মুক্তিযুদ্ধের যত জাদুঘর
সামরিক জাদুঘর
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১:৩৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০১৯
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাফল্য এবং মুক্তিযুদ্ধে সামরিক বাহিনীর কর্মকা- ও বিশ্বে বিভিন্ন মিশনের সফলতাসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রের সংগ্রহ নিয়ে সামরিক জাদুঘরটি সজ্জিত। ১৯৮৭ সালে ঢাকার মিরপুর সেনানিবাসের প্রবেশদ্বারে প্রথম সামরিক জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সামরিক জাদুঘরের গুরুত্ব এবং দর্শকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ১৯৯৯ সালে জাদুঘরটি স্থায়ীভাবে ঢাকার বিজয় সরণিতে স্থানান্তর করা হয়।
সামরিক জাদুঘরের গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ট্যাংক পিটি-৭৬। রাশিয়ার তৈরি এই ট্যাংকটি পানিতেও ভেসে চলতে সক্ষম। এই ট্যাংকটি ১৯৭১-এর স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকা থেকে বাংলাদেশ বাহিনী কর্তৃক পাকিস্তান দখলদার-বাহিনীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। সামরিক জাদুঘরের মাঠের উত্তর ও পূর্বদিক দিয়ে সুসজ্জিতভাবে আরও ১৬টি ট্যাংক ও কামান প্রদর্শিত হচ্ছে। এগুলো খোলা আকাশের নিচে কেবল পাকা ভিটে করে রাখা হয়েছে। মাঠের উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রদর্শিত হচ্ছে মোটর লঞ্চ ‘এম এল সূর্যোদয়’। জাপান সরকার এটি অনুদান হিসেবে দেয়।
মূল জাদুঘর ভবনের দোতলায় রয়েছে ৮টি গ্যালারি। প্রথম গ্যালারিতে হাতকুঠার, তীর, ধনুকসহ আদিম যুগের অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। দ্বিতীয় গ্যালারিতে ডিবিবিএল গান, এসবিবিএল গান, বিশেষ ব্যক্তিদের ব্যবহৃত হাতিয়ারসহ যুদ্ধাস্ত্র। তৃতীয় গ্যালারিতে এলএমজি, এসএমজিসহ মাঝারি অস্ত্র। চতুর্থ গ্যালারিতে মর্টার, স্প্যালো, এইচএমজিসহ ভারী অস্ত্র সর্বসাধারণের জন্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। পঞ্চম গ্যালারিতে প্রদর্শিত হচ্ছে সশস্ত্র বাহিনীর শীত ও গ্রীষ্মকালীন পোশাক-পরিচ্ছদ, র্যাংক, ব্যাজ, ফিতা ইত্যাদি। ষষ্ঠ গ্যালারিতে প্রদর্শিত হচ্ছে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ দলিল, সেক্টর কমান্ডারদের পোর্ট্রেট, ব্যবহার্য বস্তু ইত্যাদি। সপ্তম গ্যালারির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিজয় গ্যালারি’। এতে সশস্ত্র বাহিনীর যেসব ব্যক্তি মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছেন সেসব বীরশ্রেষ্ঠদের পোর্ট্রেট ও সংক্ষিপ্ত জীবনী প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অষ্টম গ্যালারিতে রয়েছে সাবেক সব সেনাপ্রধানের তৈলচিত্র, বীরশ্রেষ্ঠ-বীরপ্রতীকদের নামের তালিকা ইত্যাদি। জাদুঘর ভবনের নিচতলায় প্রদর্শিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী যে গাড়িটি নিয়ে বিভিন্ন যুদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করেন সেই জিপ গাড়িটি। জাদুঘরের আরেক আকর্ষণ হলো পাক সেনাবাহিনী থেকে উদ্ধারকৃত স্টাফ কার মার্সিডিজ বেঞ্জ ও সিলিন্ডার ২০০০ সি সি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তৎকালীন প্রধান, পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট লে. জে. জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এটি ব্যবহার করতেন।
যেভাবে যাবেন : ঢাকা শহরের বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের পশ্চিম পাশে সামরিক জাদুঘরটি অবস্থিত। জাদুঘরে প্রবেশের জন্য কোনো টিকিট লাগে না।