প্রস্তুত বাণিজ্যমেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়ন
শুরু হতে পারে ১ জানুয়ারি, নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর
মাহবুব আলম প্রিয়, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
🕐 ৯:২৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১
অপেক্ষার প্রহর শেষে করোনা মহামারী পরিস্থিতি থেকে স্বাভাবিক পরিবেশ হলে আগামী ২০২২ সালের জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে শুরু হবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এ মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়ন প্রস্তুত রয়েছে রাজউকের নতুন শহর প্রকল্পের পূর্বাচলের ৪ নং সেক্টরে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ এবং চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন নামে এ স্থায়ী প্যাভিলিয়ন দেখতে প্রতিদিন জড়ো হয় হাজারো দর্শনার্থী। তবে উদ্বোধন না করায় এর ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন না সাধারণ লোকজন।
সূত্র জানায়, দৃষ্টিনন্দন এ সেন্টারটি বাংলাদেশ এবং চীনের যৌথ অর্থায়নে চীনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান “চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন নির্মাণ করেন। যার অবকাঠামোগত সব কাজ গত বছরের ৩০ নভেম্বর সম্পন্ন হয়েছিল। তবে স্থানীয় দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করে প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখার ইচ্ছে থাকলেও নিরাপত্তা অজুহাত ও উদ্বোধন না করায় আপাতত কোনো সুযোগ পাচ্ছে না দর্শনার্থীরা। এমনটাই মুঠোফোনে জানিয়েছেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) এ এইচ এম আহসান।
তিনি আরও জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমরা প্রাথমিকভাবে অনুমোদন পেয়েছি। আশা করা যায়, আগামী বছর ১ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও জানান, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর প্রকোপের ওপর বাণিজ্যমেলার সময়কাল নির্ভর করবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা বাইপাস মহাসড়কের পাশে পূর্বাচলের নবনির্মিত অবকাঠামোটিতে সর্বমোট বরাদ্দকৃত জমির পরিমাণ ২৬.১০ একর। সেন্টারের মোট ফ্লোরের স্পেস ৩৩ হাজর বর্গমিটার, এক্সিবিশন ভবনের মোট ফ্লোর স্পেস ২৪ হাজার ৩৭০ বর্গমিটার এবং এক্সিবিশন হল এর মোট আয়তন ১৫ হাজার ৪১৮ বর্গমিটার। ভবনটিতে পার্কিংয়ের জন্য দোতলার স্পেস ৭ হাজার ৯১২ বর্গমিটার। যেখানে প্রায় একসঙ্গে ৫০০টি গাড়ি এবং ভবনটির সামনের জায়গাটিতে প্রায় ১০০০টি গাড়ির পার্কিং করার সুযোগ থাকবে। তাছাড়াও এক্সিবিশন হলে ৯.৬৭ বর্গমিটার করে ৮০০টি স্টল থাকবে যেখানে দেশি-বিদেশি পণ্যের এক্সিবিশন চলবে। এ ছাড়াও রয়েছে ৪৭৩ আসন বিশিষ্ট একটি মাল্টি ফাংশনাল হল, ৫০ আসনবিশিষ্ট কনফারেন্স রুম, ৬টি মিটিং রুম, ৫০০ আসন বিশিষ্ট ক্যাফেটেরিয়া বা ফুডকোট, নামাজের স্পেস, দুইটি অফিস রুম, মেডিকেল বুথ, গেস্ট রুম, নিজস্ব ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, স্টোর রুম, সেন্ট্রাল এসি, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা এবং অটোমেটিক গেট। আবার এমন দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা বাইরে থেকে দেখতে অত্যন্ত সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর হিসেবে দর্শনার্থীদের আগ্রহ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিগত সময়ে দর্শনার্থী কম থাকলেও বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন ঘুরতে আসে এখানে। তবে তাদের আশায় গুড়েবালি দেখিয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না থাকায় বাইরে থেকে ছবি তুলেই সান্ত্বনা নিচ্ছেন অনেকে।
স্থানীয় পিতলগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা দেওয়ান আল মেহেদী বলেন, আমাদের বাড়ির পাশেই এমন দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা বাইরে থেকে দেখছি। কিন্তু এখনো ভেতরে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। ওই প্যাভিলিয়নে দায়িত্বরত আনসার ও নিরাপত্তারক্ষীরা কাউকে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ দিচ্ছেন না। এভাবে হাজারো দর্শনার্থী ঘুরতে এসে বাইরে থেকে ছবি তুলে চলে যাচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, যেহেতু এটা স্থায়ী প্যাভিলিয়ন, তাই সারা বছর দর্শনার্থীদের ঘুরে দেখার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
ঢাকার খিলক্ষেত থেকে ঘুরতে আসা অপর দর্শনার্থী হাফিজুর রহমান বলেন, পূর্বাচলের দর্শনীয় স্পটের মাঝে বাণিজ্যমেলা প্যাভিলিয়ন এলাকা অন্যতম। অনেকেই কাছ থেকে দেখার আশা নিয়ে ঘুরতে আসেন। আমিও এসেছিলাম। অনুরোধ করেও ভেতরে প্রবেশ করতে পারিনি। তাই কষ্ট নিয়ে চলে যাচ্ছি।