ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গ্রামের ঐতিহ্য মাটির ঘর

জয়নুল আবেদীন স্বপন
🕐 ১০:২১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২০

পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য বহন করে মাটির ঘর। গরিবের ‘এসি’ বলে মাটির ঘরকে। মাটির ঘর তীব্র শীতে থাকে বেশ উষ্ণ, গরমে শীতল। পরিবেশবান্ধব টেকসই ও মজবুত শান্তির নীড় মাটির ঘর হাজার বছরের ধারক বাহক। দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও মাটির ঘরে বসবাস করে। মাটির ঘরে বসবাসকারী মানুষগুলো মাটির মতোই সহজ সরল ও শান্ত। তাদের প্রশান্তির ঠিকানা মাটির ঘর। মাটির ঘরে থাকার আরাম ও ঘ্রাণ অন্য ঘরে পাওয়া যাবে না। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ মাটির মায়ায় নুহাশপল্লীর চারদিকের দেয়াল মাটি দিয়ে তৈরি করেন। থাকার ঘরের দেয়ালে দিয়েছেন লাল মাটির প্রলেপ।

নিরাপত্তার জন্য ভূমিকম্প নিরোধ মাটির ঘর অল্প খরচে দেড় থেকে দু’মাসে নির্মাণ করা যায়। এক সময় বিত্তশালীরাও উঁচু জায়গায় বড় বড় মাটির বাড়ি নির্মাণ করতেন। এঁটেল মাটির দৃষ্টিনন্দন দোতলা ঘরও মাঝে মাঝে দেখা যায়। যার সামনে বিশাল উঠোন। মাটির দেয়ালে বিভিন্ন ডিজাইনের আলপনা আঁকা। আগে সৌখিনরা কারিগর দিয়ে কারুকাজ করাতেন। তুষের সঙ্গে এঁটেল মাটির ছানা তৈরি করে কিছুদিন রেখে দিতেন। পরে অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে দেয়ালের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কারিগররা কাজ করতেন। বর্তমানে নতুন করে কেউ আর মাটির ঘর নির্মাণ করে না। কালের বিবর্তনে অট্টালিকার কাছে হার মানছে মাটির ঘর। হাজার হাজার শিল্পকারখানা হওয়ার কারণে গাজীপুরে শত বছরের পুরনো মাটির ঘর ভেঙে নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন। বিলাসবহুল বাড়ি বানানোর প্রতিযোগিতায় ঝুঁকছে মানুষ। আধুনিকতার ছোঁয়ায় পুরনো ঐতিহ্যের মাটির ঘর হারিয়ে যাচ্ছে। সবুজ শ্যামল ছায়াঘেরা মাটির বাড়ি কিছুদিন পর খুঁজে পাওয়া যাবে না। গ্রামের ঐতিহ্য মাটির ঘর রক্ষা করতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। ইটের তৈরি ঘর বানিয়ে ঘনবসতি গড়ে উঠলেও শিল্পকারখানার বিষাক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্যে দম বন্ধ আসে। পরিবেশ দূষণের কারণে নষ্ট হচ্ছে থাকার আরামদায়ক পরিবেশ।


বারতোপা, শ্রীপুর, গাজীপুর

 

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper