তামাকে কেন বৃহত্তম বিনিয়োগ জাপানের
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১১:০০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৮
জাপানের বৃহত্তম ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ সিগারেট প্রস্তুতকারক জাপান টোব্যাকো ১৫০ কোটি ডলার বা ১২ হাজর ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে বাংলাদেশে। কোম্পানিটি আকিজ গ্রুপের সিগারেট তৈরির সব ব্যবসা কিনে নিচ্ছে। এ নিয়ে গত আগস্ট মাসে দুই কোম্পানির মধ্যে চুক্তিও সই হয়েছে।
বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে একক বৃহত্তম বিদেশি বিনিয়োগ এটা। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ধূমপান নিয়ে আন্তর্জাতিক কড়াকড়ির এই সময়ে জাপানের টোব্যাকো জায়ান্ট কেন এত টাকা বাংলাদেশের বাজারে অর্থ ঢালছে? এর কারণ হচ্ছে, বিশ্বে যেখানে ধূমপায়ী কমছে, সেখানে বাংলাদেশে তাদের সংখ্যা বাড়ছে দেদার।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এ খাতেই বাংলাদেশে ব্যবসা করা সবচেয়ে লাভজনক। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশে ধূমপায়ীর সংখ্যা, সিগারেটের বিশাল বাজার ও ধূমপান নিরুৎসাহে সরকারের অনীহা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমবেশি এক কোটি ৮০ লাখ, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের ৪২ শতাংশই ধূমপায়ী। সেই হিসাবে বর্তমানে বাংলাদেশে সিগারেটের বাজার কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি টাকার। এটা ক্রমাগত বাড়ছে। রাজস্ব আয়ের একক বৃহত্তম খাতটি থেকে সরকারের আয় ১৫ হাজার কোটি টাকার মতো।
জাপান টোব্যাকোও এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম সিগারেটের বাজার, আর এই বাজার প্রতিবছর দুই শতাংশে করে বাড়ছে। বাংলাদেশে বছরে ৮৬০০ কোটি সিগারেট শলাকা বিক্রি হয়। আকিজের ব্যবসা কেনার ফলে সেই বাজারের ২০ শতাংশ তাদের দখলে চলে যাবে।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, ধূমপান নিয়ে ক্রমবর্ধমান কড়াকড়ি এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার কারণে, পশ্চিমা বিশ্বে সিগারেটের ব্যবসা পড়তি। বিশেষ করে জাপানে ১৯৯৬ সালের পর থেকে ধূমপান ধারাবাহিকভাবে কমছে। যা জাপান টোব্যাকোরই একাধিক জরিপেও উঠে এসেছে। সে কারণে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এখন টার্গেট করছে এশিয়া বা আফ্রিকার উন্নয়নশীল দেশগুলোকে।
এ বিবেচনায় কিছু বিষয় চলে আসে-যার একটি হলো নিরাপদ বিশ্ব ও আগামী প্রজন্ম নিয়ে সে প্রতিশ্রুতিগুলো প্রতিবছর বিভিন্ন ফোরামে আলোচিত হয়, খোদ উন্নত দেশগুলোই তা লঙ্ঘন করছে। তারা নিজের দেশের জনগণকে ধূমপানে নিরুৎসাহিত করছে, আবার মুনাফার দরজা খুলছেন নতুন নতুন দেশে। অন্যদিকে উন্নয়নশীল বা উন্নত হতে যাওয়া দেশগুলো স্বাস্থ্য খাত নিয়ে বড় বড় উদ্যোগের কথা বললেও রাজস্ব বিবেচনায় সিগারেটের বাজারকে সংকুচিত করছে না।
এমনকি ধূমপান নিরুৎসাহে কিছু আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। আবার বিজ্ঞাপন দেওয়া নিষিদ্ধ থাকলেও নানা কৌশলে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে কোম্পানি। নইলে ধূমপান কমানোর উদ্যোগকে প্রাধান্য দেওয়া হলে ধূমপান বাড়ার কথা নয়।