ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

১৬৭০০০ জনে বেঁচেছিলেন ৭৭০০০

রফিকুল ইসলাম মন্টু
🕐 ৬:৫০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০১৮

১৯৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে একটি দ্বীপ জেলা ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা। তজুমদ্দিন ও মনপুরা নিয়ে গঠিত ছিল তৎকালীন ওই উপজেলাটি। মনপুরা ছিল একটি মাত্র ইউনিয়ন। তজুমদ্দিনে মেঘনাতীরে বেড়িবাঁধ থাকলেও মনপুরা ছিল বেড়িবাঁধহীন।

উইকিপিডিয়ার তথ্য সূত্র বলছে, গোটা তজুমদ্দিন উপজেলায় ১ লাখ ৬৭ হাজার মানুষের মধ্যে বেঁচেছিলেন মাত্র ৭৭ হাজার। প্রায় ৪৬ শতাংশ মানুষ প্রাণ হারান। তবে পৃথকভাবে মনপুরা অংশে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। বেড়িবাঁধ না থাকায় দ্বীপটির পূর্বদিক থেকে প্রবল বেগে পানি আসে এবং উত্তর-পশ্চিম থেকে আসা স্রোত সে পানির সঙ্গে সবকিছু ভাসিয়ে নেয়।
তৎকালীন কিশোর মনোয়ার রহমান হারুন তার রচিত ‘হারিকেন ১২ নভেম্বর ১৯৭০ এবং আমি’ বইয়ে উল্লেখ করেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরদিন সকালে সূর্য উঠলেও আমরা আর বাড়িঘর চিনতে পারছি না। বাড়িঘর, গাছপালা সবই মাটির সঙ্গে মিশে যায়। আশপাশের অনেক মানুষকে হারিয়েছিল। লেখক ঘূর্ণিঝড়ের দুদিন আগে মনপুরার সাকুচিয়ায় বাবার কৃষি খামারে বেড়াতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়েন। তার বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়, মনপুরায় সে সময়ে ছিল না কোনো ধরনের বেড়িবাঁধ। বেড়িবাঁধ থাকলে হয়তো অনেক মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষা হতো। অন্যদিকে মানুষের আশ্রয়ের কোনো ব্যবস্থাও ছিল না। সব মানুষ ভেসেই গিয়েছিল। যারা গাছের ডালের নাগাল পেয়েছে, তারা ঝড়ের সঙ্গে লড়াই করে টিকেছিলেন।
তৎকালীন থানা সদর তজুমদ্দিনেও প্রবল ধাক্কা দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড়। বেড়িবাঁধ উপচে এবং কোনো কোনো স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে। প্রবল জোয়ারের তোড়ে বাড়িঘর ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তজুমদ্দিন উপজেলা সদরের বাসিন্দা ধীরেন্দ্র চন্দ্র শীল (মাস্টার) তখন ছিলেন ৩৫ বছরের যুবক। তখন থেকেই শিক্ষকতা পেশায়। তিনি বলেন, ‘এরকম জল আমরা আর কখনো দেখিনি।’ গোটা গ্রামে একমাত্র তাদের ঘরটাই দাঁড়িয়েছিল।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper