তেজগাঁও থানায় মামুনুল হক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ৬:০০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৮, ২০২১
বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানায় নেওয়া হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ কশিনার (ডিসি) মো. হারুন অর রশিদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গ্রেফতার মামুনুল হককে রোববার তেজগাঁও থানা হেফাজতে রাখা হবে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার (১৯ এপ্রিল) আদালতে সোপর্দ করা হবে। তার রিমান্ড চাওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ডিসি হারুন জানান, ২০২০ সালে মোহাম্মদপুর থানায় হামলা ও নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় মামুনুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। আমরা মামলাটি তদন্ত করছিলাম, তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সারাদেশে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, রেজিস্ট্রার অফিসে হামলা-ভাঙচুরসহ অনেকগুলো মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছিল, পাশাপাশি আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রেখেছিলাম।
রোববার (১৮ এপ্রিল) বিকালে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয় থেকে তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুবুল আলম খোলা কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, তেজগাঁও বিভাগের সঙ্গে গোয়েন্দা পুলিশ যৌথভাবে নজরদারি করে মামুনুলকে গ্রেফতার করে। নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় ও অন্যান্য মামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে কোন কোন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে এবং রিমান্ড চাওয়া হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়। সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে।
সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, বিভিন্ন নাশকতার ঘটনায় তদন্তে সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতেই হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আপাতত তাকে মোহাম্মদপুর থানায় ২০২০ সালের হামলা-ভাঙচুরের একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তিনি ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। আমরা মামলাটি তদন্ত করছিলাম, তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডিসি হারুন আরও বলেন, এই মামলা ছাড়াও সাম্প্রতি ঘটা কয়েকটি নাশকতার মামলা এবং সোনারগাঁওয়ে রিসোর্টকাণ্ডে দায়ের করা মামলায়ও তাকে গ্রেফতার দেখানো হতে পারে। মামুনুলকে এখন গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মামুনুলের বিরুদ্ধে সারাদেশে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, রেজিস্ট্রার অফিসে হামলা ভাঙচুরসহ অনেকগুলো মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্তও চলছিল, পাশাপাশি আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রেখেছিলাম।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি হারুন বলেন, মামুনুলকে ডিবি কার্যালয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামীকাল সোমবার (১৯ এপ্রিল) আদালতে সোপর্দ করা হবে। তার রিমান্ড চাওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, মামুনুল হক বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনায় আছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় গত ২৬ মার্চ সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় পল্টন থানায় হওয়া মামলার অন্যতম আসামি তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩ এপ্রিল সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টে ধরা পড়ার পর থেকেই মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রেখেছিল। এ ঘটনার পর হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
হেফাজতের এই নেতার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে সহিংসতার একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।