প্রতিবাদের বিশ্ব ‘সেলিব্রেটি’
ডিম বালক উইল কনোলিভ
বিবিধ ডেস্ক
🕐 ১২:৪৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০১৯
অভিবাসী মুসলমানদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যকারী অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিংয়ের টাক মাথায় ডিম ভেঙে আলোচিত তরুণ উইল কনোলিভ। আলোচিত ১৭ বছরের এই কিশোরের এমন ঘটনায় সবাই মুগ্ধ। গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তি ও আইনি সহায়তার জন্য অনলাইনে তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়। মাত্র দুই হাজার ডলার সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ইতোমধ্যে তার জন্য জমা পড়েছে প্রায় ৪২ হাজার ডলার।
ক্রাউডফান্ডিং সাইট ‘গো ফান্ড মি’র মাধ্যমে সংগৃহীত সেই বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৩৫ লাখ টাকার মতো। তবে সবাইকে হতবাক করে দিয়ে উইল কনোলিভ তহবিল সংগ্রহের উদ্যোক্তাকে জানিয়েছেন, এই অর্থের বড় অংশ ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের দিয়ে দেবেন তিনি।
গত ১৫ মার্চে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ডানপন্থী শেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ব্রেনটন টারেন্টের গুলিতে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন অন্তত ৪৮ জন। নৃশংস এ হামলার কারণ হিসেবে দেশটির ইমিগ্রেন্টকে দায়ী করে বিতর্কিত মন্তব্য করেন অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফ্রেসার অ্যানিং। সেই মন্তব্যের সময় অ্যানিংয়ের মাথায় ডিম ফাটিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ১৭ বছরের অস্ট্রেলিয়ান তরুণ উইল কনোলিভ।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যানিং কথা বলার সময় তার পেছনে এই তরুণ দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ করেই তার বাঁ হাতে মোবাইল ধরে ডান হাতে অ্যানিংয়ের মাথায় একটি ডিম ফাটিয়ে দেন। এর একটু আগে সে তার মোবাইলে ভিডিও করা শুরু করে। ডিম ছোড়ার পরও নির্বিকার ভঙ্গিতে ভিডিও করে যাচ্ছিল উইল কনোলিভ। হতবাক অ্যানিং পেছনে ঘুরে তরুণের মুখে চড় মারতে শুরু করলে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় পাশে থাকা লোকজন ওই তরুণকে মাটিতে চেপে ধরে, অন্য একজন অ্যানিংকে সরিয়ে নেয়।
উইল কনোলিভকে আটক করা হলেও কোনো অভিযোগ না এনেই পরবর্তীতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মুক্তির পর টুইটারে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় উইল বলেছেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে ওই মুহূর্তটিতে আমি গর্বিত অনুভব করেছি। আপনাদের বলতে চাই, মুসলমানরা সন্ত্রাসী নয় এবং সন্ত্রাসবাদের কোনো ধর্ম নেই। মুসলমানদের যারা সন্ত্রাসী সম্প্রদায় মনে করে, তাদের মাথা অ্যানিংয়ের মতোই শূন্য।’
এদিকে উইল কনোলিভ এখন ‘ডিম বালক’ নামেই সারা বিশ্বে পরিচিত। ওই ঘটনার পর ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে তার ফলোয়ার সংখ্যা হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ার সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে।