ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দেশে দেশে রোজার বৈচিত্র্য

মিসরের ‘ফানুস রমজান’

বিবিধ ডেস্ক
🕐 ৩:৫৭ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০১৯

রমজানে বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও মসজিদগুলোতে আলোকসজ্জা দেখা যায়। কিন্তু মিসর এদিক দিয়ে কিছুটা ভিন্ন। এখানকার বাড়িঘর, ভবন ও দোকানগুলোর প্রবেশমুখে ঝুলিয়ে রাখা হয় রঙিন সব ফানুস। নানান রং ও বৈচিত্র্যে বানানো এই ফানুসগুলো এক বিশেষ ধরনের লণ্ঠন। রমজান মাসে চারদিকে ঝোলানো এই ফানুসগুলোর আলোকসজ্জায় পুরো মিসর এক অপূর্ব রূপ ধারণ করে। তাই বলেই হয়তো বা মিসরের রমজান মাস ‘ফানুস রমজান’ নামেও পরিচিত।

মিসরে রমজান উপলক্ষে এই ফানুস ঝোলানোর ঐতিহ্য প্রায় কয়েকশ বছর পুরনো। ৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে মিসরীয়রা খলিফা আল মুয়িজ লিদ্বীনকে অভিবাদন জানানোর জন্য এ রকম আলোকসজ্জার আয়োজন করেছিল। এই আলোকসজ্জা খলিফার এতটাই পছন্দ হয়, তিনি এর কারিগরদের নির্দেশ দেন বাণিজ্যিকভাবে এগুলো তৈরি করে সারা মিসরে প্রসার ঘটাতে। আর মিসরের বাসিন্দাদের নির্দেশ দেন যেন তারা সবাই নিজেদের বাড়িঘরের সামনে এই ফানুস ঝুলায়। এরপর থেকেই মূলত, এই ফানুস ঝুলানোর সংস্কৃতি শুরু হয়।

রমজান শুরুর আগেই মিসরের হাটবাজারে ছোট-বড় নানা ধরনের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানিরা। উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ করা যায় এসব লণ্ঠনে। মনের আনন্দে এসব লণ্ঠন কিনে সবাই দোকান-মাঠ-মিল-কারখানা, বাসা-বাড়ি সাজিয়ে ফেলে। এ সময় শিশুদেরও বায়না থাকে নিত্যনতুন রঙিন লণ্ঠন কেনার জন্য। হাতে লণ্ঠন নিয়ে তারা ঘুরে বেড়ায়, গান গায় আর বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছ থেকে উপহার সামগ্রী সংগ্রহ করে।

বর্তমানে যুগের পরিবর্তনের ফলে কাঠের বদলে লোহা, তামা ও অন্যান্য ধাতব দ্রব্য, কাচ ও স্বচ্ছ প্লাস্টিক শিটের ব্যবহার ঘটছে আধুনিক লণ্ঠনের নির্মাণশৈলীতে।

ফাতেমীয় আমলে রমজান মাসে রাস্তা আলোকিত করার কথাও প্রচলিত আছে। মিসরের সর্বত্র লণ্ঠনের বাজার গড়ে উঠলেও ঐতিহ্যগতভাবে স্থানীয় ইসলামিক জাদুঘরের নিকটবর্তী বাব জিউলিয়াহ নামক স্থানটি লণ্ঠনের বিশাল বাজার বলে বিখ্যাত। ১১ শতকে নির্মিত সিটিগেটসংলগ্ন এই লণ্ঠন বাজারে রমজান মাসে দেশি-বিদেশি বহু পর্যটকের সমাগম ঘটে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper