‘বন্দুকযুদ্ধে’ ছয় জেলায় নিহত ৬
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ৪:০৮ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০১৮
টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফেনী, বরিশাল, দিনাজপুর ও যশোরে গত শনিবার রাত থেকে রোববার ভোরের মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ছয়জন নিহত হয়েছেন। আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই পরিমল দাস বলেন, নিহত বিপ্লব ছিলেন শহরের শীর্ষ মাদক চোরাকারবারি। তবে তার বিরুদ্ধে কতটি মামলা রয়েছে সে তথ্য তিনি দিতে পারেননি।
পরিমল বলেন, মাসকান্দা এলাকায় কয়েকজন মাদক কারবারি একটি চালানের ভাগাভাগি করছে খবর পেয়ে ডিবির একটি দল গনশার মোড়ে যায়। মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পিছু হটলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মাদক স¤্রাট বিপ্লবকে আটক করা হয়। গুলিবিদ্ধ বিপ্লবকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এসআই পরিমল আরও বলেন, এই অভিযানে রাশেদুল ও কাওছার নামে দুই পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন, তারা পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাস্থল থেকে ২০০ গ্রাম হেরোইন, ২০০ ইয়াবা, তিনটি গুলির খোসা ও দুটি চাকু উদ্ধার করার কথাও বলেছেন তিনি।
ফেনী
ছাগলনাইয়া থানার ওসি এম মোর্শেদ বলছেন, নিহত আলমগীর হোসেন ভূইয়া একজন চিহ্নিত মাদক চোরাকারবারি। তার বিরুদ্ধে ফেনী সদর, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া থানায় ৯টি মামলা রয়েছে।
এই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, ছাগলনাইয়ার পশ্চিম পাঠান গড় এলাকায় মাদকের একটি বড় চালান যাওয়ার খবরে পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযানে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। পুলিশও আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি থামার পর সেখানে আলমগীরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলমগীরকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ অভিযানেও দেলোয়ার হোসেন ও মতিয়ার রহমান নামে পুলিশের দুই এএসআই আহত হন এবং তাদের জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে ওসির ভাষ্য।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি বন্দুক, তিন রাউন্ড গুলি, এক হাজার ইয়াবা ও শতাধিক বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করেছে।
এর আগে শুক্রবার রাতে সোনাগাজীতে জসিম উদ্দিন (৩৫) নামে সন্দেহভাজন এক জলদস্যু অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে নিয়ে অভিযানে যায় পুলিশ। সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চর সাহাভিকারী গ্রামের হাজীপাড়া এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ডাকাত দলের গোলাগুলির মধ্যে জসিম নিহত হয় বলে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের ভাষ্য।
তিনি বলেন, জেলা পুলিশের খাতায় জসিমের নাম রয়েছে শীর্ষ জলদস্যু ও আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য হিসেবে। তার বাড়ি উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চর সাহাভিকারী এলাকায়।
বরিশাল
বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সহকারী কমিশনার নাছির মল্লিক বলেন, উপজেলার শায়েস্তাবাদ এলাকায় ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় সেখানে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। শনিবার রাতে পুলিশের একটি টহল দলের সঙ্গে ডাকাতদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ডিবি পুলিশের টহল দল বটতলা এলাকায় গেলে একদল ডাকাত পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি করে। এক পর্যায়ে ডাকাতরা পিছু হটলে ঘটনাস্থলে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।
এ অভিযানে ডিবি পুলিশের এক এসআই ও দুই কনস্টেবল আহত হন এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে নাছির মল্লিকের ভাষ্য।
তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, একটি দা ও একটি চাপাতি উদ্ধার করেছে।
দিনাজপুর
দিনাজপুরের বিরল থানার ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, সেখানে বন্দুকযুদ্ধে নিহত বাবুর বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালানসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৯টি মামলা রয়েছে থানায়।
ওসি বলেন, রাত সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশের একটি দল দিনাজপুর-বিরল সড়কের মুরাদপুর নার্সারি এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে যায়। সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকা মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যাওয়ার পর সেখানে তল্লাশি চালিয়ে বাবুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বাবুকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি টুটু বোরের রাইফেল, একটি তলোয়ার, পাঁচটি ককটেল ও ১৯৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করার কথা জানিয়েছেন ওসি।
যশোর
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি কেএম আজমল হুদা বলছেন, ছুটিপুর সড়কের রুদ্রপুর গ্রামে মাদক চোরাকারবারিদের দুটি দলের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে রোববার ভোরে পুলিশের একটি দল সেখানে যায়।
গুলিবিদ্ধ একটি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি, তবে সে যে একজন মাদক ব্যবসায়ী তা নিশ্চিত করেছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। এ সময় সেখানে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে যশোর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে ৪০০ ইয়াবা, একটি ওয়ানশুটার গান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয় বলে জানান ওসি।
পুলিশ নিহতের নাম-পরিচয় জানাতে না পারলেও তিনি মাদক চোরাচালানে জড়িত ছিলেন বলে কোতোয়ালির ওসির ধারণা।
টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ওসি একেএম মিজানুল হক বলছেন, শনিবার রাতে তার এলাকায় গুলিতে নিহত ইমন একজন ছিনতাইকারী। তার বিরুদ্ধে থানায় ছিনতাই ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে।
তিনি বলেন, মির্জাপুরের কুতুববাজার ব্রিজের ঢালে যানবাহন থামিয়ে ছিনতাই করার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। সেখানে থাকা চার ছিনতাইকারী দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে দুই রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে। এতে ইমন নামে এক ছিনতাইকারী গুলিবিদ্ধ হয়।
কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন জানিয়ে ওসি বলেন, এ অভিযানে আহত মনিরুজ্জামান মুন্সী ও আলী আজমকে নামের দুই এসআইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।