সৌদি নারীর এগিয়ে চলা
২০১৯-ফ্যাশন বিপ্লব
রোকেয়া ডেস্ক
🕐 ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০১৯
ফ্যাশন যেন আজকাল নেশাদ্রব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরেও এসব থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখতেন সৌদি নারীরা। তবে কিছু দিন ধরে সৌদিতে নারীরা অনেক কিছুতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে আগেই হাত পড়েছে তাদের। পা পড়েছে সিনেমা হলে। পেয়েছে মাঠে গিয়ে খেলা দেখার স্বাধীনতা।
পরিবর্তনের সৌদি আরবে এবার আরও এক বদল আনলেন প্রিন্সেস নৌরা বিনতে ফয়সাল আল-সৌদ। বছরের শুরুর দিকে সৌদিতে আয়োজন করা হয়েছিল একটি ফ্যাশন উইকের। সেটি ছিল শুধু নারীদের জন্য। সৌদি আরবের মতো রক্ষণশীল দেশে এ ধরনের কোনো অনুষ্ঠান এই প্রথম।
তবে হেঁটেছেন মূলত, বিদেশি মডেলরাই। সৌদি নারীরা ছিলেন দর্শক সারিতে। এ উদ্যোগের পেছনে ছিলেন সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতার প্রপৌত্রী প্রিন্সেস নৌরাই। সৌদি আরবে নারীদের পোশাক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উৎসাহ দেওয়ার বিষয়টি এর আগে কখনই সেভাবে গুরুত্ব পায়নি। কিন্তু নৌরা আরব ফ্যাশন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট পদে আসার পর ছবিটা বদলাচ্ছে। জাপানের এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন নৌরা। সেখানে থাকার সময় থেকেই ফ্যাশন দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি।
২০১৯-নারী রাষ্ট্রদূত
‘আমি আল্লাহর ইচ্ছায় আমার দেশের জন্য, তার শাসকদের জন্য এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করব। সেই পথ থেকে আমি কিছুতেই সরে আসব না।’ সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত রাজকুমারী রিমা বিনতে বান্দার আল সৌদের টুইটের অংশ বিশেষ। ভাইকে সরিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত হয়েছেন এই রাজকুমারী রিমা। সৌদি আরবের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী রাষ্ট্রদূত।
তার রাষ্ট্রদূত নির্বাচিত হওয়াকে অনেকেই সৌদি আরবে নারীদের ক্ষমতায়নের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এক নারী রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ সাধারণ সৌদি নারীদের জীবনে স্বাধীন নারীসত্তার বিজয় উল্লাসে এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা হবে বলে বিশ্লেষকদের মত।
২০১৮-গাড়ি চালানোর অনুমতি
২৪ জুন ২০১৮। এ বিশেষ দিনটিতো সৌদি নারীরা তাদের শিকল ভেঙে বেরিয়ে আসে। এদিনে সৌদি আরবের নারীদের গাড়ি চালানোর অধিকার আদায়ের ৩০ বছরের সংগ্রামের সফল পরিসমাপ্তি ঘটে।
৩০ বছরের নিষেধাজ্ঞাকে পেছনে ফেলে সেদিন থেকে গাড়ির চালকের আসনে বসেছেন রক্ষণশীল সৌদি আরবের নারীরা। এ দীর্ঘ আন্দোলনকে একটি লড়াই বললেও বোধ করি ভুল হবে না।
এ লড়াই ছিল সৌদি আরবের নারীদের অধিকার আদায়ের লড়াই, নিজেদের মর্যাদা রক্ষার লড়াই, অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার লড়াই। তাই বছরব্যাপী আলোচনায় ছিলেন সৌদি নারীরা।
নারীদের এ লড়াইয়ে প্রায় পুরোটা সময় নারীদের সহযাত্রী ছিলেন শুধু নারীরাই। তবে ২০১৭-এর সেপ্টেম্বরে বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ প্রথম ইসলামিক আইন মেনে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে বলে একটি আদেশপত্র স্বাক্ষর করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় এবার সৌদি আরবের নারীদের জাতীয় ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ২৪ জুনের আগ পর্যন্ত সৌদি আরব ছিল পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যেখানে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি ছিল না। তাই নারীরা একে দেখছেন তাদের বিজয় হিসেবে।