। এ নিয়ে যে নজিরবিহীন সহিংসতা হয়েছিল তা এখনো ভোলেনি বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলার মানুষ। তবে ওই ঘটনায় দায়ের করা শত শত মামলার একটিরও বিচার হয়নি। আসামিদের অনেকেই জামিনে বেরিয়ে গেছে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper