ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শিশুর মানসিক বিকাশে ব্যাঘাত

মালিহা রাহমান
🕐 ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২০

শিশুরা আগামী দিনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। শিশুদের শিক্ষার প্রধান মাধ্যম বিদ্যালয়। আর বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক শিশুদের নানা উপায়ে পরিচর্যার মাধ্যমে তাদের সৃজনশীলতা ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে থাকেন। শ্রেণিকক্ষে চিত্তাকর্ষক পাঠদান পদ্ধতির কারণে শিশুদের স্কুলপ্রীতি জাগে, পাঠে মনোযোগী হয়। প্রতিটি শিশু ভীষণ কৌতূহলী, মেধাবী ও প্রতিভাসম্পন্ন হয়। আনন্দের মাঝেই তারা শিখতে পছন্দ করে। বন্ধুদের সঙ্গে শিক্ষা সফর, কবিতা, গান, অভিনয়সহ আরও অনেক ধরনের প্রতিযোগিতা কিংবা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ হয়। খেলার ছলে সহপাঠীদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখে নেয় শিশুরা। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মেলামেশায় তারা ভাষার দক্ষতা, সামাজিকতা ও আত্মবিশ্বাস, শৃঙ্খলা, সদাচরণ ও নিয়মানুবর্তিতা শেখে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মার্চ মাস থেকে বন্ধ আছে সকল ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ঘরবন্দি হয়ে রয়েছে লাখো শিশু। গ্রামে হয়ত অনেক শিশুই ঘরের বাইরে কিংবা বাড়ির উঠোনে খেলার সুযোগ পাচ্ছে, কিন্তু শহরের শিশুদের জীবন চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি হয়ে আছে দীর্ঘ পাঁচ মাসের বেশি সময়। যে সময়ে শিশুরা বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলায় মেতে ওঠা, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, আনন্দ-উচ্ছ্বাস, প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার কথা, ঠিক সেই সময় তাদের সময় কাটছে টিভি দেখে কিংবা স্মার্টফোনে গেম খেলে। এতে শিশুরা আসক্ত হয়ে পড়ছে ভার্চুয়াল জগতে। শিশুরা কথা বলার সঙ্গী পাচ্ছে না। তাদের মধ্যে কথা বলার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। ঘরে বসে থেকে তারা একাকিত্বে ভুগছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তাদের বুদ্ধির বিকাশ। ফলে অদূর ভবিষ্যতে তাদের অনেকের বিভিন্ন মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শিশুরা এখন পুরোটা সময় তার বাবা-মায়ের সঙ্গে কাটায়। আবার বাবা-মায়ের চাকরির কারণে হয়ত বাবা-মাও সন্তানের একাকিত্বে সঙ্গ দিতে পারছেন না। পরিবার হলো শাশ্বত বিদ্যালয় যেখানে বাবা-মা তাদের সন্তানকে সর্বাত্মক পরিচর্যা করে থাকেন। বাবা-মাকে অবশ্যই বাড়তি নজর দিতে হবে, তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখতে হবে। আবার অন্যদিকে করোনার কারণে অনেক বাবা-মা চাকরিচ্যুত হয়েছেন। যার ফলে তাদের শিশুর বাড়তি যতœ নিতে ব্যাঘাত ঘটছে। পুষ্টিকর খাবার কিংবা চিকিৎসা সেবায় অনেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সুস্থ-সবল দেহ ও মন গঠন অস্বাভাবিকভাবে হচ্ছে। অসুস্থ এই দেশ হয়তো একদিন সুস্থ হবে, খুলে দেওয়া হবে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু যে সকল শিশুর মানসিক বিকাশ চরম বিপর্যস্ত হচ্ছে তারা সবাই নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারবে তো? তাদের যে ক্ষতি হয়ে গেল তা পোষাবে তো! জীবনে গোল্ডেন পিরিয়ড স্কুলের সময়টা তারা উপভোগ করতে চায়, তারা হাসতে চায়, গাইতে চায়, মুক্ত ডানা মেলে উড়তে চায়, তারা ঘরবন্দি থাকতে চায় না।

মালিহা রাহমান
শিক্ষার্থী, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper