ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আশা করি চসিকে ভালো নির্বাচন দেখবেন: ইসি সচিব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ৫:৩১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২১

আশা করি চসিকে ভালো নির্বাচন দেখবেন: ইসি সচিব

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, আশা করি কালকে একটা ভালো নির্বাচন দেখবেন। ২৬ জানুয়ারী, মঙ্গলবার বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সচিক নির্বাচনের সর্বশেষ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন সচিব।

প্রস্তুতি নিয়ে সচিব বলেন, কমিশন থেকে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিশেষ করে যেহেতু রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে সমস্ত দায়িত্ব ন্যাস্ত করা আছে। সেখানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক, আমাদের রিটার্নিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং যেহেতু ইভিএমে ভোট হচ্ছে, তাই ইভিএমের কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য সবাই এখন চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। পূর্ণ প্রস্তুতি শেষ। আমরা আশা করি যে, একটা সুষ্ঠ এবং প্রতিযোগিতামূলক শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য যা যা উদ্যোগ নেওয়া দরকার তা নেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার এবং পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে পরিমাণ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাহিদা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সে পরিমাণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং তাদের কাছে বাজেটও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। কেউ শাস্তিযোগ্য অপরাধ করলে তাকে শাস্তি দিতে প্রতি দুইটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। আমরা মনে করি যে যত রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন তার সবটুকুই সেখানে নেওয়া আছে।

তিনি বলেন, বাইরের লোক যারা ওই এলাকার ভোটার না, ভোটকেন্দ্রে এসে গো-গোল করতে পারে এরকম কাজ যাতে করতে না পারে এজন্য শহরে প্রবেশ করার যে রাস্তাগুলো আছে সেখানে পুলিশি পাহাড়া থাকবে। যাতে করে ভোটার ছাড়া অন্যকোনো লোকজন ভোটকেন্দ্রে এসে কোনো গ-গোল করতে না পারে বা ভোটকেন্দ্রের বাইরেও যাতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো রকম বাধার সৃষ্টি করতে না পারে। আমরা মনে করি যে, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে করার জন্য যা যা করার দরকার তার সব ধরণের ব্যবস্থা নির্বাচ কমিশন গ্রহণ করেছে।

সহিংসতার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা প্রথম দিকে হয়েছিল। তারপর সেখানে সবাই খুব সতর্ক হয়ে গেছেন। এরপর আল্লাহর রহমতে আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা আশা করি ওই ধরণের কোনো ঘটনা আর ঘটবে না। যাতে না ঘটে তার জন্য ওই প্রস্তুতি। আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১০ হাজারের উপরে সেখানে নিয়োজিত আছে। ওই ধরণের আর কোনো ঘটনা ঘটবে না বলেই আমরা মনে করি।

বিভিন্ন সময় গোয়েন্দা সংস্থা থেকে রিপোর্ট দেওয়া হয় স্থানীয় পরিস্থিতির উপর বিষয়টি নজরে আনতে সচিব বলেন, সবসময় গোয়েন্দা বিভাগ থেকে আমাদেরকে জানানো হয় কোন কোন কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা যখন সেই কেন্দ্রগুলোর তালিকা দেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং পুলিশ প্রশাসন সেই অনুযায়ী সদস্য মোতায়েন করেন। যেখানে সাধারণ সেখানে ১৬ জন করে এবং যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে ১৮জন থাকবে এবং সেখানে অস্ত্র বেশি থাকবে। এছাড়াও টহলে যারা থাকবেন এবং টহল ছাড়াও কিছু কিছু এলাকা নিয়ে জোনের মত করেও থাকবে। পাঁচ বা দশটা কেন্দ্র নিয়ে একটি জোন থাকবে। সেখান থেকে প্রয়োজনে যেনো সহযোগিতা করতে পারেন।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র কতগুলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তো আপনাদের বলা যাবে না। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র কতগুলো এটা তো গোপনীয় জিনিস।

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২০ জন এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ৪০ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান সচিব।

করোনা পরিস্থিতিতে ভোটে নির্দেশনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের বলাই আছে স্বাস্থ্যবিধি যা মেনে চলা দরকার তার সব মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া আছে। ভোটার যখন লাইনে দাঁড়াবেন তখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াবেন। ইভিএমে ভোট দেওয়া হবে তাই ভোট দেওয়ার আগে এবং পরে হাত হ্যান্ডওয়াস করে নেবেন। আর সবাইকে মাস্ক পড়ে যেতে হবে। মাস্ক ছাড়া কেউ গেলে তাকে ভোট দিতে দেওয়া হবে না বা দায়িত্বপালন করতে দেওয়া হবে না।

নির্বাচনে সহিংসতা এবং অনিয়মের দায় কমিশন এড়াতে পারে না একজন নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা মাননীয় কমিশনারই বলতে পারবেন। আমার কোনো বক্তব্য নেই।
আপনারা আশা করছেন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই। আশা না করার কোনো কারণ নেই তো।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে অনেকগুলো দল অংশগ্রহণ করেছে। সবাই তো সাংগঠনিকভাবে একরকম নয়। অনেকের দলীয় কার্যলয়ও মনে হয় সেভাবে নাই। হয়তো বা ব্যক্তি পরিচয় বেশি থাকতে পারে। ওই শক্তি তো আর নির্বাচন কমিশন তৈরি করে দিতে পারে না। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেওয়া অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ করে দেওয়া। যাতে ভোটাররা ভোট দিতে আসতে পারে, ভোট দিতে পারে, কেউ যাতে বাধা না দেয়। সেই জন্যই তো আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাখা হয়েছে। এমন তো না যে, কেউ আসলে পরে তাকে দুইটা ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। এই ধরণের তো কোনো ব্যবস্থা নেই। এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এটাই সবার জন্য সমান সুযোগ।

সেটা আপনারা নিশ্চিৎ করতে পেরেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তো লোক দেখে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করে না।

 
Electronic Paper