ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শিশুদের করোনার টিকাদান শুরু

ফাহিয়ান হামিম
🕐 ১০:০৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২১

শিশুদের করোনার টিকাদান শুরু

বেশ কিছুদিন আলোচনার পর অবশেষে শিশুদের কোভিড টিকা দেওয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশ; আজ বৃহস্পতিবার থেকে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের করোনা টিকা প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। পরীক্ষামূলকভাবে মানিকগঞ্জের দুটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে টিকা। এজন্য বাছাই করা হয়েছে ১০০ শিশুকে, যাদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। এরপর তাদের ১০ থেকে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারপর ঢাকায় বড় আকারে শিশুদের টিকা কার্যক্রম শুরু হবে।

গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশিদ আলম জানান, আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুদের টিকা দেওয়া হবে। আমরা যে কোনো টিকা দেওয়ার আগে একটা টেস্ট রান করি। তারপর কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করে ফাইনাল রান শুরু করি। এবার আমরা মানিকগঞ্জকে বেছে নিয়েছি। সেটি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা। সেখান থেকে শুরু করছি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রাথমিকভাবে দুটি সরকারি স্কুলের ১২-১৭ বছর বয়সী শিশুদের বেছে নেওয়া হয়েছে, যাদের ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেওয়া হবে। এই টিকা দেওয়ার পর ১০-১৪ দিন পর্যবেক্ষেণ করা হবে যে শিশুদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কি না। তারপর ঢাকায় বড় আকারে শিশুদের টিকা কার্যক্রম শুরু হবে।

গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক অনুষ্ঠান শেষে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম জানান, সারা দেশের ২১টি জেলায় যেখানে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ফাইজারের ভ্যাকসিন সংরক্ষণের সুযোগ আছে, এমন সব কেন্দ্রে চলবে স্কুল শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন প্রদান। ওই দিন তিনি বলেন, শিশুদের ভ্যাকসিন যারা দিবে তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, সেন্টারে ভ্যাকসিন পৌঁছানো থেকে শুরু করে প্রস্তুতির অনেক বিষয় রয়েছে। আমাদের কিছু কিছু প্রস্তুতি শেষ হয়েছে, আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, আমরা যে কোনো ভ্যাকসিন দেয়ার আগে টেস্ট রান করি। প্রথমে ৫০-১০০ শিশুকে ভ্যাকসিন দিয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ করবো। পরে বড় পরিসরে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্র হিসেবে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু কনভেনশন সেন্টারকে স্বাস্থ্য অধিদফতর বিবেচনায় রেখেছে বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি আরও ১৯ জেলায় দেওয়া হবে ফাইজারের টিকা। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের এ-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। গত সোমবার থেকে ১৯ জেলায় টিকা পাঠানো শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রাথমিকভাবে যেসব জেলায় ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে সেগুলো হলো বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, গাজীপুর, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, যশোর, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, সুনামগঞ্জ, সিলেট ও হবিগঞ্জ। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ৪টি, চাঁদপুরের দুটি, নোয়াখালীর দুটি, নরসিংদীর তিনটি, ময়মনসিংহের দুটি এবং রাজশাহীর আটটি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। এগুলো ছাড়াও ঢাকা উত্তর এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আটটি কেন্দ্র থাকবে।

ভবিষ্যতে মানিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ আরও ২৬ জেলায় ফাইজারের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ওইসব জেলার টিকাদান সম্পৃক্তদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এর আগে রোববার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, শিগগিরই শিশুদের কোভিডের টিকা দেওয়া শুরু হবে। মন্ত্রী সেদিন বলেন, সুইজারল্যান্ড সফরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক এবং গ্যাভির প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা শিশুদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে সায় দিয়েছেন। তারা আমাদের বলেছেন, আপনারা সংক্রমণ রোধে টিকা দিতে পারেন। গ্যাভিও আমাদের ফাইজার ও মডার্নার টিকা বেশি করে দেবে বলে আশ্বস্ত করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারের হাতে এখন ৬০ লাখ ডোজ ফাইজারের টিকা রয়েছে। এর থেকে অর্ধেক টিকা শিশুদের দেওয়া হবে। টিকার জন্য শিশুদের নিবন্ধন হবে জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়া হবে।

 
Electronic Paper