উৎসবের আমেজ জেলে পরিবারে
মঈনুদ্দিন সুমন, মুন্সীগঞ্জ
🕐 ১:৪৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০২১
টানা ২২ দিনের ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা গত সোমবার রাত ১২টায় শেষ হলো। মধ্যরাত থেকেই মুন্সীগঞ্জের জেলেরা পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরা শুরু করেছেন। বরিশাল ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলেরা নদী-গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যেতে শুরু করেছেন। ফলে আবারও জেলে পরিবারে দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ।
সরগরম হয়ে উঠেছে এসব এলাকার জেলেপল্লী, মাছ বাজার ও মৎস্য ঘাট। এদিকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন অভিযানে ৩৫৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ সময় আটক ২২৭ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। মা ইলিশ নিধনে জড়িত থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেলেদের কাছ থেকে ৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
প্রজনন মৌসুমে সরকার গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাগর ও নদ-নদীতে ইলিশ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ সময়ে কর্মহীন হয়ে পড়া জেলেরা বাড়িতে অলস সময় কাটান। ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে জেলে পল্লীগুলোতে। সোমবার মধ্যরাত থেকেই মুন্সীগঞ্জে জেলেরা ইলিশ পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরা শুরু করেছে।
বরিশাল ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলেরা নদী-গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যেতে শুরু করেছেন। এখন জেলে পল্লীগুলোতে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শামশুল করিম জানান, ২২ দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে নদীতে মাছ শিকার। নিষেধাজ্ঞা শেষে গত সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে মুন্সীগঞ্জের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ মাছ শিকারে নেমে পড়েছেন জেলেরা। তিনি আরো বলেন, দেশের সম্পদ রক্ষায় সরকারের নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশের মতো মুন্সীগঞ্জের পদ্মা-মেঘনায় জাল ফেলা বন্ধ থাকে। এ বছর মা ইলিশ ধরা থেকে বিরত ৩ হাজার জেলেকে ৬০ মেট্রিক টন ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়েছে।
গতকাল বিকালে মুন্সীগঞ্জের তেউটিয়া গ্রামের জেলে পরিমল দাসের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা যারা প্রকৃত জেলে তারা কখনো মা ইলিশ শিকারে যাই না। মৌসুমি জেলেরাই মা ইলিশ শিকারে ওস্তাদ। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অভিযান চলাকালে জেলেদের ২০ কেজি চাল দেওয়া হয়। এটা মোটেও পর্যাপ্ত না। শুধু ভাত খেলে হয় না, ভাত খেতে তরিতরকারী লাগে। আগামী বছর থেকে চালের পাশাপাশি নগদ অর্থ প্রদানেরও দাবি জানান তিনি।
এদিকে গত ২২ দিনে মুন্সীগঞ্জে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করা হয়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও মৎস্য অধিদফতরের সমন্বয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৩৫৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অন্যদিকে আটক হওয়া ২২৭ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রধান করা হয়। মা ইলিশ নিধনে জড়িত থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেলেদের কাছ থেকে ৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া ২ টন ৮১৪ কেজি ইলিশ ও ৪ কোটি ৮৭ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে।