ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দেশে দেশে রোজার বৈচিত্র্য

কামান দাগিয়ে ইফতার

বিবিধ ডেস্ক
🕐 ৩:৫০ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০১৯

রমজান মাসের পুরনো ঐতিহ্য ও ইতিহাস খুঁজতে গেলে উঠে আসে ‘ইফতার ক্যানন’ কিংবা ‘ইফতারের কামান’-এর কথা। এই কামান থেকে গোলা ছোড়া হতো সূর্যাস্তের সময়। এই কামানই রোজদারদের রোজা ভাঙার সংকেত প্রদান করে।

কিংবদন্তি বলে, কামানের গোলা ছোড়ার মাধ্যমে ইফতারের সময় ঘোষণার ঐহিত্য প্রচলিত সেই মামলুক আমল থেকে। এটা সেই সময় যখন মিসরে ইসলামের শাসন চলছিল। ইফতারের সময় কামানের ব্যবহার ১৪৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে অতি সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়। যখন ঘড়ি বা অন্যান্য প্রযুক্তি ছিল না, তখন মানুষকে ইফতারের সময়ের জানান দিতে এটাই ছিল একমাত্র পন্থা।

ইতিহাসবিদের মতে, মিসরে ১০ম শতকে ফাতিমিদ খলিফা ইফতারের সময় ঘোষণার জন্য কায়রোর মুকাতাম পাহাড়ে একটি কামান বসানোর নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন জাতির মধ্যে এই ঐতিহ্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রথম রোজা থেকেই ইফতারের সময়ের জানান দিতে প্রস্তুত থাকে ‘ইফতারের কামান’।

এই ঐতিহ্য শুরুর পেছনে একটি মজার ঘটনা প্রচলিত আছে। মিসরবাসীর ধারণা অষ্টাদশ ও উনিশ শতকে মিসর ও সুদানের স্বঘোষিত খতিব মোহাম্মদ আলী পাশা মিসরীয় সেনাবাহিনীর জন্য কিছু কামান সংগ্রহ করেন। এক দিন কাকতালীয়ভাবে ইফতারের সময় শুরুর সঙ্গে সঙ্গে একটি কামান থেকে গোলা বিস্ফোরিত হয়। যদিও বিষয়টি ছিল দুর্ঘটনাবশত। তথাপি মিসরবাসী ধরে নেয় খতিব মোহাম্মদ আলীর আদেশে কামান দাগিয়ে ইফতারের সময় ঘোষণা করা হয়েছে। সেই থেকে অদ্যবধি ইফতারের সময় কামান দাগানো হয়, যা স্বচক্ষে বা টেলিভিশনে উপভোগ করেন মিসরবাসী।

এ ছাড়া আরব বিশ্বের বহু দেশে বন্দুকের বদলে আজও কামান দাগিয়ে রমজানের আগমন ও ইফতারের সময় জানানো হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে ছয়টি কামানের প্রতিটি দুবার গোলা নিক্ষেপ করে রমজানের আগমন ও বিদায় ঘোষণা করে। আর প্রতিদিন ইফতারের আগে প্রতিটি কামান একটি করে গোলা নিক্ষেপ করে ইফতারের সময় নির্দেশ করে। দুবাইর মদিনাত জুমেরা এ ধরনের কামান ব্যবহারের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছে। যা দেখতে অনেক পর্যটন ভিড় জমায়।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper