ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল, প্রজ্ঞাপন জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১২:৪৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২১

২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল, প্রজ্ঞাপন জারি

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামীকাল বুধবার (১৪ জুলাই) মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।  তবে এই সময়ে মানুষকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে এবং মাস্ক পরিধানসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ২৩ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত ফের কঠোর বিধিনিষেধ বলবৎ হবে। অর্থাৎ ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত সবকিছুই চলতে পারবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত সকল বিধিনিষেধ শিথিল করা হল।

“পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে” এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

তবে এই সময়েও জনগণকে সব অবস্থায় সতর্ক থাকতে, মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি ‘কঠোরভাবে’ অনুসরণ করতে বলেছে সরকার।

প্রজ্ঞাপনে আগামী ২৩ জুলাই থেকে ১৪ দিনের ‘বিধিনিষেধের’ ২৩টি নির্দেশনা উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো-

১. সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিসসমূহ বন্ধ থাকবে।

২. সড়ক, রেল ও নৌ-পথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

৩. শপিংমল/মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে।

৪. সব পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

৫. সব ধরনের শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকবে।

৬. জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক বিবাহত্তোর অনুষ্ঠান (ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

৭. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।

৮. ব্যাংক-বিমা/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।

৯. সরকারি কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন এবং দাপ্তরিক কাজসমূহ ভার্চুয়ালি (ই-নথি, ই-টেল্ডারিং, ই-মেইল, এসএমএস, হোয়াটঅ্যাপসহ অন্যান্য মাধ্যম) সম্পন্ন করবেন।

১০. আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিসেবা, যেমন-কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন/বিক্রি, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান কার্যক্রম, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম, সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, সড়কের বাতি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রম), সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।

১১. বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় খোলা রাখার বিষয়ে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

১২. জরুরি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক, লরি/কাভার্ডভ্যান/নৌ-যান/পণ্যবাহী রেল/ফেরি এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভুত থাকবে।

১৩. বন্দরসমূহ (বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল) এবং তৎসংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।

১৪. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করা যাবে। সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন/বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

১৫. অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সংকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৬. টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা নেওয়ার জন্য যাতায়াত করা যাবে।

১৭. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি (অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে।

১৮. আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং বিদেশগামী যাত্রীরা তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকিট প্রমাণক প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহারপুর্বক যাতায়াত করতে পারবেন।

১৯. স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেবে।

২০. ‘আমি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠপর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

২১. জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনাবাহিনী, বিজিবি/কোস্টগার্ড, পুলিশ, র‍্যাব ও আনসার নিয়োগ ও টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি সময় নির্ধাররণ করবেন। সেসঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

২২. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

২৩. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দেবেন।

উল্লেখ্য, আগামী ২১ জুলাই বুধবার দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। এই বিধিনিষেধ ছিল ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত। পরে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও ৭ দিন অর্থাৎ ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

 
Electronic Paper