পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যে হুমকি ইটভাটা
মোহাম্মদ অংকন
🕐 ৯:৩৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৫, ২০১৮
আধুনিক সভ্যতা গড়ার অন্যতম উপাদান হলো ইট। যখনই ইট আবিষ্কার করা হলো, তখনই বিভিন্ন স্থাপত্যশৈলীর দেখা মিলতে লাগল। ধীরে ধীরে ইট আবাসিক কাজে ব্যবহার হতে লাগল। এখন অধিকাংশ বাড়িঘরই ইট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। ইটের চাহিদা প্রচুর। এই চাহিদার জোগান দিতে ইট প্রস্তুতকারকরা ইট তৈরিতে মানছে না কোনো নিয়মনীতি। দেশে বিভিন্ন আইন, তদারকি ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও ইটভাটার দৌরাত্ম্য কমছে না।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের জরিপ অনুযায়ী, দেশে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি ইটভাটা রয়েছে। উদ্বেগের বিষয়, এর ৯০ শতাংশই জ্বালানি ব্যবহার, ইটভাটা স্থাপন ও পরিবেশসংক্রান্ত বিধান মানছে না। তারা ক্রমেই বন উজাড় করছে, কৃষি জমির ক্ষতি করছে, দেশের ভূ-প্রকৃতি ধ্বংস করে মাটি পুড়িয়ে ইট তৈরি করছে। এতে ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় প্রকৃতি-পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার পথে। ক্রমেই মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে এবং চাষাবাদের জমিজমা ও গাছপালা কমছে। এমনকি ইটভাটার আশপাশের গাছপালা মরে যাচ্ছে। চাষিরা ফুল-ফলের বাগান করতে পারছে না। গাছের পাতা শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। কৃষি জমিতে ফলন কম হচ্ছে।
বর্তমানে দেশের প্রতিটি জেলায় ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটায় কয়লার পাশাপাশি কাঠও পোড়ানো হচ্ছে। অথচ কাঠ পোড়ানো নিষিদ্ধ। ফসলি জমিতে লোকালয়ে এসব ইটভাটার চিমনির উচ্চতা কোনোটিরই ৬০ ফুটের বেশি নয়। অথচ চিমনি থাকতে হবে ১২০ ফুট লম্বা। গবেষণায় দেখা গেছে, ইটভাটা মাটি, পানি এবং জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি করছে। ইটভাটার ধোঁয়ায় যে কার্বন মনোঅক্সাইড থাকে তা বাতাসকে যেমন দূষিত করে তেমনি গাছপালা এবং ফসলের ক্ষতি করে। ইটভাটার বর্জ্যে যে সালফার থাকে তা নদী বা জলাশয়কে দূষিত করে। এর ফলে আশপাশের নদী থেকে মাছসহ সব ধরনের জলজ প্রাণী এবং উদ্ভিদ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ইটভাটার আগুনের প্রচণ্ড তাপে ইটভাটার আশপাশের ফসলি জমি নিষ্ফলা হয়ে যাচ্ছে।
তাই ইটভাটার আগ্রাসন থেকে পরিবেশ, কৃষি ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা পাক, এই প্রত্যাশা করি। ইটের বিকল্প ভাবা হোক।
ঢাকা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228