উপকূলীয় অঞ্চলসমূহে একটা সময় গোলপাতার ঘরের বহুল প্রচলন ছিল, তবে সময় বদলে গেছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অধিকাংশ এলাকায় ঘরের ছাউনিতে এখন আর আগের মতো গোলপাতার ব্যবহার হয়না। তাই চাহিদাও কমেছে আগের যেকোন সময়ের চেয়ে। দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় অঞ্চলে বিভিন্ন সময় নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব থেকে বাঁচতে গোলপাতার ব্যবহার ছেড়ে তারা এখন ঝুঁকছেন টিনের দিকে।

জানা যায়, সুন্দরবন থেকে বনজ দ্রব্য আহরণে কড়াকড়ি ও চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় মূলত গোলপাতা আহরণে আগ্রহ হারাচ্ছেন বাওয়ালীরা। গত কয়েক বছরের ন্যায় চলতি আহরণ মৌসুমেও গোলপাতা আহরণে বাওয়ালীদের বিএলসি বা অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর ছিল বন বিভাগ। ফলে বাওয়ালীদের পাশাপাশি এর সঙ্গে অন্য শ্রমজীবীরা কিছুটা দেরিতে পারমিট সংগ্রহ করে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের খুলনা রেঞ্জের কূপ থেকে বনে অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।

বাওয়ালীরা জানান, অনেকেই বংশ পরম্পরায় গোলপাতা আহরণে জীবিকা নির্বাহ করেন। আবার অনেকে প্রায় দু’যুগ ধরে রয়েছেন পেশা আঁকড়ে। তবে ক্রমান্বয়ে বনজ সম্পদ আহরণে বন বিভাগের কঠোরতা বাড়ছে। একদিকে চাহিদা হ্রাস অন্যদিকে সুন্দরবন রক্ষার্থে বনজ দ্রব্য আহরণ কমানোর সিদ্ধান্তে উভয় সংকটে আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা।

খুলনা রেঞ্জের রেঞ্জ সহযোগী শাহানশা নওশাদ জানান, সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের খুলনা রেঞ্জের ১টি ক‚পে গোলপাতা সংগ্রহ করতে ১৪২টি বিএলসির অনুকূলে বাওয়ালীরা প্রথম দফায় ৭০ হাজার ৬৪৪ মণ গোলপাতা সংগ্রহের অনুমতি নিয়েছে। এছাড়া আহরণ চলবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত।

সহকারী বন সংরক্ষক মো. আবু সালেহ বলেন, নির্বিঘ্নে গোলপাতা আহরণে বন বিভাগের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে।
সুন্দরবন (পশ্চিম) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বশিরুল আল-মামুন জানান, বন রক্ষার্থে সুন্দরবনের ওপর থেকে চাপ কমানোর জন্য বনজ দ্রব্য আহরণ সীমিত করা হয়েছে। তাছাড়া প্রতিটি স্টেশন ও কূপে নিয়মিত তদারকিপূর্বক অনুমতি দেওয়া হয়েছে।