ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আজ বিশ্ব নদী দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১২:৪৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১

আজ বিশ্ব নদী দিবস

আজ বিশ্ব নদী দিবস। নদী সাধারণত মিষ্টি জলের একটি প্রাকৃতিক জলধারা যা ঝরনাধারা, বরফগলিত স্রোত অথবা প্রাকৃতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্ট হয়ে প্রবাহ শেষে সাগর, মহাসাগর, হ্রদ বা অন্য কোন নদী বা জলাশয়ে পতিত হয় । মাঝে মাঝে অন্য কোনো জলের উৎসের কাছে পৌঁছানোর আগেই নদী সম্পূর্ণ শুকিয়ে যেতে পারে।

নদীকে তার গঠন অনুযায়ী শাখানদী, উপনদী, প্রধান নদী, নদ ইত্যাদি নামে অভিহিত করা যায়। আবার ভৌগোলিক অঞ্চলভেদে ছোট নদীকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে প্রাচীন বাংলার অনেক শহর। সাধারণত নদীর নামকরণ করা হয়েছে মেয়েদের নামে। M.Moriswa এর মতে নদী হল খাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত জলধারা।-River is a canal flow.

নদী রক্ষায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে নদী রক্ষায় সচেতন করা। মানুষকে জানানো, নদী হচ্ছে পৃথিবীর ধমনীর মতো। এর প্রবাহমনতাই সত্যিকার অর্থে আমাদের জীবন রক্ষাকারী। এবারে দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘মানুষের জন্য নদী’।

বাংলা সাহিত্যে নদী গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। নদীকে ঘিরেই বিশ্বের প্রতিটি শহর, বন্দর, গঞ্জ, বাজার প্রভৃতি গড়ে উঠেছে। আবার সঙ্গীত জগতে নদী গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে ঠাঁই পেয়েছে। নদী ও মানুষের সাথে সম্পর্কটা অবিচ্ছেদ্য। সে কারণেই আমাদের মৃতপ্রায় নদী নিয়ে পরিবেশবাদীসহ সাধারণ মানুষের উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়। যদিও নদী রক্ষার তত্পরতা গোটা পৃথিবী জুড়েই দেখা যায়। নদী সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রোববার পালন করা হচ্ছে বিশ্ব নদী দিবস।

বাংলাদেশের নদী রক্ষায় কাজ করা ৭০টির বেশি সংগঠন, উদ্যোগ ও আন্দোলনের সমন্বয়ে গঠিত বিশ্ব নদী দিবস উদযাপন পরিষদ গতকাল (শনিবার) ‘অনলাইন মার্চ ফর রিভারস’ কর্মসূচি পালন করে।

কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীর। পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নির্বাহী সহ-সভাপতি ডা. মো. আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে দিবসের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন পরিষদের সদস্য সচিব ও রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল।

সাধারণত উঁচু ভূমি বা পাহাড় গিরিখাত থেকে সৃষ্ট ঝরণাধারা, বরফগলিত স্রোত কিংবা প্রাকৃতিক পরিবর্তন থেকে নদীর জন্ম। হাজার হাজার ফুট উঁচু পাহাড় থেকে তীব্র বেগে ধেয়ে আসা জলরাশিতে এক ধরনের প্রচন্ড গতি সঞ্চারিত হয়। ছুটে আসা এই দ্রুত গতিসম্পন্ন জলস্রোত স্থলভাগ অতিক্রম করার সময় নদী নামে পরিচিত হয়।

নদী যখন পাহাড়ি এলাকায় প্রবাহিত হয় তখন তার যৌবনাবস্থা। এ সময় নদী ব্যাপক খননকাজ চালায় এবং উৎপত্তিস্থল থেকে নুড়ি, বালি, পলি প্রভৃতি আহরণ করে অতি সহজে সমুদ্রে নিক্ষেপ করে। নদী এভাবেই আবহমানকাল ধরে পৃথিবীপৃষ্ঠকে ক্ষয় করে চলেছে।

প্রধান নদী সাধারণত পাহাড় হতে সৃষ্ট ঝরণা, হিমবাহ থেকে সৃষ্টি হয়, যেমন পদ্মা গঙ্গোত্রী হিমবাহ হতে উৎপন্ন হয়েছে। শাখানদী অন্য কোন নদী হতে উৎপন্ন হয়। যেমন বুড়িগঙ্গা ধলেশ্বরীর শাখা নদী। উপনদী সাধারণত অন্য নদীতে গিয়ে মেশে এবং প্রবাহ দান করে, যেমন আত্রাই নদী। কোন প্রধান নদী অন্য নদীর উপনদীও হতে পারে।

১৯৮০ সাল থেকে বিশ্ব নদী দিবস হিসেবে পালন করতে শুরু করে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। যার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছিলো বিসি রিভারস ডে পালন দিয়ে। ১৯৮০ সালে কানাডার খ্যাতনামা নদীবিষয়ক আইনজীবী মার্ক অ্যাঞ্জেলো দিনটি ‘নদী দিবস’ হিসেবে পালনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিসি রিভারস ডে পালনের সাফল্যের হাত ধরেই তা আন্তর্জাতিক রূপ পায়।

২০০৫ সালে জাতিসংঘ নদী রক্ষায় জনসচেতনতা তৈরি করতে ‘জীবনের জন্য জল দশক’ ঘোষণা করে। সে সময়ই জাতিসংঘ দিবসটি অনুসমর্থন করে। এরপর থেকেই জাতিসংঘের বিভিন্ন সহযোগী সংস্থা দিবসটি পালন করছে, যা দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে।

 
Electronic Paper