ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক্যাসিনোর সুলুক সন্ধান

খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ১২:৫৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯

ক্যাসিনো এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। রাজধানী ঢাকায় এর বিশালকার অস্তিত্বের খবর জেনে চমকে গেছেন সবাই। তবে আমাদের দেশে এটিকে ভিন্ন চোখে দেখা হলেও বিশ্বের অনেক দেশেই এটি শুধু বৈধই নয়, চলছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। তাছাড়া ক্যাসিনো বিষয়টাও আজকের নয়, হাজার বছর আগেও এটি ছিল বহাল তবিয়তে। সময়ের ব্যবধানে এটিতে যোগ হচ্ছে নানা জৌলুস

যেভাবে এলো নাম

ক্যাসিনো কথাটা এসেছে মূলত ইতালি থেকে। ইতালীয় শব্দরূপ কাসা, এর অর্থ বাড়ি; ছোট ভিলা, গ্রীষ্মকালীন ঘর কিংবা সামাজিক ক্লাবকে বোঝানো হতো। ১৯ শতকের দিকে ক্যাসিনো বলতে এমন সব ভবনকে বোঝানো হতো যেখানে আনন্দদায়ক কাজকর্ম হতো। নগরের সামাজিক অনুষ্ঠান যেখানে নাচ, গান, জুয়া ও ক্রীড়ার ব্যবস্থা থাকত এসব ভবনে। আধুনিক দিনে ইতালিতে বিভিন্ন অর্থে তারা ক্যাসিনো শব্দটি ব্যবহার করে। তবে বর্তমানে জুয়ার আসর বোঝাতে ক্যাসিনো ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অবশ্য জার্মান এবং স্প্যানিশ ভাষায় ক্যাসিনো বা কাসিনো দ্বারা অফিসার্স মেস বোঝানো হয়। মোদ্দাকথা, ক্যাসিনো বলতে বোঝায় যেখানে জুয়া, মদ, নারী রাতভর উন্মুক্ত থাকে আগত অতিথিদের জন্য।

 

প্রথম ক্যাসিনো
পৃথিবীর অনেক দেশেই জুয়া খেলার ব্যবসা রয়েছে। তবে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই, ভারতীয় উপমহাদেশেই পৃথিবীর প্রথম ক্যাসিনো স্থাপিত হয়। অনেক আগে থেকেই উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে জুয়া খেলা হতো অনিয়ন্ত্রিতভাবে। এই অনিয়ন্ত্রিত জুয়াকে একটি নির্দিষ্ট গ-ির মধ্যে আনার জন্য সম্রাটদের ব্যবস্থাপনায় তখন ক্যাসিনো স্থাপন করা হয়। ইতিহাসবিদরা মনে করেন, জুয়া থেকে লভ্যাংশ ও শুল্ক নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রায় দুই হাজার বছর আগে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্যাসিনো স্থাপন করা হয়। তবে এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ও স্থানের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেন ইতিহাসবিদরা। প্রাচীন ভারতীয় অর্থশাস্ত্রবিদ কাউতিলিয়া এ বিষয়ে কিছু তথ্য দিয়ে গেছেন। তার লেখায় উঠে এসেছে ক্যাসিনো স্থাপনের কিছু কারণ।

পাশাপাশি ভারতীয় উপমহাদেশে ক্যাসিনো স্থাপনের কয়েকটি চিত্র লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন তার অর্থশাস্ত্র বইয়ে। এরমধ্যে আছে জুয়াকে নিয়ন্ত্রণের মধ্য নিয়ে আসা এবং জুয়া খেলায় সাম্যতা নিশ্চিত করার কথা। তার লেখায় জুয়া খেলা থেকে শুল্ক পাওয়ারও কিছু চিত্র উঠে এসেছে। সে সময়ের ক্যাসিনোগুলোয় সম্রাটরা বিভিন্ন জুয়ার নানা উপাদানের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। তখন জুয়া খেলে নিঃস্ব হওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটত। বিষয়টি তখনো রাষ্ট্রের নজর এড়ায়নি। তাই জুয়া খেলে যেন কেউ নিঃস্ব বা সর্বস্বান্ত না হয় সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হতো। কাউতিলিয়া লিখেছেন, স্থাপিত ক্যাসিনোতে সরকার বিভিন্ন জুয়ার নানা উপাদানের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। ওই সময় জুয়ার প্রতিটি আসরে বিনিয়োগ করা মোট অর্থ থেকে ৫ শতাংশ ও জুয়ায় বিজয়ী ব্যক্তির মোট প্রাপ্ত অর্থের ৫ শতাংশ সরকারি কোষাগারে নিয়ে নেওয়ার রেওয়াজ খুব কঠোরভাবে মেনে চলা হতো।


আনুষ্ঠানিক পথচলা
জুয়া খেলার ক্যাসিনো জনপ্রিয় করেছে আমেরিকানরাই। আইনি বৈধতা পেয়ে প্রথম ক্যাসিনো প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৩১ সালে, নেভাদায়। ক্যাসিনোর নাম স্যালুন্স। এটি তৈরি হয়েছিল পর্যটকদের জন্য। এখানে তারা জুয়ার সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, ড্রিংকস করার সুযোগ পেতেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটি সান ফ্রান্সিসকো, নিউ অরলিন্স, সেন্ট লুইস, শিকাগো শহরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে; ২০ শতকের দিকে ক্যাসিনো আমেরিকায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।

তবে ইউরোপের ইতিহাসে ইতালিতে প্রথম ১৬৩৮ সালে ভেনিস শহরে রিডোট্ট নামে একটি ক্যাসিনো তৈরি করা হয়েছিল। সে সময়কার সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের পরামর্শে এটি তৈরি করা হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন কার্নিভালে জুয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা। পরে সামাজিক অবক্ষয়ের কথা ভেবে ১৭৭৪ সালে সেটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ক্যাসিনোতে গ্রাহকরা টাকা দিয়ে নিজের পছন্দ মতো বিভিন্ন খেলার সুযোগ পান। তবে যে যে বিষয়ে পারদর্শী তিনি সেটিই খেলেন। বিশেষ করে ব্যাকজ্যাক, ভিডিও পকার, ব্রাক্যারেট, ক্রাপ, রুলেট ইত্যাদি খেলে থাকেন।


জুয়ার রাজধানী
বেশ কয়েক দশক ধরেই জুয়ার রাজধানী হিসেবে লাস ভেগাস ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়। কিন্তু ধীরে ধীরে ক্যাসিনো সংস্কৃতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চালু হতে শুরু করে। বর্তমানে জুয়ার রাজধানী হিসেবে লাস ভেগাসের নামটি চলে গেছে দুই নম্বরে। এই তালিকায় এখন শীর্ষে অবস্থান করছে চীন শাসিত ম্যাকাও। ম্যাকাও এখন চীনের আওতায় থাকা একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল।

১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এটি পর্তুগিজ কলোনি ছিল। ২০১২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সে বছর লাস ভেগাসের চেয়ে অন্তত পাঁচগুণ বেশি আয় করে ম্যাকাওয়ের ক্যাসিনোগুলো। বর্তমানে ম্যাকাওকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জুয়ার শহর হিসেবে ডাকা হয়। চীনের ম্যাকাও উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত ক্যাসিনোটি আয়তনের দিক দিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম। এখানে জুয়ার জন্য বরাদ্দ ৫ লাখ ৪৫ হাজার বর্গফুটেরও বেশি জায়গা। ৩ হাজার গেমিং মেশিন, কার্ড গেমস এবং রুলেটের জন্য ৮৭০টি টেবিল রয়েছে। প্রতিটি খেলার স্পট ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি। আগত অতিথিদের কাছে অত্যন্ত পছন্দের এই ক্যাসিনোকে পাঁচতারকা হোটেলও বলা চলে। অতিথিরা চারটি সুইমিং পুলে বিরতি নিতে পারেন। ভেনিসের নৌযান গন্ডোলার মতো রাইডও নিতে পারেন। এ ছাড়াও দুর্দান্ত ডাইনিং, রেগুলার ফাস্টফুড এবং ভেনেশিয়ান ম্যাকাও রেস্তোরাঁর জনপ্রিয় সব খাবার তো পাবেনই। অতিথিদের সন্তুষ্ট করার জন্য নানা সুযোগ সুবিধা নিয়ে ৩ হাজার কক্ষের হোটেল আছে।

এই ক্যাসিনোটি ভিতর এবং বাহির দুইদিক থেকেই দেখতে অপরূপ। ক্যাসিনোর মার্বেল পাথরে তৈরি লবি আর নান্দনিক আলোকসজ্জা সত্যিই অসাধারণ। চীনে জুয়া খেলা বৈধ না হলেও ম্যাকাওয়ে এটি বৈধ। ম্যাকাও নিয়ে আরেকটি মজার তথ্য হচ্ছে, বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তকমা পেতে যাচ্ছে এ দেশটি। প্রথম স্থান হারাতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যেও প্রাকৃতিক গ্যাসসমৃদ্ধ দেশ কাতার। আগামীতে কাতারকে টপকে শীর্ষ ধনীর আসনে বসতে যাচ্ছে চীনের ছিটমহল ম্যাকাও। বৈশ্বিক জুয়াড়িদের আঁতুরঘর হিসেবে পরিচিত ম্যাকাও ২০২০ সালের মধ্যে তার ধনীর অবস্থান পাকাপোক্ত করে ফেলবে। আন্তর্জাতিক মুদ্র তহবিল (আইএমএফ) এমন পূর্বাভাস দিয়েছে।

আইএমএফ বলছে, ২০০১ সালে ম্যাকাও’র মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৩৪ হাজার ৫০০ ডলার। এরপর থেকে তা তিনগুণ হারে বাড়ছে। ২০২৩ সালে অঞ্চলটিতে জিডিপির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৮১ ডলার। একই সময়ে কাতারের জিডিপির পরিমাণ হবে ১ লাখ ৫৮ হাজার ১১৭ ডলার। ম্যাকাও অঞ্চলের আয়ের উৎস জুয়া ও পর্যটক। জুয়ার বৈধতা থাকার কারণেই সেখানে জিডিপি বাড়ছে। জিডিপির অর্ধেকেরও বেশি জুয়া খাত থেকেই আসে।


কারা বেশি জুয়া খেলে
মার্ক ডি গ্রাফিত হচ্ছেন জুয়াশিল্পের অন্যতম বড় গবেষক। তার হিসাবে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি জুয়া খেলে যুক্তরাজ্যের মানুষ। এরপরই আছে অস্ট্রেলিয়া। বাকি দেশগুলোর মানুষ হচ্ছে যথাক্রমে চীন ও ম্যাকাও, ভারত, আয়ারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইতালি। বিশ্বে সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো কোম্পানি হচ্ছে লাস ভেগাস স্যান্ডস। ১৯৮৮ সালে নেভাদায় এর প্রতিষ্ঠা। ২০১৮ সালে এই কোম্পানির বার্ষিক আয় ছিল ১৩.৮ বিলিয়ন ডলার। এরপরই আছে যুক্তরাষ্ট্রের এমজিএম রিসোর্ট (১১.৮ বিলিয়ন ডলার)। পরের তিন প্রতিষ্ঠান হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সিজার এন্টারটেইনমেন্ট (আয় ৮.৪ বিলিয়ন ডলার), হংকংয়ের গ্যালাক্সি এন্টারটেইনমেন্ট (৭ বিলিয়ন ডলার) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইন রিসোর্ট (৬.৭ বিলিয়ন ডলার)। শীর্ষ দশে একটি মালয়েশিয়ান কোম্পানিও আছে, জেনটিং। তাদের আয় ১.৯ বিলিয়ন ডলার।


চলন্ত ক্যাসিনো
পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ক্যাসিনোটির কোনো ঠিকানা নেই। কারণ এটি একটি চলমান ট্যাক্সি। লন্ডনের গ্রসভেনর ক্যাসিনোর একটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ এই ট্যাক্সি ক্যাসিনো। ট্যাক্সির পেছনের অংশে এই ক্যাসিনোটি সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে আছে ছোট্ট একটি জুয়ার টেবিল, আছে একটি বারও, আর আছে একটি টেলিভিশন যেখানে বিভিন্ন খেলা চালু থাকে এবং এসব খেলার ওপর বাজি ধরেন জুয়াড়িরা।

জুয়াড়িদের মূত্রত্যাগ

ক্যাসিনো মানেই টাকার ছড়াছড়ি। জুয়া খেলার সময় জুয়াড়িরা এতটাই মগ্ন থাকেন যে, তারা সাধারণ নাওয়া-খাওয়া ভুলে যান। জুয়ার আসক্তি এমনই তীব্র যে, কেউ কেউ ক্যাসিনোর মেঝেতেই মূত্রত্যাগ করে ফেলেন। আবার এমনও অনেকে আছেন জুয়া খেলতে বসে বয়স্কদের ডায়াপারও ব্যবহার করেন, যেন মূত্র কিংবা মলত্যাগ করলে তা দুর্গন্ধ না ছড়ায় এবং অন্যদের বিরক্তির কারণ না হয়।

২০০৭ সালে ইন্ডিয়ানায় এক জুয়াড়ি একটি অভিযোগ দায়ের করেন এ ব্যাপারে। তিনি একটি স্লট মেশিনে কয়েন দিয়ে খেলতে গিয়ে এর সামনের আসনটিতে বসে বোকা বনে যান। কারণ তিনি যে চেয়ারটিতে বসেছিলেন, সেখানে তার আগের খেলোয়াড় বেশ কয়েক দফা মূত্রত্যাগ করেছিলেন। ২০১৫ সালে আমেরিকার নিউজার্সিতে এক জুয়াড়ি স্লট মেশিনের যে ছিদ্র দিয়ে কয়েন ফুকান, সেই ছিদ্রেই মূত্রত্যাগ করে মেশিন নষ্ট করে ফেলেছিলেন!


সেলুলয়েডের ফিতায়
১৯৬৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য সিনসিনাটি কিড’-ই সম্ভবত ক্যাসিনো কিংবা জুয়াকে উপজীব্য করে নির্মিত প্রথম সিনেমা। একজন কমবয়সী জুয়া খেলোয়াড়ের নাম কামানোর গল্প নিয়ে ছবিটি তৈরি হয়েছে। নরম্যান জিউইসন পরিচালিত ছবিটির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্টিভ ম্যাকুইন, অ্যান-মারগ্রেট, অ্যাডওয়ার্ড জি রবিনসন এবং কার্ল মালডেন।

ক্যাসিনো
১৯৯৫ সালে নির্মাণ করা হয় ‘ক্যাসিনো’ নামের চলচ্চিত্র। লাস ভেগাসের দুই জুয়াড়ির গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ওই সিনেমা। একজন জুয়ার জগতে সম্মানের সঙ্গে নাম কামাতে চায়, আরেকজন অতিরিক্ত লোভের বশবর্তী হয়ে নানা অপকর্ম করে। মার্টিন স্করসিসের এই ছবিতে অভিনয় করেছেন রবার্ট ডি নিরো, শ্যারন স্টোন, জো পেসকি, জেমস উডসের মতো বিখ্যাত সব তারকা অভিনেতা।
ওশান’স ইলেভেন
ওশান’স সিরিজের সিনেমাগুলো ক্যাসিনো-সিনেমাপ্রেমীদের প্রিয়। তার মাঝে ওশান’স ইলেভেনকে বলা হয়ে থাকে সিরিজের সেরা। ২০০১ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে একদল ডাকাতের একই সময়ে লাস ভেগাসের তিনটি ক্যাসিনোতে হামলার পরিকল্পনা করতে দেখা যায়। স্টিভেন সডারবার্গ পরিচালিত এই ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন জর্জ ক্লুনি, ব্র্যাড পিট, জুলিয়া রবার্টস এবং ম্যাট ডামন।

টুয়েনটি ওয়ান
২০০৮ সালের এই ছবিটি এমআইটির ছয় ছাত্রের গল্প নিয়ে তৈরি। তারা কার্ড খেলায় এতই পটু যে তাদের কেউ হারাতে পারে না। এ কারণে তারা লাস ভেগাসে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।

ওনিং মাহাওনি
২০০৩ সালের এই ছবিতে এক ব্যাংক ম্যানেজারকে দেখানো হয়েছে যে একজন জুয়াড়ি। এক কাস্টমারের হাই ভ্যালুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য পেয়ে সেই অর্থের অপব্যবহার করতে দেখা যায় তাকে। ছবিটি নির্মাণ করেছেন রিচার্ড কিউইটনিওস্কি।


হঠাৎ ঢাকায়
আয়ের উৎস হিসেবে দেশের অনেক ফুটবল ক্লাবে ‘হাউজি’ খেলা শুরু হয় আশির দশকের দিকে। তবে নব্বইয়ের দশকে জুয়ার আসরও জমে ওঠে। গত কয়েক বছরে তা আরও ভয়াবহ মাত্রা পায়। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের অনেক ক্লাবেই গড়ে ওঠে ক্যাসিনো। জাতীয় দৈনিকে ক্যাসিনো নিয়ে প্রথম উল্লে­খযোগ্য প্রতিবেদন হয় ২০১৩ সালে।

২০১৭ সালে আরেকটি দৈনিকে এ ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে তুলে ধরা হয় ক্লাবভিত্তিক রেস্টুরেন্টগুলোতেও পশ্চিমা ধাঁচের অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা জমে ওঠার তথ্য। বলা হয়, প্রশিক্ষিত জুয়াড়ি আনা হচ্ছে বিদেশ থেকে, তাদের কাজে লাগিয়ে ক্লাবগুলোতে প্রতি রাতে বসানো হচ্ছে জুয়ার আসর। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দু-একটি ক্লাবে অভিযান চালালেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি বরং ক্যাসিনোর বিস্তার আরও বেড়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতাদের কঠোর সমালোচনা করেন।

তারপর যুবলীগ নেতারা ৬০টি জুয়ার আখড়া বা ক্যাসিনো চালাচ্ছেন বলে কয়েকটি সংবাদপত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপরই ক্যাসিনোতে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার, মদসহ আরও অনেককিছু।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper